ব্যোমকেশকে কি 'বিদায়' জানানো যায়! উত্তরে কী প্রমাণ করলেন 'দুই' আবির
'ব্যোমকেশ'...'সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সী'.. এই নাম শুনলেই প্রথমেই যে সমস্ত ছবি ভেসে আসে চোখে, তা হল একটা বুদ্ধিদীপ্ত চাউনি, ধুতি-পাঞ্জাবীতে এক বাঙালির তড়িৎ গতিতে চলা ফেরা
'ব্যোমকেশ'...'সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সী'.. এই নাম শুনলেই প্রথমেই যে সমস্ত ছবি ভেসে আসে চোখে, তা হল একটা বুদ্ধিদীপ্ত চাউনি, ধুতি-পাঞ্জাবীতে এক বাঙালির তড়িৎ গতিতে চলা ফেরা, আর ঘটনার অসম্ভব জটিল গিঁটকে পরতে পরতে খুলে ফেলা! আর সেই 'ব্যোমকেশ' শব্দটির আগে যদি 'বিদায়' বসে যায়, তাহলে দর্শকের কৌতূহল তো জাগবেই! আর এই কৌতূহলকে পাথেয় করে এগিয়ে গিয়েছে পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্যের ছবি 'বিদায় ব্যোমকেশ'।
প্রেক্ষাপট
ছবির শুরুতেই ফ্রেমে ধরা দেয় একটি রক্তমাখা ছুরি, .. যা হাতে নিয়ে নোনাপুকুর থানায় এক ব্যক্তি রাত ১১ টা নাগাদ গিয়ে হাজির হন। নিজেকে ব্যোমকেশ বক্সির ছেলে অভিমন্যু বক্সি (জয় সেনগুপ্ত) বলে পরিচয় দেন, আর পাশাপাশি তিনি জানান, 'আমি একটা খুন করেছি'। রহস্য পাক খেতে শুরু করে তখন থেকেই। এরপর ফ্রেমে আসেন এক বৃদ্ধ। যিনি একটি মাটির ভাস্কর্য নিয়ে কিছু কাজ করছেন , যাঁর দৃপ্ত চোখের চাউনি চশমার আড়ালে থেকেও স্পষ্ট করে দেয় যে তিনি ব্যোমকেশ বক্সি (আবির চট্টোপাধ্যায়)। গল্পের অপর চরিত্র ব্যোমকেশের নাতি সাত্যকি (আবার আবির চট্টোপাধ্যায়)। আই তিন পুরুষ চরিত্র, আর একটি খুন। রহস্যের বেড়াজাল আর তার উন্মোচনে শুরু হয় ছবির পথ চলা। মাঝে মাঝে ছবিতে উঠে আসে ব্যোমকেশ পত্নী ,ব্যোমকেশের পুত্রবধূ, এমন কি অজিতের চরিত্রটিও (রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়)। এতসব চরিত্র মিলে আদৌ কি রহস্য উন্মোচন করতে পারবে? নাকি বৃদ্ধ ব্যোমকেশ এবার বিদায় নেবেন ? উত্তর পেতে দেখতে হবে 'বিদায় ব্যোমকেশ'।
[আরও পড়ুন:সাহসী ঋতুপর্ণা কি ছুঁতে পারলেন দর্শক-হৃদয়ের 'গহীন'-কে! কেমন হল 'গহীন হৃদয়']
অভিনয়
আবির চট্টোপাধ্যায় এই ছবির প্রাণ। দুটি চরিত্রে নিজের ঢেলে দিয়েছন আবির। নিঃসন্দেহে এটি তাঁর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। অন্যদিকে,জয় সেনগুপ্তও স্ক্রিনটাইমের যাবতীয় সুযোগের সৎ ব্যবহার করেছেন ছবির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত। সোহিনী কিংবা রাহুল বা বিদীপ্তা সেভাবে লম্বা স্ক্রিনটাইম না পেলেও, নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।
[আরও পড়ুন:জাহ্নবী-ঈশানের সতেজ রসায়ন কি 'ধড়ক'-এ বুঁদ করতে পারল দর্শককে]
পরিচলনা
অনবদ্য এক ভাবনাকে স্ক্রিনে ফুটিয়ে তুলে তাকে দর্শকদের মনোগ্রাহী করে তোলা নিঃসন্দেহে বড় একটি চ্যালেঞ্জ। ব্যোমকেশের মতো এক চরিত্র নিয়ে গল্পের এক্সপেরিমেন্টকরার দম সকলের থাকেনা! আর এখানেই কুর্ণিশ কুড়োলেন দেবালয়। ছবির কয়েকটি জায়গার বাঁধন আলগা থাকলেও , অনবদ্য বিষয় ভাবনার জন্যই 'বিদায় ব্যোমকেশ' মনে থাকবে।
সবশেষে
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি জনপ্রিয় চরিত্রদের নিয়ে সিনেমা, অথচ গল্পের বুনোট বেঁধেছেন অন্য কেউ। বাংলা সাহিত্য তথা বাংলা সিনেমা জগতের এই সুখী মেলবন্ধনই 'বিদায় ব্যোমকেশ'-এর ইউএসপি। সঙ্গে বাড়িতে পাওনা বলতে আবির চট্টোপাধ্যায়।