
সিনেমা হল খুলতেই ‘বেল বটম’–এর থ্রিলে অসাধারণ অক্ষয়, কামাল করলেন লারা–আদিল
করোনা আবহের মধ্যে সিলভার স্ক্রিনে মুক্তি পেল অক্ষয় কুমার অভিনীত বেল বটম। থিম মিউজিকের চটক, বাস্তব ঘটনা অবলম্বন করে তৈরি কাহিনী এবং প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে আশার আলো জন্য মাটি খুঁজে পাওয়ার একটি অনস্বীকার্য শক্তি, এই তিনের মিশ্রনে তৈরি 'বেল বটম’। এই ছবির মাধ্যমে অক্ষয় কুমার আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তিনি কত বড় মাপের অভিনেতা।

হতাশ হবেন না দর্শক
এর ওপর পরিচালক রঞ্জিত তিওয়ারি, যিনি লারা দত্তার সারপ্রাইজ লুক দর্শকদের উপহার দিয়ে হতাশ করেননি। সব মিলিয়ে দেশের জাতীয় সঙ্কটকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে বেল বটমে। যেখানে ভারতীয় বিমানকে জঙ্গিরা হাইজ্যাক করে বিদেশের মাটিতে অবতরণ করাতে বাধ্য করায়। বেল বটম তার নামের মতোই পুরনো মদের স্বাদই দেবে, যেখানে সঙ্কটের সময় কোনও হিরো মসিহা হয়ে আসে এবং সকলকে বাঁচায়। এর সঙ্গে কিছুটা থ্রিল যোগ করে রাজনৈতিক নেতারা প্রায় অসম্ভব ডেডলাইন নির্ণয় করেন, যাঁদের আমাদের নায়কের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে যে তিনি ঘড়ির কাঁটার ঘোরার আগেই বিপদ থেকে দেশকে রক্ষা করবেন।

ছবির গল্প
ধুমধাম করে সব তারকাদের উপস্থিতিতে মুক্তি পেয়েছিল বেল বটম ছবির ট্রেলার। এই স্পাই থ্রিলারে র-এর এজেন্টের ভূমিকায় রয়েছেন অক্ষয় কুমার। তাঁরই কোড নেম বেল বটম। একটি প্লেন হাইজ্যাকের ঘটনায় ডাক পড়ে আন্ডার কভার এজেন্টের। ছবির গল্প এগোয় কীভাবে ২১০ জন পণবন্দীকে উদ্ধার করা যায় এবং হাইজ্যাকারদের উচিত শিক্ষা দেওয়া যায় সেই প্ল্যানিংয়ের মাস্টারপ্ল্যান রোল আউট করাকে কেন্দ্র করে। ছবিতে অক্ষয় কুমারের পাশাপাশি নজর কেড়েছে ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করা লারা দত্ত। যিনি বিপদের সময় নিজের পুরনো পন্থাকেই বাছাই করে জানান যে তাদের প্রতিবেশী দেশে বিমান অবতরণ করা হয়েছে তাই তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তবে এটা স্পষ্ট যে নতুন কিছু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীরও সাহস দরকার। যাতে পুরনো বৃত্ত ভেঙে যায়। এমন পরিস্থিতিতে,র-এর প্রধান (আদিল হুসেন) তাকে বলে যে এইবার অপেক্ষা করুন, আমরা একটি নতুন বাজি খেলব। তাদের অভিজ্ঞ জাতীয়তাবাদী 'খিলাড়ি' কে মাঠে নামাবে। এখান থেকে বেল বটম তার অবস্থান পরিবর্তন করে। লখনউ সেন্ট্রালের মতো ব্যর্থ ছবির পরিচালকের তৈরি বেল বটম দ্বিতীয়ার্ধে ধীরে ধীরে গল্পকে প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে। যেখানে বিমান অপহরণের সঙ্গে মা -ছেলের মানসিক বন্ধন এবং স্বামী -স্ত্রীর ভালোবাসা ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হতে দেখা যায়। গল্পটি কখনো বর্তমান এবং কখনো অতীতে চলে আসে। এদিকে, বিমান অপহরণের পর, রাজনৈতিক করিডোরের রাজনীতি এবং প্রধানমন্ত্রী সকল ক্ষমতায় সজ্জিত হওয়া সত্ত্বেও, তার মানবিক উদ্বেগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এখানে যদিও ছবিটি থেকে দর্শকের প্রত্যাশা যে রোমাঞ্চকর নয় তা বোঝা গেলেও, কিন্তু পরিচালক একে ধরে রাখতে সক্ষম।

অভিনয়
ছবিতে অক্ষয় বেল বটমের এন্ট্রি সিন নিঃসন্দেহে মুগ্ধ করবে। ৫৩ বছরেও তরতাজা অক্ষয় কুমার। ছবিতে তিনি জাতীয় স্তরের চেস প্লেয়ারও বটে। গড় গড় করে বলতে পারেন হিন্দি, ইংরেজি, ফরাসি এবং জার্মান ভাষা। বেল বটমের স্ত্রীর ভূমিকায় রয়েছেন বাণী কাপুর। সীমিত স্ক্রিন টাইমেও নজর কাড়ে বাণীর অভিনয়। বিভিন্ন চরিত্রে ভালোই অভিনয় করেছেন হুমা কুরেশি, আদিল হুসেন। এবার আসা যাক ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে কেমন করলেন লারা দত্ত। আহামরি কিছু না হলেও নিট অভিনয় করেছেন লারা। নজর কেড়েছে তাঁর মেকআপ। বেশ কনফিডেন্টও লেগেছে তাঁকে। তবে ছবি জুড়ে শুধুই অক্ষয় কুমার।

পরিচালকের কৃতিত্ব
রঞ্জিত তিওয়ারি পরিচালিত এই ছবিটি অক্ষয় কুমারের অন্যান্য ছবির মতোই সত্যি ঘটনার উপর তৈরি। এখানে বলে রাখা ভালো গোটা সিনেমার শুটিংই হয়েছে করোনা আবহের সময়। ছবিতে বহু গলদ থাকা সত্ত্বেও বিনোদন রয়েছে ভরপুর। বহুদিন পর সিনেমা হলে বসে এই সিনেমা দেখতে মন্দ লাগবে না দর্শকদের।