একবছর পর বড়পর্দায় রজনীকান্ত–ম্যাজিক ছাড়া আর কিছুই নেই ‘আননাথে’–তে
একবছর পর বড়পর্দায় রজনীকান্ত–ম্যাজিক ছাড়া আর কিছুই নেই ‘আননাথে’–তে
দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার রজনীকান্তকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলা অপেক্ষা রাখে না। তিনি নিজেই যে কোনও সিনেমার ভোল একাই বদলে ফেলতে পারেন। সেই দক্ষতা রয়েছে বলেই তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে সম্মানে সম্মানিত করা হয়। তবে দর্শকরা বড় পর্দায় থালাইভাকে দেখেছেন এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গিয়েছে। ২০২০ সালে রজনীকান্তের ছবি দরবার সিনেমা হলে মুক্তি পায় এবং তা সবচেয়ে দুর্বলতম সিনেমা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল, বিশেষ কপে তা থালাইভার ভক্তদের জন্য তৈরি করা হয়। তবে এক বছরের মাথাতেই রজনীকান্ত ফিরে এসেছেন তাঁর চেনা স্বাভাবিক ছন্দে এবং 'আননাথে’ ছবিতে নিজের কামাল দেখিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি এক এবং অদ্বিতীয় রজনীকান্ত।
সিনেমার গল্প
কালাইয়ান তথা আননাথে (রজনীকান্ত) একজন পঞ্চায়েতের সভাপতি, যিনি সকলের সঙ্গে খুবই ভালো ব্যবহার করেন। তিনি তাঁর বোন থাঙ্গা মীনাক্ষিকে (কীর্তি সুরেশ) খুব ভালোবাসেন। তাঁরা একে-অপরের জন্য যে কোনও কিছু করতে রাজি আছেন। একদিন, কালাইয়ান মীনাক্ষির বিয়ের জন্য ছেলে পছন্দ করেন এবং বোনের অনুমতি চান বিয়ের জন্য। মীনাক্ষি প্রথমে রাজি হলেও তাঁর বিয়ের আগের দিন তিনি পালিয়ে যান। এরপর এই গল্পের মোড় ঘুরে চলে যায় কলকাতায়। যেখানে কালাইয়ানের বোনকে একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু তাঁর ভাই তাঁকে না জানিয়েই আড়াল থেকেই সুরক্ষা দিতে শুরু করেন। এরপর মীনাক্ষির কি হল? কেন তিনি সমস্যার সামনে পড়ছেন? কীভাবে কালাইয়ান তাঁকে সাহায্য করছেন? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাকে ২ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ধরে এই আননাথে সিনেমাটি দেখতে হবে।
ব্যর্থ পরিচালক
হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতে ভাই-বোনের সম্পর্ক নিয়ে বহু সিনেমাই তৈরি হয়েছে। এটি আননাথের গল্পকে অপ্রয়োজনীয় করে তোলে। যাইহোক, এই বাসি গল্পটিকে আবার দেখার যোগ্য বিষয়ে পরিণত করা সম্ভব হতে পারত। কিন্তু এখানে পরিচালক সিরুথাই শিবা মেলোড্রামাটিক মোড় দিয়ে আমাদের টিভিতে চলা ধারাবাহিকের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। ছবির প্রত্যেকটা সংলাপই মনে হচ্ছে আগেও অন্য কোনও সিনেমায় শোনা। এমন অনেক সংলাপই রয়েছে যা অভিনেতার মুখ থেকে বলার আগেই আপনি বলে দিতে পারবেন। এই সিনেমায় নতুনত্বের কমতি রয়েছে।
রজনীকান্ত ছাড়া অন্যদের অভিনয় ম্লান
আননাথে সিনেমায় একমাত্র রজনীকান্ত ছাড়া সেভাবে দর্শকদের মনে অভিনয় দিয়ে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হবেন অন্য অভিনেতারা। মীনা, খুশবু, প্রকাশ এমনকী নয়নতারার অভিনয়ও খুব কৃত্রিম বলে মনে হয়েছে। সিনেমার প্রথমাংশের পর মীনা, প্রকাশ রাজ ও খুশবু গায়েব হয়ে যায়। রজনীকান্তের মতো কড়া ধাঁচের অভিনেতা একাই সিনেমাই হাল ধরেছেন। আননাথে-তে সিরুথাই শিবা দু'জন ভিলেনকে নিয়ে আসলেও তাঁরা কেউই সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি।
দুর্বল চিত্রনাট্য
সিনেমার চিত্রনাট্য অত্যন্ত দুর্বল। কিছু কিছু দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে তা সিনেমায় না থাকলে কোনও ক্ষতি হতো না। সংলাপও সেভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি দর্শকদের মনে। একমাত্র রজনীকান্তই তাঁর চেনা ছন্দে সিনেমায় ফিরে এসেছেন। যেখানে তিনি একাই গুণ্ডাদের সঙ্গে লড়ছেন, তাঁর স্টাইল করে হাঁটা, পাঞ্চলাইন এবং স্বপ্নের মতো নাচই একমাত্র ইউএসপি এই সিনেমার। সামগ্রিকভাবে, আননাথে একটি পারিবারিক সিনেমা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে চিত্রনাট্যই সবার ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়। যা সবাইকে নিরাশ করেছে।