
প্ল্যাস্টিক সার্জারি নয় এডিট করা হয়েছিল ‘জোম্বি অ্যাঞ্জেলিনা’র ছবি, প্রকাশ্যে এল আসল চেহারা
কম্পিউটারে এডিট করে হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির আদলে একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন ইরানের এক তরুণী। অ্যাঞ্জেলিনা জোলির আদলে তৈরি ছবিটি এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল ছবিটিকে জোম্বি অ্যাঞ্জেলিনা বলা হতো। অনেকে মনে করতে শুরু করেছিলে, অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মতো হওয়ার জন্য প্লাস্টিক সার্জারি করতে গিয়ে তরুণীর এই হাল হয়েছে। ঘটনার জন্য তাঁর জেল হয়ে যায়। জেল থেকে বেরিয়ে নিজের আসল চেহারা প্রকাশ্যে আনলেন সাহার তাবার।

১০ বছরের কারাদণ্ড
সাহার তাবার কম্পিউটারে এডিট করে অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির আদলে একটি ভয়ঙ্কর মুখ তৈরি করেন। সেটি তিনি ইস্টাগ্রামে দেন। এরপরেই সারা বিশ্বজুড়ে ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে সেই ছবিটিকে জোম্বি অ্যাঞ্জেলিনা বলেন। এছাড়াও ছবিটিকে সামনে রেখে একাধিক গুজব শুরু। ইরানের আদালত এই ঘটনার জন্য সাহার তাবারকে দুর্নীতি ও ধর্মবিরোধী কাজে দোষী সাব্যস্ত করে। তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। কিন্তু সম্প্রতি মহসা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ইরান উত্তাল হয়ে ওঠে। বিক্ষোভে সাহার তাবার মুক্তিও দাবি করা হয়। ইরানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহার তাবারকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। মুক্তির পরেই সাহার তাবার নিজের আসল পরিচয় ও চেহারা প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন।

জোম্বি অ্যাঞ্জেলিনার আসল চেহারা প্রকাশ্যে
জেল থেকে বের হওয়ার পরেই সাহার তাবার নিজের ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর আসল নাম ফাতেমেহ খিশভান্দ। ২০১৯ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়স ছিল তাঁর। তিনি সারা বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে চেয়েছিলেন। সেই কারণে তিনি ছবিটি এভাবে কম্পিউটারে বিভিন্ন সফটওয়্যারের সাহায্যে এডিট করে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন। তাঁর মা বার বার বারণ করেছিলেন এধরনের কাজ করতে। কিন্তু তিনি তখন মায়ের কথা শোনেননি।

সাহার তাবার মুক্তির চেষ্টা
সমাজ কর্মী মাসিহ আলিনেজাদ সাহার তাবার মুক্তির জন্য অনেক চেষ্টা করছিলেন। তিনি বার বার আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন করেছিলেন। এই বিষয়ে তিনি অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকেও মুখ খোলার অনুরোধ করেছিলেন। সাহার তাবারকে যখন জেলে পাঠানো হয়েছিল মাসিহ আলিনেজাদ টুইট করে লিখেছিলেন, সাহার মাত্র ১৯ বছর বয়স। মজা করে একটি পোস্ট করেছিলেন। সেই কারণে তাঁর জেল হয়েছে। তাঁর মা মেয়েকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেছিলেন। মেয়ের সাজা শুনে মা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। প্রিয় অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আপনি এই বিষয়ে সরব হন। আপনার সাহায্যের প্রয়োজন। তিনি টুইট করে সাহার তাবার মুক্তির কথা জানিয়েছেন।

ইরান জুড়ে বিক্ষোভ
হিজাব ঠিক করে না পরার কারণে মাহসা আমনিকে তেহরান পুলিশ বন্দি করে। পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় মাহসা আমিনির মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইরান জুড়ে বিক্ষোভ দেখা দেয়। সাধারণ মানুষ থেকে স্কুল পড়ুয়া সবাই বিক্ষোভে অংশ নেন। ইরানের পুলিশ কঠোর হাতে এই বিক্ষোভ দমানোর চেষ্টা করেন। বহু বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতির সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদন অনুসারে শুধু ২৩ জন কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।
ছবি সৌ:ইনস্টাগ্রাম