'আমার স্কার্ট তুলে প্যান্ট খুলে ফেলেছিল অনু মালিক', দুর্গা দশমী রেশে #মি টু নিয়ে ফের ঝড়
#মি টু-র আঘাতে ফের ক্ষতিবক্ষত সঙ্গীত পরিচালক অনু মালিক। দিন দুই আগেই অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন দুই গায়িকা সোনা মহাপাত্র এবং শ্বেতা পণ্ডিত।
#মি টু-র আঘাতে ফের ক্ষতিবক্ষত সঙ্গীত পরিচালক অনু মালিক। দিন দুই আগেই অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন দুই গায়িকা সোনা মহাপাত্র এবং শ্বেতা পণ্ডিত। সেই অভিযোগের চাঞ্চল্যের রেশ এখনও মেলায়নি, তার আগে ফের দুই মহিলা অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনলেন। এই দুই মহিলা তাঁদের নাম-পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেছেন।
এই দুই মহিলার মধ্যে এক মহিলার দাবি, ১৯৯০ সালে মেহবুব স্টুডিও-তে একটি অনুষ্ঠানকে ঘিরে অনু মালিকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। দু'জনেই একটি 'অর্থ সংগ্রহ' অনুষ্ঠানের জন্য একসঙ্গে কাজ করছিলেন। ওই মহিলার অভিযোগ, এই অনুষ্ঠানের কাজের জন্য একদিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তিনি অনু মালিকের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ঢুকে তিনি বুঝতে পারেন সেখানে অনু এবং তিনি ছাড়া তৃতীয় কোনও ব্যক্তি নেই। বাড়িতে ঢুকতেই অনু দরজা কৌশলে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এটা প্রথমে তিনি আন্দাজ করতে পারেননি। সোফায় অনু তাঁর পাশে এসে শারীরে শরীর লাগিয়ে বসে পড়েন বলে ওই মহিলার অভিযোগ। এরপর আচমকাই অনু ওই মহিলা স্কার্ট তুলে দেন এবং নিজের পরনের প্যান্ট খুলে ফেলেন বলে অভিযোগ। ওই মহিলা মিড-ডে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি কোনওভাবে অনু-কে পিছনে ধাক্কা মেরে সোফা ছেড়ে উঠে পড়েন। দৌড় লাগান সদর দরজা লক্ষ করে। কিন্তু, তিনি আবিষ্কার করেন দরজা পুরো লক করা রয়েছে। মহিলা তাঁর বয়ানে অভিযোগ করেছেন, আতঙ্কে তখন শীরদাঁড়া দিয়ে শিহরণ ছুটছে। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। অনু সমানে চিৎকার করছিলেন তাঁর কাছে ফিরে আসার জন্য। অভিযোগকারিনীর দাবি তিনি সমানে দরজার লক ধরে টানাটানি করছিলেন। এমনই সময় কেউ একজন বাইরে থেকে কলিং বেল বাজাতেই যেন হাফ ছেড়়ে বাঁচেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, দরজা খোলার আগে অনু জানিয়ে দেন, কোনওভাবে একটা কথা বাইরের কেউ জানলে তার ফল ভালো হবে না।
গাড়িতে বাড়ি পৌঁছে দেবেন বলে একপ্রকার জোর করেই এরপর অনু তাঁকে গাড়িতে উঠতে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা। তাঁর অভিযোগ, একটি নির্জন, অন্ধকার স্থানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন অনু। ফের তিনি কোমর থেকে প্য়ান্ট নামিয়ে ফেলেন। অভিযোগকারিনীর দাবি, অনু তাঁকে 'লিক' করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু, 'লিক' করতে অস্বীকার করায় অনু তাঁর চুলের মুঠি ধরে তাঁর মুখটাকে কোলের মধ্যে চেপে ধরেন এবং নানাভাবে যৌন নির্যাতন করতে থাকেন। এমন সময় রাস্তায় গার্ড দেওয়া এক নিরাপত্তারক্ষী গাড়ির দিকে আসাতে অনু মালিক তাঁকে ছেড়ে দেন। আর এই সুযোগে দরজা খুলে তিনি পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
এই অভিযোগকারিনীর সঙ্গে সঙ্গে আরও এক অভিযোগকারিনী অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন। এই মহিলার অভিযোগ, একটি স্টুডিও-তে অনু মালিকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। প্রথম পরিচয়েই অনু তাঁকে সিফন শাড়ি পড়তে বলেন। এরপরই নাকি অনু ওই মহিলার সঙ্গে ঘণিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করেন। এই অভিযোগকারিনীর দাবি, অনু নাকি তাঁক বলেন বয়ফ্রেন্ড না থাকায় নিশ্চয় তিনি একাকীত্বে ভোগেন। অভিযোগকারিনীর দাবি, তিনি অনু মালিকের এমন অস্বাভাবিক আচরণে বিষ্মিত হয়েছিলেন। কিন্তু বুঝতে পারেন অনু মালিক যে কথাগুলো তাঁকে বলছেন তা স্টুডিও-র দেওয়াল সাউন্ড প্রুফ হওয়ায় বাইরে কেউ শুনতে পাবে না। এরপরই তিনি নাকি অনু মালিকে ধাক্কা মেরে পাল্টা উত্তর দেন। অনু কী করতে চাইছেন? এমন প্রশ্নও নাকি অনু মালিককে করেছিলেন এই মহিলা। এরপরই নাকি অনু মালিক বলতে শুরু করেছিলেন, 'আমি আমার স্ত্রী-র সঙ্গেই খুশিতে আছি, আমি খুবই স্পর্শকাতর লোক'।
এই দুই মহিলার আগেই অনু মালিকের বিরুদ্ধে #মি টু অভিযানে অনু মালিককে কাঠগড়ায় তুলেছেন সোনা মহাপাত্র এবং শ্বেতা পণ্ডিত। সোনা অনু মালিককে 'বিকৃত কাম মনস্ক' বলে অভিযোগ করেছিলেন। গায়িকা শ্বেতা পণ্ডিতেরও অভিযোগ ছিল মাত্র ১৫ বছর বয়সে স্টুডিও-র মধ্যে তাঁকে কিস করার করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন অনু।
একের পর এক অভিযোগে অনু মালিক নিজে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে, তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, প্রতিটি অভিযোগই অসত্য এবং ভিত্তিহীন। অনু মালিকের চরিত্রহনের জন্য এটা একটা নক্কার জনক প্রয়াস বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।