ভিলে পার্লে শ্মশানে সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষকৃত্য, চোখের জলে বিদায় নিলেন অভিনেতা
ভিলে পার্লে শ্মশানে সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষকৃত্য, চোখের জলে বিদায় নিলেন অভিনেতা
মুম্বইয়ের ভিলে পার্লে শ্মশানেই শেষ কৃত্য সম্পন্ন করা হল প্রয়াত সুশান্ত সিং রাজপুতের। শেষকৃত্যে পরিবারের সদস্য ও প্রিয়জন সহ ২০ জন যোগ দিয়েছিলেন। রবিবার মুম্বইয়ের বান্দ্রায় নিজের বাড়ি থেকে অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সুশান্তের মৃত্যুতে গোটা দেশ শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে। অভিনেতাকে শেষ বিদায় জানানো হয় চোখের জলে।
ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে নিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন
অভিনেতার বাবা কেকে সিং সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মুম্বইয়ের ভিলে পার্লে শ্মশানে পৌঁছান শেষকৃত্যের জন্য। কুপার হাসপাতাল থেকে প্রয়াত অভিনেতার দেহ এই শ্মশানে নিয়ে আসা হয়। তাঁর শেষকৃত্যে বলিউডের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কৃতি শ্যানন, শ্রদ্ধা কাপুর, রনবীর সোরে, রণদীপ হুডা, বিবেক ওবেরয়, উদিত নারায়ণ। শেষকৃত্যের জন্য শ্মশানে পুরোহিতও আসে। কোভিড ১৯ মহামারির কারণে সুশান্ত সিংয়ের শেষকৃত্যে বেশিজনকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পরিবারের দাবি এটা খুন
১৪ জুন রাতেই অভিনেতার বাবা, ভাই ও অন্য পরিবারের সদস্যরা তাঁর বান্দ্রার বাড়িতে এসে পৌঁছান। রবিবার রাত থেকেই অভিনেতার মরদেহ কুপার হাসপাতালে রাখা ছিল। সোমবার দুপুর সাড়ে তিনটের সময় মুম্বইয়ের পশ্চিমে ভিলে পার্লের পবন হংস শ্মশানে অভিনেতার শেষ কৃত্য হয়। সুশান্ত সিংয়ের পরিবার দাবি করেছিলেন যে তাঁর এই মৃত্যু আত্মহত্যা নয়, অন্য কোনও গল্প লুকিয়ে রয়েছে। সোমবার ফরেন্সিক দলের তিনজন সদস্য সুশান্তের বাড়িতে আসেন কোনও রহস্যজনক প্রমাণ পাওয়া যায় কিনা তার খোঁজে। ক্রাইম ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকেও বান্দ্রার বাড়িতে তল্লাশি করা হয়।
শেষবারের মতো সুশান্ত সিংকে দেখতে আসেন রিয়া
সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বয়ানও রেকর্ড করা হবে। তবে তা কবে নাগাদ হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। কুপার হাসপাতালে অভিনেতাকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন রিয়া সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরিবারের দুই সদস্য। এরপর তিনি ভিলে পার্লে শ্মশানে চলে যান। বান্দ্রার বাড়িতে ব্যারিকেড লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। বান্দ্রা পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু উল্লেখ করা হয়েছে।
চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খেতেন না
জানা গিয়েছে, মানসিক অবসাদে ভোগা সত্ত্বেও চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ তিনি খেতেন না। সে কারণে তিনি অবসাদে থাকতেন, তবে অবসাদের কারণ এখনও অজানা। সুশান্তের সঙ্গে দু'জন রাঁধুনি নিরজ ও কেশব, যাঁরা বিহারের বাসিন্দা সহ চারজন থাকতেন। গত তিন বছর ধরে তাঁরা সুশান্তের সঙ্গে রয়েছেন। দীপক সাওয়ান্ত ছিলেন তাঁর পরিচারক এছাড়াও অভিনেতার বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানিও তাঁর সঙ্গেই থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছু মাস ধরে সুশান্ত তাঁর বাবা, বোন ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু রিয়ার সঙ্গে কোনও ধরনের যোগাযোগ রাখেননি। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত ও ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে যে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার আগে রবিবার সকাল দশটা নাগাদ তিনি একগ্লাস জুস খেয়েছিলেন। এরপর তিনি নিজেকে বেডরুমে বন্ধ করে দেন। পরিচারিকার ক্রমাগত দরজায় কড়া নাড়া সত্ত্বেও অভিনেতা যখন দরজা খোলেন না তখন প্রতিবেশীদের ডাকা হয়। পুলিশও খুব দ্রুতই চলে আসে এবং সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁর ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে সুশান্ত সিং রাজপুতকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। গত ছ'মাস ধরে হিন্দুজা হাসপাতালের সুশান্তের মানসিক অবসাদের চিকিৎসা চলছিল।
দশদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন
সুশান্তের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয় এবং রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। অভিনেতার দেহের কিছু নমুনা জেজে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এটা দেখার জন্য যে তিনি আত্মঘাতী হওয়ার আগে কোনও ওষুধ খেয়েছিলেন কিনা। অভিনেতার বাড়ির পরিচারক জানিয়েছেন যে গত দশ দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন সুশান্ত সিং। তিনদিন আগে তিনি তাঁর পরিচারককে জানিয়েছিলেন যে তিনি তাঁর সব ঋণ শোধ করে দিয়েছেন কিন্তু তিনি নিশ্চিত নন যে পরিচারকদের বেতন তিনি আদৌও দিতে পারবেন কিনা।
কি কারণে আত্মঘাতী সুশান্ত? কারণ জানতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে রিয়া চক্রবর্তী সহ ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে