সুশান্তের বোন প্রিয়াঙ্কা আমার শরীর ছোঁয়ার চেষ্টা করেছিল, বিস্ফোরক অভিযোগ রিয়ার
সুশান্তের বোন প্রিয়াঙ্কা আমার শরীর ছোঁয়ার চেষ্টা করেছিল, বিস্ফোরক অভিযোগ রিয়ার
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই প্রয়াত অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর নাম জড়িয়ে গিয়েছে। অভনেতার বাবা রিয়ার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জানিয়েছেন বিহার পুলিশের কাছে। অভিনেত্রী এই অভিযোগের ভিত্তিতে চার পাতার বিবৃতি শেযার করেছেন এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে। সেই বিবৃতিতে রিয়া জানিয়েছেন যে তিনি আদিত্য ঠাকরেকে চেনেন না এবং তাঁর সঙ্গে সুশান্তের পরিবারের বিভেদের কারণও তিনি জানিয়েছেন। অভিনেত্রীর হয়ে তাঁর আইনজীবী এই বিবৃতি শেয়ার করেছেন
বহু বছরের পরিচয় রিয়া–সুশান্তের
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রিয়া এবং সুশান্ত একে অপরকে বেশ কিছু বছর ধরে চিনতেন কারণ তাঁরা দু'জনেই ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতেন। রিয়া এবং সুশান্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধুত্ব বজায় রেখেছিলেন এবং মাঝে মাঝে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে রিয়া ও সুশান্ত দু'জনেই বলিউডের কোনও এক ব্যক্তির আয়োজন করা পার্টিতে যান এবং এরপরই তাঁরা একে-অপরের সঙ্গে ডেট করা শুরু করেন। এমনকী তাঁরা দু'জনেই একে-অপরের বাড়িতেও অনেকটা সময় কাটাতেন। এরপর তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে একসঙ্গে বান্দ্রার মাউন্ট ব্লাঞ্চে ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে থাকতে শুরু করেন এবং রিয়া ২০২০ সালের ৮ জুন ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে দেন।
রিয়া কোনও অর্থ নেননি সুশান্তের থেকে
বিবৃতি অনুযায়ী, ‘সুশান্তের পরিবারের করা বর্তমান অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই এবং তা পরে আসা কোনও চিন্তা থেকে করা হয়েছে। মুম্বই পুলিশ বা অন্য কোনও কর্তৃপক্ষের কাছে ২৭ জুলাই ২০২০ পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করা হয়নি। মুম্বইয়ে সুশান্তের পরিবারের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। তাঁরা যথেষ্ট শিক্ষিত এবং পরিবারে ওপি সিংয়ের মতো একজন আইপিএস অফিসারো রয়েছেন। অভিযোগগুলি সম্পূর্ণভাবে মনগড়া এবং তা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য করা হয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা, অর্থের অপব্যবহার সহ অন্যান্য অভিযোগগুলি রিয়া খারিজ করে দিয়েছেন। মুম্বই পুলিশ ও ইডির হাতে রিয়ার সব আর্থিক তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে যেখানে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে যে এ ধরনের অভিযোগ সবৈব মিথ্যা। রিয়া এক টাকাও নেননি সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে। রিয়ার সমস্ত আয়কর খতিয়ে দেখেছে ইডি ও মুম্বই পুলিশ। তাদের কেউই রিয়ার বিপরীতে কোনও উদ্বেগজনক কিছু খুঁজে পায়নি।
সুশান্তের বোন প্রিয়াঙ্কা শরীর ছোঁয়ার চেষ্টা করেন রিয়ার
রিয়ার বিবৃতি অনুযায়ী, ‘রিয়া-সুশান্তের সম্পর্কের প্রথমদিকে, যখন রিয়া সুশান্তের বাড়ি যেতেন, তখন অভিনেতার সঙ্গে তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা ও তাঁর স্বামী সিদ্ধার্থ থাকতেন। ২০১৯ সালের এপ্রিলের এক রাতে, রিয়া এবং প্রিয়াঙ্কা একটি পার্টিতে যান এবং সেখানে গিয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপান করে ফেলেন ও পার্টিতে আসা পুরুষ ও মহিলাদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করতে শুরু করেন। রিয়া জোর করে প্রিয়াঙ্কাকে তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। বাড়িতে আসার পরও সুশান্ত এবং তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা ক্রমাগত মদ্যপান করেন। রিয়ার পরের দিন সকালে শুটিং থাকার কারণে তিনি গিয়ে শুয়ে পড়েন। সুশান্তের ঘরে যখন রিয়া ঘুমোচ্ছিলেন আচমকাই তাঁর ঘুম ভেঙে যা্য এবং তিনি দেখেন যে প্রিয়াঙ্কা তাঁর বিছানায় এবং রিয়ার সারা দেহ তিনি ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করছেন। রিয়া এই বিষয়টি দেখার পর খুবই অবাক হন এবং প্রিয়াঙ্কাকে ঘর ছেড়ে চলে যেতে বলেন দ্রুত। এরপর রিয়া নিজেই সুশান্তের বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর রিয়া সুশান্তকে ওই ঘটনার সম্পর্কে সব জানান যা নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এই ঘটনার কারণেই সুশান্তের পরিবারের সঙ্গে রিয়ার শুরু থেকেই সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল। এমনকী সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য যে ২০ জনের তালিকা তৈরি হয়েছিল তাতে রিয়ার নাম ছিল না। তাই তাঁকে শেষকৃত্য থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।'
সুশান্তের সঙ্গে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য ছিলেন না রিয়া
বিবৃতি অনুযায়ী, ‘এ বছরের জুন মাসে সুশান্ত তাঁর পরিবারকে তাঁর মুম্বই ছেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন এবং পরিবারকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। অনেকদিন ধরে সুশান্ত পরিবারকে ফোন করত এবং কান্নাকাটি করত। তাঁর বোন মিঠু অবশেষে সুশান্তের সঙ্গে এসে থাকতে রাজি হন ৮ জুন। যার জন্য সুশান্তের অনুরোধে রিয়া তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকতে চলে যান। রিয়ার নিজস্ব কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে এবং তিনি প্যানিক অ্যাটাকে ভোগেন। সুশান্তের আচরণ রিয়ার মানসিক সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। এমনকী রিয়া তাঁর পরিবারকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন এবং তিনি সুশান্তের সঙ্গে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিলেন না। ৮ জুন রিয়া তাঁর নিজস্ব থেরাপি সেশনের জন্য ডাঃ সুশান ওয়াকারের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করেন এবং সুশান্তকে জানান যে তিনি থেরাপির পরই চলে যাবেন। যদিও সুশান্ত জানিয়েছিলেন যে তাঁর বোন মিঠু আসছে তাই রিয়া যেন দ্রুত চলে
আদিত্য ঠাকরেকে চেনেন না রিয়া
‘রিয়া আজ পর্যন্ত আদিত্য ঠাকরের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেননি। না ফোনে না অন্যভাবে তাঁর সঙ্গে রিয়ার কোনও কথা হয়েছে। রিয়া শুধু শুনেছিলেন যে আদিত্য ঠাকরে শিবসেনার নেতা।' বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
সুশান্ত কাণ্ডে ইডি অর্থ তছরূপ মামলায় প্রয়াত অভিনেতার বাবার বয়ান রেকর্ড করল