শ্বাসনালীতে হতে পারে অস্ত্রোপচার, ভালো নেই কিডনি, আগের চেয়ে স্থিতিশীল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আগের চেয়ে সামন্য একটু ভালো আছেন। তাঁর কিডনিতে প্রভাব পড়লেও তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন বলেই শনিবার রাতে জানিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

করা হবে ২টো গুরুত্বপূর্ণ সার্জারি
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসক দলের নেতৃত্বে থাকা ডাঃ অরিন্দম কর বলেন, ‘তাঁর কিডনি ফাংশানগুলির ভলিউম হ্রাস হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক কিডনির জন্য ঠিক নয়। অতিরিক্ত ফ্লুয়িড যাতে না বেড়িয়ে যায় এবং কিডনির ফাংশানকে সচল করে তুলতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা পরিচালনা হিসাবে প্লাজমাফেরেসিস ও শ্বাসনালীতে ট্রাকিওস্টোমি করব, যা অভিনেতার পরিবারের পক্ষ থেকেও সম্মতি জানানো হয়েছে।'

করোনা সংক্রমণ স্নায়ুতে প্রভাব ফেলেছে
প্রসঙ্গত, দাদাসাহেব ফালকে সম্মানে সম্মানিত ৮৫ বছরের অভিনেতা গত ৬ অক্টোবর শহরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি করোনা ভাইরাস পজিটিভ ছিলেন। যদিও গত ১৪ অক্টোবর অভিনেতার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, কিন্তু এই সংক্রমণের কারণে তাঁর স্নায়ু পদ্ধতিতে প্রভাব পড়েছে। গত দু'সপ্তাহ ধরে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যের অবস্থা ক্রমশই অবনতির দিকে যাচ্ছে। অভিনেতা এখনও নিস্তেজ রয়েছে। শেষ কয়েকদিন তিনি কিছু সময়ের জন্য নিজের চোখ খোলার চেষ্টা করেছিলেন। চিকিৎসক কর বলেন, ‘আমাদের নেফ্রোলজিস্ট এবং হেমাটোলজিস্টরা প্লাজমাফেরেসিস তাঁর পক্ষে কাজ করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করছে। আমরা এ বিষয়ে সোমবার সিদ্ধান্ত নেব। রক্তের জমাট বাঁধা ও প্লেটলেটের গণনা যদি পরবর্তী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা স্থিতিশীল থাকে তবে সোমবারই ট্রাকিওস্টোমি করার সম্ভাবনা রয়েছে।'

প্লাজমাফেরেসিস ও ট্রাকিওস্টোমি
প্রসঙ্গত, প্লাজমাফেরেসিস হল রক্তের কোষ থেকে প্লাজমাকে আলাদা করা। এরপর এই প্লাজমাই নয় স্যালাইন অথবা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। অন্যদিকে, শ্বাসনালীর চিকিৎসার অন্যতম মাধ্যম ট্রাকিওস্টোমি টিউব। অস্ত্রোপচার করে শ্বাসনালীতে (ট্রাকিয়া) ট্রাকিওস্টোমি টিউব স্থাপন করা হয়ে থাকে। যাতে নাক-মুখের বদলে গলায় থাকা ওই টিউবের মুক্ত প্রান্তের মধ্য দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস কার্য সম্পাদিত হয়।

ভেন্টিলেশনে সৌমিত্র
ডাঃ কর জানিয়েছেন, তাঁর স্নায়ুতন্ত্রের ফাংশানের উন্নতিও হচ্ছে না আবার অবনতিও হচ্ছে না। ফুসফুস ভালো কাজ করছে। তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই রাখা হয়েছে। রক্ত জমাট বাঁধার ফাংশানের উন্নতি হয়েছে। সৌমিত্রর প্লেটলেট এক লক্ষের ওপর রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং গত দু'দিন ধরে তাঁর জ্বরও আসেনি। শনিবার থেকেই তাঁক অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থনা করছে গোটা বাংলা
সৌমিত্রর শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণে তাঁর অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য গত ২ নভেম্বর ভ্যাসকুলার সার্জারি করা হয়। বরিষ্ঠ অভিনেতার সুস্থতা কামনা করে বাংলার লক্ষাধিক মানুষ প্রার্থনা করছেন। চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যাতে তাঁর প্রিয় গান ও অডিও ক্লিপ শুনতে পারেন। দু'সপ্তাহ আগে তিনি তাঁর মেয়ে পৌলমী বসুর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।

শুভেন্দুর সঙ্গে দ্বন্দ্ব কেন মেটাচ্ছেন না পিকে-অভিষেকরা! প্রশ্নে মমতার ভূমিকা