কর্ণের কবচকুণ্ডলের মতোই ক্ষমতা ধরে নারীর নকল স্তন, চাঞ্চল্যকর দাবি নয়া গবেষণায়
নারীর সৌন্দর্যে স্তনের স্থান কোথায়-এই নিয়ে নতুন করে না কিছু বললেও হবে। তাই গত কয়েক দশক ধরেই উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে নকল স্তন প্রতিস্থাপনের।
নারী সৌন্দর্যে স্তন নিয়ে আহ্লাদিত হওয়ার চলটা নতুন কোনও ট্রেন্ড নয়। বাংলা সাহিত্য থেকে ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক সাহিত্যেও নারী সৌন্দর্যের ব্যাখ্যায় স্তন নিয়ে একথা-সেকথা লেখার চল কয়েক'শ বছরের পুরনো। খোদ কালীদাস শকুন্তলার সৌন্দর্য বর্ণনায় যেভাবে স্তন এবং বক্ষ আবরণের শৈল্পিক বর্ণনা মেলে ধরেছিলেন তা আজও সাহিত্য়রসের এক অসীম ঐশ্বর্য বলেই মানা হয়। নারীর রূপটানে স্তনের এমন সৌন্দর্য সম্পাদনায় বড় মাপের সাহিত্যিকরা বারবার তাঁদের কলমে আঁচড় টেনেছেন। এই দলে তো রবীন্দ্রনাথ একদম শীর্ষস্থানই দখল করে নিতে পারেন। এমনকী, রবিযুগের বহু আগের কবি জয়দেব থেকে বৈষ্ণব পদাবলীর অন্যতম কবি চণ্ডীদাসও তাঁদের পদযুগলে বারংবার টেনেছেন নারী স্তন সৌন্দর্যের কথা।
বর্তমান সময়ে এটা তো ট্রেন্ডেই পরিণত হয়েছে। স্তন প্রতিস্থাপন এখন আর কোনও নতুন বিষয় নয়। নব্বই-এর দশকে হলিউডের গ্ল্যামার রানি পামেলা আন্ডারসন যেভাবে তাঁর সৌন্দর্য বিকাশে স্তন প্রতিস্থাপনের আশ্রয় নিয়েছিলেন তা এখনও লোকেদের মুখে মুখে ফেরে। কিন্তু, এই নকল স্তন নিয়ে এখন সামনে এসেছে এক অবাক করা তথ্য।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় উটা-য় এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, নকল স্তন সামলে দিতে পারে বুলেটের আঘাতও। ফলে, নকল স্তনে গুলি লাগলেও মৃত্যু অবশ্যাম্ভাবি নাও হতে পারে। উটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, নকল স্তনের মধ্যে বুলেটের গতি ক্রমশই কমতে থাকে। ফলে, যে গতিতে বুলেটের আঘাত করার কথা, সেই গতি বজায় থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই এতে শরীরে এমন কোনও মারণ ক্ষত তৈরি হয় না, যা থেকে মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে উটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণার কথা। সেই প্রতিবেদনে, এইলিন লিকনেস নামে কানাডার এক মহিলা জানিয়েছেন, এই নকল স্তনের দৌলতেই একবার তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। এইলিন জানিয়েছেন, প্রাক্তন প্রেমিক তাঁর স্তন লক্ষ করে গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু, নকল স্তন ভেদ করে সেই গুলি এইলিনের শরীরে নাকি মারণ ক্ষত তৈরি করতে পারেনি।
শরীরের যতগুলি সংবেদনশীল স্থানে থাকে, তারমধ্যে স্তন অন্যতম। এখানে একাধিক রক্তপ্রবাহকারী শিরা থাকে। এরমধ্যে কোনও শীরা কেটে গেলে যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যু নিশ্চিত।
তাহলে কী করে প্রাণে বেঁচেছিলেন এইলিন? উটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, আসলে নকল স্তনের মধ্যে থাকে একধরনের জেল। এই জেলেই আটকে যায় বুলেটের বিপুল গতি। বুলেট নকল স্তনের ভিতর দিয়ে যত ভিতরে প্রবেশ ততই কমতে থাকে গতি। বলতে গেলে নকল স্তনের মধ্যে থাকা জেল অনেকটা গাড়িতে থাকা এয়ার ব্যাগের মতোই কাজ করে।
সন্দেহ নেই নকল স্তন নিয়ে এমন গবেষণার রিপোর্ট এখন হইচই ফেলে দিয়েছে। যদিও, স্তন প্রতিস্থাপনের বিরোধীরা এক্ষেত্রেও সরব হয়েছেন। তাঁদের দাবি, বক্ষ প্রতিস্থাপন মানব শরীরের পক্ষে কতটা নিরাপদ সেটাই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সুতরাং, নকল স্তন নিয়ে এমন গবেষণা পত্র আসলে চমক ছাড়া আর কিছুই নয় বলে দাবি তাঁদের।