
ফের জামিনের আবেদন খারিজ, মুম্বই মাদক কাণ্ডে আরিয়ান খানের সঙ্গে কি কি হল দেখে নিন
মুম্বই প্রমোদতরীর মাদক কাণ্ডে গ্রেফতার বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের ২৩ বছরের ছেলে আরিয়ান খান। আরিয়ানের সঙ্গে আরবাজ মার্চেন্ট ও মুনমুন ধামেচা সহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। মুম্বইয়ের প্রমোদতরীতে হওয়া রেভ পার্টি থেকে উদ্ধার হয় একাধিক নিষিদ্ধ মাদক দ্রব্য। ধৃত সাতজনের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য সেবন, বিক্রি ও ক্রয় করার ধারা দেওয়া হয়েছে। মুম্বই আদালতে আরিয়ান খানের জামিন খারিজ করে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। ২০ অক্টোবর আরিয়ান খান সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের জামিন খারিজ করে দেওয়া হয়। এই শুনানির পর আরিয়ানের আইনজীবী জানিয়েছেন যে জামিনের জন্য তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। আসুন দেখে নিই আরিয়ান খান গ্রেফতারের আগে ও পরে কি কি ঘটেছে।

বিশেষ এনডিপিএস আদালতে শুনানি
মুম্বইয়ের বিশেষ এনডিপিএস আদালত আরিয়ান খান, আরবাজ খান ও মুনমুন ধামেচার জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। অভিযুক্তদের আর্থার জেল ও বায়কুল্লা জেলে রাখা হয়েছে।

বুধবারও খারিজ জামিনের আবেদন
গত ১৪ অক্টোবর এনডিপিএস আদালত ঘোষণা করে যে আরিয়ান খান সহ অন্যান্যদের জামিনের আবেদনের শুনানি হবে ২০ অক্টোবর।

জামিনের আবেদনের শুনানি
গত ১৩ অক্টোবর মুম্বইয়ের দায়রা আদালতে আরিয়ান খানের জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হয়। উভয় পক্ষের তর্ক-বিতর্কের পর আদালত জামিনের আবেদনের শুনানি ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত রাখে। এর আগে ১১ অক্টোবর বিশেষ আদালত নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোকে নির্দেশ দেন ১৩ অক্টোবর আরিয়ান খানের দায়ের করা জামিনের আবেদনের জবাব দিতে।

বারবার জামিন খারিজ
আরিয়ান খানের আইনজীবী সতীশ মানেশিণ্ডে জামিনের জন্য এনডিপিএস আদালতে আবেদন করেন। মুম্বইয়ের এসপ্ল্যানেড আদালত আরিয়ান খান, আরবাজ খান ও মুনমুন ধামেচার জামিনের আবেদন অস্বীকার করে। এই তিনজনকে মুম্বইয়ের প্রমোদতরীর রেভ পার্টি থেকে গ্রেফতার করে এনসিবি।

আর্থার জেলে আরিয়ান খান
আরিয়ান খান আদালতে হাজির হননি। পরিবর্তে, তিনি মেডিক্যাল পরীক্ষা করান এবং তাঁকে আর্থার রোড কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এনডিপিএস আইনের অধীনে, এনসিবি ইতিমধ্যে নিয়মিত জামিনের বিরোধিতা করেছে। এসপ্ল্যানেড ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৮ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২ টায় জামিন আবেদনের শুনানি করে।

জামিনের আবেদন আরিয়ানের
আরিয়ান খান জামিনের আবেদন করেন। সতীশ মানশিণ্ডে দু'টি জামিনের আবেদন পেশ করেন। একটি অন্তর্বর্তীকালিন জামিনের আবেদন করেন যাতে ২৩ বছরের আরিয়ান দ্রুত জামিন পেয়ে যান এবং অন্যটি নিয়মিত জামিনের আবেদন। এই মামলাটি তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আরিয়ানকে জামিনে ছাড়তে বলা হয়।

আরটি–পিসিআর পরীক্ষা আরিয়ানের
আরিয়ান ও অন্যান্যদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানো হয়। সতীশ মানশিণ্ডে আদালতকে অনুরোধ করেন যে আরিয়ান খান ও অন্যান্যদের যাতে এনসিবি দফতরে রাখার অনুমতি দেওয়া হোক। কারণ রাতে জেলে ঢোকার অনুমতি নেই। আদালতের পক্ষ থেকে আইনজীবীর এই আর্জি মেনে নেওয়া হয়।

গ্রেফতার আরও সাত
আরিয়ান খানের গ্রেফতারের পাশাপাশি এনসিবি গ্রেফতার করেন আরবাজ মার্চেন্ট, মুনমুন ধামেচা, নুপুর সতীজা, ইশমিত চাড্ডা, মোহক জয়সওয়াল, গোমিত চোপড়া, বিক্রান্ত চোকার এবং জুহু থেকে এক মাদক পাচারকারীকেও গ্রেফতার করে।

১৪দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত
সেশন শেষে, আরিয়ান খান, আরবাজ মার্চেন্ট এবং অন্য ছয়জনকে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়। আদালত জানিয়েছিল, বিশেষ এনডিপিএস আদালতে এই মামলার শুনানি হবে।

এনসিবি হেফাজত বাড়ানোর পক্ষে
এনসিবি আদালতকে জানিয়েছিল যে আরিয়ানের হেফাজত বাড়ানো উচিত কারণ আরিয়ান ও আরবাজকে অন্য এক অভিযুক্ত অচিত কুমারের সামনে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কারণ আরিয়ানকে জেরার সময়ই অচিত কুমারের নাম উঠে এসেছে।

আরিয়ান খানের হেফাজত বাড়ানো নিয়ে তর্ক
সতীশ মানশিণ্ডে এও জানিয়েছেন যে শেষ দু'টি রাত আরিয়ান খানকে জেরা করা হয়নি। তার হেফাজত বাড়ানো উচিত নয়। এনসিবি অফিসে নিয়ে যাওয়ার পর আরিয়ান খানকে ফের তল্লাশি করে এনসিবি যদিও তার থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। এনসিবি শুধুমাত্র আরিয়ানের ফোন হেফাজতে রেখে দেয়। আরিয়ানের হয়ে আইনজীবী বলেন যে কোনও মাদক চক্রের সঙ্গে আরিয়ান যুক্ত নয়। আরবাজের সঙ্গে আরিয়ানের বন্ধুত্ব অনস্বীকার্য নয় কিন্তু আরবাজের কার্যকলাপের সঙ্গে আরিয়ান যুক্ত নয়।

রেভ পার্টিতে আমন্ত্রিত আরিয়ান খান
মানশিণ্ডে জানিয়েছে, আরিয়ান খান মুম্বই ক্রুজ পার্টিতে ভিভিআইপি অতিথি ছিলেন। প্রতীক নামে তাঁর এক বন্ধু আরিয়ানকে আমন্ত্রণ জানান। আরিয়ান সেই রেভ পার্টিতে যান যেখানে ১৩০০ মানুষ আমন্ত্রিত ছিলেন কিন্তু গ্রেফতার করা হয় মাত্র ১৭ জনকে।