রোহিঙ্গা শিবির থেকে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন প্রিয়াঙ্কা, দেখুন সেই ছবি ও ভিডিও
রোহিঙ্গা শিবিরে তাঁর প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার কথা বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে সোশাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।
ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, সম্প্রতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি সোশাল মিডিয়ায় তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সারা বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন শিবিরের তাঁর প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার কথা বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এই অভিনেত্রী।
সফরের প্রথমে তিনি যান জামতলির রোহিঙ্গা শিবিরের 'মহিলা বান্ধব' এলাকায়। তিনি জানিয়েছেন রোহিঙ্গাদের শিবিরে সাধারণত যেরকম হইহট্টোগোল, প্রচুর মানুষের ভিড়, প্রকৃতপক্ষে উপচে পড়া ভিড় থাকে এই এলাকাটা তার থেকে আলাদা। বরং অদ্ভূত শান্তি রয়েছে এখানটাতে।
A post shared by Priyanka Chopra (@priyankachopra) on
একটি ত্রিপল ছাওয়া বাঁশের তৈরী ছোট কুঁড়েঘর। প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন সেটাই ক্যাম্পের মেয়েদের 'শান্তির ঘর'। সেখানে রোহিঙ্গা মহিলারা নিজেদের মতো করে সময় কাটান। বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা, গল্পগুজব, শলা-পরামর্শ, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে নাচ-গানও চলে। প্রিয়াঙঅকার পোস্ট করা একটি ছবিতে তাঁকেও সেসব কাজকর্মে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। শরণার্থী শিবিরের ছোট্ট মেয়েদের 'টি পার্টি' তিনি প্রচুর মজা করেছেন।
A post shared by Priyanka Chopra (@priyankachopra) on
কোয়ান্টিকো-তে অভিনয়ের সুবাদে তাঁর এখন বিশ্বজোড়া পরিচয়। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরে তিনি যেন তারকা নন, শিবিরের আর পাঁচজন মহিলার সঙ্গে তিনি স্বচ্ছন্দে মিশে গেছিলেন। শিবির থেকেই তিনি জানান, ওই ক্যাম্পে আনুমানিক ৫০ টি 'মহিলা বান্ধব' স্থান আছে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। কারণ প্রতিদিন সেসব জায়গায় গড়ে ৫০ থেকে ৭০ জন করে রোহিঙ্গা মহিলা আশ্রয় নেন।
A post shared by Priyanka Chopra (@priyankachopra) on
তাদের প্রত্যেকের কাছেই হৃদয় বিদারক সব কাহিনী রয়েছে। প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, এক মেয়ের গ্রামের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে সে ও তার বাবা-মা দু'দিন পর শিবিরে এসে পৌঁছান। পথের শয়ে শয়ে মুন্ডহীন বা ক্ষতবিক্ষত লাশ পেরোতে হয়েছে তাঁদের। আরেকটি মেয়েকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে ধর্ষণ ও নিদারুন অত্যাচার করা হয়। এমনকী এরপর তাকে মেরে ফেলার চেষ্টাও করা হয়, ছুরির আঘাতও পড়েছিল। কিন্তু তাও সে তাদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। কোনমতে নিজেকে মুক্ত করে পালিয়ে এসেছে। আরেক যুবতীকে বনের মধ্য দিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে পায়ে হেঁটে আসতে হয়েছে। পথে মারা গিয়েছে তার ছোট ভাই। ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শিবিরের অনেক মহিলাই।
A post shared by Priyanka Chopra (@priyankachopra) on
অবশ্য এই সব নিরাশাজনক কাহিনীর মধ্য থেকেই আশা খুঁজেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তিনি বলেছেন আট মাস বয়সী শহিদার কথা। কয়েক মাস আগে শহিদার মা ১৯ বছর বয়সী আলাদা, ছয় মাসের গর্ভবতী অবস্থায় সীমান্ত পেরিয়ে ১৫ দিন ধরে হেঁটে শিবিরে এসেছিলেন। শহিদা এখন শিবিরে নানারকম সুবিধা পাচ্ছেন। শহিদার কাহিনী বলে প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, 'এর থেকেই বোঝা যায়, এই পৃথিবীতে এখনও আশা আছে।' পাশাপাশি তিনি সোশাল মিডিয়ায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনগণের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন।