বাংলার বাইরে বাংলা সিনেমার সবচেয়ে বড় বাজার এখন ব্যাঙ্গালোর
আশ্চর্য হলেও সত্যি। অথচ ব্যাঙ্গালোর থুড়ি বেঙ্গালুরুতে যা বাঙালি থাকে, তার চেয়ে অনেক বেশি বাঙালির বাস মুম্বই, লখনউ কিংবা শিলচরে। ত্রিপুরা তো পুরোপুরি বাঙালি অধ্যুষিত। অথচ তাদের পিছনে ফেলে বাংলা সিনেমা রেকর্ড ব্যবসা করছে ব্যাঙ্গালোরে।
শুরুটা করেছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন ব্যাঙ্গালোরে। তাই এখানকার বাঙালিদের চাহিদাটা বোঝেন। ২০১০ সালে যখন 'অটোগ্রাফ' তৈরি করেছিলেন, গোঁ ধরেছিলেন ব্যাঙ্গালোরেও শো দিতে হবে। পরিবেশকরা ইতস্তত করেও শো দিয়েছিলেন। বিফল হননি। সেই শুরু।
এখানে বাংলা সিনেমার চাহিদাটা কীভাবে বাড়ছে, একটা উদাহরণ দিলেই পরিষ্কার হবে। 'অটোগ্রাফ' চলেছিল একটি প্রেক্ষাগৃহে। ২০১৩ সালে 'মিশর রহস্য' অন্তত পাঁচটি প্রেক্ষাগৃহে চলেছে টানা পাঁচ সপ্তাহ ধরে। আর 'চাঁদের পাহাড়' পাঁচটি প্রেক্ষাগৃহে চার সপ্তাহ ধরে টানা চলছে। এত ভিড় হচ্ছে যে, সারাদিনে অন্তত তিনটি করে শো চালাতে হচ্ছে। তবুও কাউন্টার খুলতে না খুলতেই টিকিট শেষ। যা অবস্থা, তাতে অন্তত আরও চার-পাঁচ সপ্তাহ চালাতে হবে 'চাঁদের পাহাড়'। দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত 'চাঁদের পাহাড়' ১০ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে। অথচ ব্যাঙ্গালোরে তা ২০ লক্ষ টাকার অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছে। এই তথ্য দিয়েছে সিনেমাটির প্রযোজনা সংস্থা শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মস নিজেই।
'চাঁদের পাহাড়'-এর পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বললেন, "আমি জানতুম, বাইরের বাঙালিদের পছন্দ আলাদা। কিন্তু দেখলাম, আমার সিনেমা অর্থ ও যশ, দু'টোই কুড়োচ্ছে ব্যাঙ্গালোরে। এবার অন্যভাবে ভাবতে হবে।"
আসলে চাকরি, পড়াশুনোর সূত্রে 'ভারতের সিলিকন ভ্যালি'-তে রোজই এসে ভিড় জমাচ্ছেন বাঙালিরা। ইন্দিরানগর, হোয়াইট ফিল্ড থেকে শুরু করে বনশঙ্করী, কোরামঙ্গলা, জে পি নগর, হেব্বল ইত্যাদি সব জায়গাতেই বাঙালিদের উপস্থিতি চোখে পড়ে। ফলে সুদূর দক্ষিণ ভারতেও বাংলা সিনেমার দর্শক বেড়ে চলেছে।