দিওয়ানা বা রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান নয়, সমকামী চরিত্রে এই সিনেমায় প্রথম দেখা যায় শাহরুখকে
বলিউডকে যাঁরা খুব কাছ থেকে অনুসরণ করেন তাঁরা এটা জানেন যে শাহরুখ তাঁর বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন ১৯৯২ সালের দিওয়ানা দিয়ে। তবে এসআরকে-এর ভক্তদের এটাও নিশ্চয়ই নে আছে যে শাহরুখ কিন্তু তাঁর কেরিয়ারের প্রথম সিনেমা 'রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান' ছবিতে সই করেছিলেন প্রথম, যদিও তা পরে মুক্তি পায়। তবে এই দুই সিনেমাই শাহরুখের কিন্তু প্রথম ছবি নয়। বহু বছর আগে, তখনও এই দুই ছবি তৈরি করার কথাও কারোর মাথায় আসেনি, যখন শাহরুখ খান দিল্লি থিয়েটার বৃত্তে নিজেকে প্রমাণ করার লড়াইয়ে সামিল ছিলেন, সেই সময় তিনি কেরিয়ারের প্রথম সিনেমাটি করেন।
শাহরুখ খান দূরদর্শনের প্রযোজনায় ইংরাজি ভাষার একটি ছবিতে প্রথম ডেবিউ করেছিলেন। ৫৭তম জন্মদিনে এসআরকের সেই প্রথম সিনেমার কথা স্মরণ করে নেওয়া যাক। যা হয়ত অনেকেরই মনে নেই। সিনেমার নাম ছিল 'ইন হুইচ অ্যানি গিভস ইট দোজ ওয়ানস'। এই সিনেমার গল্প মূলত, আনন্দ ওরফে 'অ্যানি' গ্রোভার (অর্জুন রায়না), যিনি দিল্লি স্কুল অফ প্ল্যানিং অ্যান্ড আর্চিটেকচারের একজন পড়ুয়া। অর্জুনের সঙ্গে এই স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল ওয়াইডি বিলিমোরিয়া (রোহন শেঠ)-এর সম্পর্ক খুবই তিক্ত। প্রদীপ কৃষেন পরিচালিত এই সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ফিউচার বুকার পুরষ্কার জয়ী অরুন্ধুতী রায়, যিনি নিজেও এই সিনেমায় প্রধান নারী চরিত্র রাধায় অভিনয় করেন। এই সিনেমার শুরুতে শাহরুখ খানকে দু'টি দৃশ্যে দেখতে পাওয়া যায়। এসআরকে এই সিনেমায় কলেজের সিনিয়র তথা সমকামীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শাহরুখ বাদে এই সিনেমায় আরও এক জনপ্রিয় অভিনেতাকে ক্যামিও চরিত্রে দেখা যায়, তিনি হলেন মনোজ বাজপেয়ী। যিনি সেই সময় নিজের কেরিয়ার নিয়ে সংঘর্ষ করছিলেন। এই দুই অভিনেতা ছাড়া রঘুবীর যাদব, দিব্যা শেঠ ও হিমানী শিবপুরীর মতো জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও এই সিনেমায় দেখা গিয়েছে।
শাহরুখের উপস্থিতি ছিল সংক্ষিপ্ত এবং তাঁর চরিত্রের সঙ্গে বর্তমান এসআরকের মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। শাহরুখের এই চরিত্র খুবই বুদ্ধিজীবী একজন পড়ুয়ার, তাঁর বিবৃতি ছিল দীর্ঘ, যা শাহরুখের পরবর্তী চরিত্র রাহুল ও রাজের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় না। এমনকী তাঁর গলার আওয়াজও একেবারে আলাদা ছিল যে অনেক ভক্তেরই মনে হয়েছে যে এটা অন্য কেউ ডাবিং করেছেন। ৯০ সালের এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান জানিয়েছিলেন যে তিনি খুব অস্বচ্ছন্দ্য বোধ ও নার্ভাস ছিলেন কারণ তাঁকে চোখ দিয়ে ফ্লার্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় ২৩ বছরের শাহরুখ খান এই ছোট্ট চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য আপ্রাণ পরিশ্রম করে গিয়েছিলেন।
এই সিনেমাটি টেলিভিশনের জন্য তৈরি হয়েছিল এবং সিনেমা হলে মুক্তি পায়নি। ১৯৮৯ সালে দূরদর্শনে এটি সম্প্রচারিত হয়। সেই সময় শাহরুখ ফৌজি সহ বেশ কিছু সিরিয়ালের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। এই সিনেমাটা দারুণভাবে প্রশংসিত হয় এবং ইংলিশ সেরা ফিচার ফিল্ম ও সেরা স্ক্রিনপ্লে বিভাগে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। তবে দুঃখের বিষয় এই যে সিনেমার আসল প্রিন্টটি হারিয়ে গিয়েছে এবং ৯০ সালে যাঁরা ভিসিআরে এই সিনেমাটি রেকর্ড করেছিলেন তাঁদের কাছেই শুধুমাত্র সিনেমার কপি রয়ে গিয়েছে। ডিজিটাল ভার্সন সিনেমার ইউটিউবে ২০১৫ সালে আপলোড হয়, যা নিঃসন্দেহে শাহরুখের ডেবিউ সিনেমার সেরা প্রিন্ট হিসাবে বিবেচিত হবে।
আগামী বছর আবহাওয়া বিগড়াতে পারে! আসছে শাহরুখ ঝড়, জন্মদিনে মুক্তি 'পাঠান’ টিজারের