'আমি আত্মহত্যা করার মুখে ছিলাম, যাতে আমার বন্ধুরা..' মনোজ শোনালেন বীভৎস অভিজ্ঞতার কথা
'আমি আত্মহত্যা করার মুখে ছিলাম, যাতে আমার বন্ধুরা..' মনোজ শোনালেন বীভৎস অভিজ্ঞতার কথা
একটা ফাঁকা ঘর। জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে একটা শরীর। যে শরীর খাটের ওপর পড়ে রয়েছে। জানলা দিয়ে যাঁকা উঁকি মারছেন,তাঁরা জানেন পড়ে থাকা ওই ব্যক্তি একজন নামী প্রোফেসর।... দৃশ্য 'আলিগড় ' ছবির শেষের দিকের! মনোজ বাজপেয়ী অভিনীত এই হৃদয়স্পর্শী ছবিতে একটা অদ্ভুত 'শেষ' দেখানো হয়েছিল। এরকমই এক 'শেষ'হওয়ার ভাবনা চিন্তা অভিনয় জগতে আসার বহু বছর আগে ভেবেছিলেন মনোজ বাজপেয়ী। ভেবেছিলেন নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা...
মনোজের বক্তব্য সাক্ষাৎকারে
এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ীর কাছে সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়।মনোজ বাজপেয়ী জানান, তার জীবনেও ছিল বহু লড়াই। যে লড়াইয়ের জেরে একবার নিজেকে শেষ করতে চেয়েও করতে পারেননি তিনি।
' আমি কৃষকের ছেলে'
'আমি কৃষকের ছেলে , আমি বিহারের একটি গ্রামে বড় হয়েছি। ৫ জন ভাইবোন আমরা, যারা ছোটবেলায় একটি মাটির তৈরি কুঁড়ে ঘরের স্কুলে যেতাম। সাধারণ জীবন ছিল আমাদের। তবে আমরা শহরে গেলেই সিনেমা দেখতে যেতাম। আমি বচ্চনের ফ্যান ছিলাম। আমি তাঁর মতো হচে চেয়েছিলাম। ৯ বছর বয়সেই জানতাম আমি আমার ভাগ্যে কী আছে..। ' বলেন মনোজ।
'আমি স্বপ্নপূরণ করতে গিয়ে...'
'কিন্তু আমি স্বপ্নপূরণ করতে গিয়ে সামর্থ জোটাতে পারিনি, আর পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। আমার মনোনিবেশ অন্য কিছুতে হত না। আর ১৭ বছর বয়সে আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি দিয়েছি।সেখানে থিয়েটার করতাম।তবে পরিবার সেকথা জানত না। শেষে বাবা কে চিঠি লিখলাম, আর তিনি রেগে যাননি। শেষে ২০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন সমস্ত খরচ মেটানোর জন্য।'
'বাড়িতে তখন..'
'বাড়িতে তখন আমায় অকেজো ভাবতেন সবাই। তবে আমি সেসবে পাত্তা দিতাম না।আমি বাইরের লোক ছিলাম (থিয়েটারে)। চেষ্টা করছিলাম অ্যাডজাস্ট করতে।.. এরপর এনএসডিতে আবেদন করি তিনবার। আর তিনবারই প্রত্যাখ্যাত হই। এরপর আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলাম, যাতে আমার বন্ধুরা আমার পাশে শোয়ে, যাতে আমাকে কেউ ছেড়ে একলা করে দিয়ে না যায়। কারণ,আমাকে যাতে সবাই গ্রহণ করে সেই লক্ষ্যে তারাই আমাকে এগিয়ে দিয়েছিল।'
লড়াইয়ের দিনরাত্রি
মনোজ এই সাক্ষাৎকারে জানান, কীভাবে তাঁকে শেখর কাপুরের 'ব্যান্ডিট কুইন' এর জন্য নির্বাচিত করা হয়। আর প্রথম শর্টের পরই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর মুম্বইয়ের জীবনযাত্রা শুরু।যেখানে 'রোজগারের চেয়ে বড়া পাওয়ের দাম বেশি ছিল'। সেখান থেকে ৪ বছরের লড়াই, এরপর মনোজ মহেশ ভাটের টিভি সিরিজে সুযোগ পান। যার পারিশ্রমিক হিসাবে পেতেন ১৫০০ টাকা। ধীরে ধীরে উন্নতির আলো তাঁকে জড়িয়ে ধরে। এরপর আর পিছনে তাকাতে হয়নি বলে জানান মনোজ।