লতা মঙ্গেশকরের চোখে সেরা গায়ক কে জানেন, তাঁকে রাখিও পরাতেন কিংবদন্তি গায়িকা
লতা মঙ্গেশকরের চোখে সেরা গায়ক কে জানেন
রবিবার ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন কিংবদন্তী গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। সরস্বতী পুজোর বিসর্জনের দিনই সঙ্গীতের সরস্বতী চিরতরে বিদায় নিলেন। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিয়ে শেষ বিদায় জানানো হল দেশের কোকিল কন্ঠীকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। নিজের কন্ঠের জাদুতে শ্রোতারা মুগ্ধ হলেও লতা জির প্রিয় গায়ক ছিলেন কিশোর কুমার। কিশোর–লতা জুটির অজস্র গান আজও চিরস্মরণীয় সকলের কাছে।
'তেরে
মেরে
মিলন
কি
ইয়ে
র্যায়না’,
'ভিগি
ভিগি
রাতো
মে’,
'নয়নো
কি
স্বপ্না’
'দিল
কি
বাতে’
সহ
অসংখ্য
শ্রোতাপ্রিয়
গানে
কন্ঠ
দিয়েছেন
কিশোর
কুমার
ও
লতা
মঙ্গেশকর।
১৯৪৮
সালের
'জিদ্দি’
সিনেমার
'ইয়ে
খুন
আয়া
রে’
গানটিতেই
প্রথম
জুটি
বাঁধেন
কিশোর
কুমার
ও
লতা
মঙ্গেশকর।
দু’জনের
একসঙ্গে
গাওয়া
গানের
সংখ্যা
প্রায়
অর্ধশত।
কিশোর
কুমার
ছিলেন
লতা
মঙ্গেশকরের
খুব
প্রিয়
একজন
মানুষ।
তাঁর
সঙ্গে
থাকলে
লতা
জি
গান
রেকর্ড
করবেন
কি
হেসেই
লুটোপুটি
খেতেন।
কিশোর
কুমারের
উদ্ভট
স্বভাব
লতা
জিকে
সবসময়ই
হাসিয়েছে।
আর
তাই
কিশোর
কুমারকে
পছন্দ
করতেন
লতা
মঙ্গেশকর।
সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে শেষ বিদায় জানাতে সমবেত ভক্তরা, উপচে পড়া ভিড় শ্রোতাদের
নিজের আত্মজীবনীতে লতা লিখেছিলেন, 'আমি তখন খেদচন্দ প্রকাশের সঙ্গে কাজ করছি। তখন গ্রান্ট রোড থেকে মালাড পর্যন্ত ট্রেনে যাতায়াত করতাম। সেখান থেকে রেকর্ডিং স্টুডিও পর্যন্ত হেঁটে বা টাঙায় যেতাম। একদিন রেকর্ডিং ছিল। মহালক্ষ্মী স্টেশন থেকে এক যুবক আমার কামরাতেই উঠলেন। কুর্তা-পাজামার সঙ্গে গলায় স্কার্ফ পরে তিনি বসেছিলেন। হাতে একটা ছড়ি ছিল। অদ্ভূত ভঙ্গি দেখে আমি খানিক ভয়ই পেয়েছিলাম। পরে দেখেলাম তিনি টাঙায় করে আমার পিছনেই আসছেন। তখন ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। কোনও ক্রমে দ্রুত রেকর্ডিং স্টুডিওতে পৌঁছলাম। দেখলাম সেই যুবকও স্টুডিওতে ঢুকলেন। সেখানে খেমচন্দ জি বসেছিলেন। তাঁকে দেখেই বললাম, আঙ্কল এই লোকটা আমায় ফলো করছে। খেমচন্দ জি তখন হেসে বললেন, আরে এ তো কিশোর। অশোক কুমারের ভাই। আজ তোমার সঙ্গে ডুয়েট গাইবে। মানুষকে হাসানো এবং মজা করার স্বভাব কিশোরদার চিরকালীন। প্রসঙ্গত, জিদ্দি ছবির গান ইয়ে কউন আয়া করকে সোলহা সিঙ্গার আমাদের প্রথম ডুয়েট গান। প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসাবে কিশোরদার-ও প্রথম ছবি ছিল জিদ্দি।’ কিশোর কুমারকে লতা মঙ্গেশকর রাখীও পরাতেন। কিশোর কুমারে গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন লতা জি। লতা জি এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছিলেন যে কিশোর দা কোনওদিন গানের প্রশিক্ষণ নেন নি কিন্তু তাঁর গান শুনে কেউ এ কথা বলতে পারবে না। এককথায় লতা জি ছিলেন কিশোরের গানের গুণমুগ্ধকর ভক্ত।
কিশোর পাগল সেই লতা মঙ্গেশকর নিজেও পাড়ি দিলেন সেই অজানা দেশে। যেখানে তাঁর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছেন কিশোর কুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মহম্মদ রফি, মান্না দে সহ আরও অনেক শিল্পী।