'জগ্গা জাসুস'-এর অভিনেত্রীর রহস্যমূত্যু, আত্মহত্যা না কি খুন, গ্রেফতার স্বামী
অসমের প্রখ্যাত গায়িকা তথা অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যুতে এখন তোলপাড় গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড। অসম থেকে বলিউডে পা রাখা বিদিশা বেজবরুয়ার মৃত্যুর আসলে খুনের ঘটনা বলেই দাবি তাঁর পরিবারের।
বলিউড কলিং। একদিন এই বলেই অসমের ঘর ছেড়েছিলেন বিদিশা বেজবরুয়া। আর সেই বিদিশার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল গুরুগ্রামে তাঁর ভাড়া ফ্ল্যাটে। এই ঘটনার দু'দিন আগেই গুরুগ্রামের সুশান্ত অ্যাপার্টমেন্টের এই ফ্ল্যাটে এসে উঠেছিলেন বিদিশা। কিন্তু, সোমবার থেকে কারোর ফোন ধরছিলেন না তিনি। এমনকী, তাঁকে ওই দিন থেকে বাইরেও দেখা যায়নি বলে দাবি অ্যাপার্টমেন্টের অন্য বাসিন্দাদের।
বিদিশার বাবা সোমবার সকাল থেকে মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে তেজপুর থেকে গুরুগ্রাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিদিশার ফ্ল্যাটের ঠিকানাও তিনি পুলিশকে দেন। এরপরই সুশান্ত অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে বিদিশার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিলিং ফ্যানের সঙ্গে বিদিশার দেহ ঝুলছিল বলে জানিয়েছেন, গুরুগ্রাম পূর্বের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দীপক সাহারান।
পুলিশ জানিয়েছে, বিদিশা প্রেম করেই নিশীথ ঝা নামে একজনকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, বিয়ের পরেই তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগে থাকত। বিদিশা তাঁর বাপের বাড়িতেও বেশ কয়েকবার নিশীথ সম্পর্কে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এমনকী, পণের জন্য শ্বশুর-শাশুড়িও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ করেছিলেন বিদিশা। নিশীথের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি।
গুরুগ্রামের যে ফ্ল্যাটে বিদিশার দেহ উদ্ধার হয়েছে তা ভাড়া নেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। স্বামীর চাপেই বিদিশাকে মুম্বইয়ের বাস তুলে গুরুগ্রামে আসতে হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে।
বিদিশা অসমের টিভি জগতে অ্য়াঙ্কর হিসাবে পরিচিত নাম। এর পাশাপাশি বহু স্টেজ শো তিনি সঞ্চালনা করেছিলেন। অসমীয়া নাটকেও তাঁকে বহুবার দেখা গিয়েছে। গান গাইতে ভালবাসতেন বিদিশা। সঙ্গীতশিল্পী হিসাবেও তাঁর পরিচিতি ছিল। নাচেরও প্রথাগত তালিম ছিল তাঁর। বহু টিভি শো-তেও অসমের লোকনৃত্যশিল্পী অংশগ্রহণ করেছিলেন। 'জগ্গা জাসুস'-এ ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডের স্বপ্নপূরণের ইচ্ছেডানাটাকে মেলতে চাইছিলেন বিদিশা। কিন্তু, সেই ইচ্ছেডানা মেলার সুযোগই পেল না। তার আগেই চলে গেলেন বিদিশা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ঘটনাটিকে আত্মহত্যার বলেই মনে করছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যেই বিদিশার স্বামীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও, বিদিশার বাবা-র অভিযোগ তাঁর মেয়েকে খুন করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে ঘটনাটি আত্মহত্যার বলে মনে হয়।
এই ঘটনায় অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সঙ্গে কথা বলেছেন। যথাযথ পুলিশি তদন্ত যাতে হয় সে ব্যাপারে হরিয়ানা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।