করোনার মার! উৎসবের মরশুমে ভারতীয় সিনেমা ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসানের মুখে
ভারতীয় সিনেমা ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসানের মুখে
অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া উৎসব মরশুমের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রর্দশনীর বাজার। করোনা ভাইরাসের কারণে গত কয়েক মাস যাবৎ সিনেমাহলে ছবির প্রদর্শনী বন্ধ থাকার কারণে আগামী মাসের দিকেই সামান্যতম আশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ভারতীয় সিনেমা জগত। এ বছরের হতাশ আর্থিক বছরের পর যদি কিছুটা হলেও বিক্রি বাড়ে তাতেও সন্তুষ্ট ভারতীয় চলচ্চিত্র। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্চ থেকে শুরু করে গত ছ’মাস সিনেমা হলগুলি বন্ধ থাকার জন্য প্রত্যেকটি ভাষার সিনেমা সহ ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার লোকসানের মুখ দেখবে। যার মধ্যে বলিউড বা হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রায় ২ হাজার কোটির লোকসান হবে।
ছ’মাস বন্ধ সিনেমা হল
লোকসানের এই পরিসংখ্যান শুধুমাত্র এই কয়েকমাসে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ থাকার দরুণ হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ছ'মাস যাবৎ সিনেমা হল বন্ধ থাকার জন্য বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থার প্রচার (প্রাক ও পূর্ব), ছবির প্রদর্শন সবই বন্ধ হয়ে যায়। উপরন্তু বিভিন্ন ছবির মুক্তিও পিছিয়ে দিতে হয়। যে কারণে বক্স অফিস মুখ থুবড়ে পড়ে। এই লোকসানের কারণে ভারতীয় চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়েন, এমনকী অনেক প্রযোজনা সংস্থাও স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
করোনা মহামারির প্রভাব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ওপর
চলচ্চিত্র ব্যবসায়ী ও প্রদর্শনী বিশেষজ্ঞ গিরিশ জোহর বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে একেবারে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমরা এমনকী রাজস্বে হওয়া ক্ষতির কথাও বলছি না। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত পর্যটন বা আতিথেয়তা ক্ষেত্র, যেখানে ছবির কলাকুশলীরা বাইরে শুটিংয়ের জন্য গেলে তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা ও অন্যান্য দিকগুলি দেখা সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে রেডিও, টেলিভিশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বিজ্ঞাপনগুলিও।' গত সপ্তাহে রিলায়েন্স এনটেইনমেন্ট গ্রুপের মুখ্য এক্সিকিউটিভ শিবাশিস সরকার টুইট করে ভারত সরকারকে অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও কর্ম সুরক্ষার কথা জানিয়েছেন। সরকার তাঁর টুইটে বলেন, ‘ভারতে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁদের চাকরি হারাচ্ছেন বা তাঁদের বেতন কাটা হচ্ছে, তার ওপর সিনেমা হল মালিকদের কোনও উপার্জন নেই। গত ছ'মাস ধরে হলগুলি বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।'
উৎসব মরশুমে হতাশ হতে হবে ভারতীয় চলচ্চিত্রকে
অন্যান্য ব্যবসাগুলির মতো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও আসন্ন উৎসবের মরশুমে তাঁদের আশা খুব একটা উচ্চ স্থানে নিয়ে যায়নি, যদিও গত বছর অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া উৎসবের মরশুমে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি যথেষ্ট ভালোভাবে আয়ের মুখ দেখেছিল। গত বছর অক্টোবর-ডিসেম্বর উৎসবের মাসগুলিতে প্রথম ত্রৈমাসিকে বলিউড একাই ৬৫০ কোটি টাকা উপার্জন করে এবং বক্স অফিস থেকে সংগ্রহ হয় ৩,৭০০-৩,৮০০ কোটি টাকা। থ্রিলার হিট ছবি হিসাবে ওয়ার (২৯২.৭১ কোটি) ও কমেডি ছবি হাউসফুল ৪ (২০৫.৬০ কোটি) গত বছর বক্স অফিসকে লাভবান করে তুলেছিল। বর্তমান সময়ের ওপর নজর দিয়ে অক্ষয় কুমারের সূর্যবংশি ও ৮৩ দিওয়ালি ও বড়দিনের সময় মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও সিনেমার বাজার আসল বাস্তবটা জানে।
অক্টোবরে সিনেমা হল খোলার আশা
জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শেষে যদি কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়া যায় তবে অক্টোবরে সিনেমা হল খোলার আশা রয়েছে। বক্স অফিসে অধিকাংশ ছবি মুক্তির জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলে আবেদন জানিয়েছে। মঝারি ও বড় বাজেটের ছবি সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। যদিও বেশ কিছু সিনেমা ইতিমধ্যেই ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে। তবে সিনেমা হল খুললেও সেখানে দর্শকরা অপরিচিতদের পাশে বসে সিনেমা দেখতে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে সে বিষয়টি এখনও অস্পষ্ট।
দলিত ভোটব্যাঙ্কের লড়াইয়ে যুযুধান দুই শরিক, বিহারে পাসওয়ান বনাম নীতীশ