‘মাদার ইন্ডিয়া’–‘উরি’, স্বাধীনতার ৭৩ বছরে ভারতীয় সিনেমায় কীভাবে বদলেছে দেশপ্রেম দেখে নিন
‘মাদার ইন্ডিয়া’–‘উরি’, স্বাধীনতার ৭৩ বছরে ভারতীয় সিনেমায় কীভাবে বদলেছে দেশপ্রেম দেখে নিন
বলা হয় সিনেমা একটা আয়না, যা আমাদের প্রতিচ্ছবি এবং আমাদের চারপাশে যা ঘটছে তা তুলে ধরে। হয়ত সেই কারণেই সিনেমার চরিত্রের সঙ্গে আমরা নিজেদের মিল খুঁজে পাই। একই সঙ্গে সিনেমাগুলি দেশপ্রেমের চেতনা জাগাতে ও সমাজে সামাজিক পরিবর্তন আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতা দিবস আর মাত্র কিছুদিন পরেই। আর এই কয়েক বছরে সিনেমার বড় পর্দাতেও পরিবর্তন হয়েছে স্বাধীনতার চিত্র। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক গত ৭৩ বছরে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর কী কী বদল ঘটেছে ভারতীয় চলচ্চিত্রে।
১৯৫০–৬০ সাল
এই সময় সবে সবে ভারত স্বাধীন হওয়ার আস্বাদ পেয়েছে, ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সালের সময়ে ভারত সংগ্রাম করছে ঔপনিবেশিক সমস্যাগুলির সঙ্গে। যেখানে জাতির গঠনই মনোনিবেশের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, সেখানে অধিকাংশ সিনেমাই প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদ এবং সমাজতন্ত্রের গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা হতো। সে যুগের জনপ্রিয় সিনেমাগুলি হল নার্গিস-সুনীল দত্ত অভিনীত ‘মাদার ইন্ডিয়া', রাজ কাপুরের ‘আওয়ারা', দিলীপ কুমাররে ‘নয়া দৌড়', বিমল রাওয়ের ‘দো বিঘা জমিন', দিলীপ কুমার অভিনীত ‘লিডার', মনোজ কুমারের ‘উপকার' তাদের মধ্যে অন্যতম। এরপর যখন ১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধ শুরু হল তখন চেতন আনন্দের ‘হকিকত' দেশের যুব সম্প্রদায়কে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
১৯৭০–৮০ সাল
এই সময়ে ভারত অনেকটাই উন্নতি করেছে। ১৯৭০ সালের সামাজিক-অর্থনৈতিক ও সামাজিক-রাজনৈতিক আবহাওয়ার চিত্রপট উঠে এসে তখনকার সিনেমাগুলিতে। প্রতিষ্ঠান-বিরোধী চিন্তাধারা ও দুর্নীতি, অপরাধ ও দরিদ্রের মতো সামাজিক সমস্যাগুলি সিনেমায় খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই যুগের হতাশা বড় পর্দায় অ্যাঙ্গরি ইয়ং ম্যানের জন্মও দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দিলীপ কুমারের ‘গঙ্গা যমুনা', মনোজ কুমারের ‘রোটি,কাপড়া অউর মকান', অমিতাভ বচ্চনের ‘দিওয়ার' এবং ওম পুরির ‘অর্ধ সত্য' ও ‘আক্রোশ' সেই সময় যথেষ্ট জনপ্রিয় ছবি ছিল।
১৯৯০–২০০০ সালের আগে
ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে বেশিরভাগ দেশপ্রেমের ছবিতে বুক ধড়ফড় করা ও উগ্র দেশপ্রেম দেখা গিয়েছে। যার ফলস্বরূপ এখনও সকলের মনে রয়েছে গদর: এক প্রেম কথায় সানি দেওয়ালের বিখ্যাত হ্যান্ড পাম্প ওঠানোর দৃশ্যটি। এই সময় পরিচালক জে পি দত্তার নাম বর্ডার এবং এলওসি কারগিলের মতো যুদ্ধের সিনেমার সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছিল। পরিচালকের জঙ্গি সমস্যার ওপর ছবিগুলি হল ‘রোজা', ‘বম্বে', ‘দিল সে', ‘ফিজা' ও ‘মিশন কাশ্মীর'।
২০০০ সালের পর
নতুন সহস্রাব্দে ভারতীয়রা নিজেরাই গর্ব তৈরি করেছিল এবং তাদের শিকড়ে ফিরে আসছিল। এই থিমকে যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়েছিল শাহরুখ খান অভিনীত ‘স্বদেশ' ছবিতে। রাকেশ ওম প্রকাশ মেহতার ২০১৬ সালের ছবি ‘রঙ্গ দে বসন্তী'তে তুলে ধরা হয়েছে জেনারেশন ওয়াইয়ের দেশপ্রেম নিয়ে নতুন চিন্তাধারাকে। অন্যদিকে শাহরুখ খানে ‘চক দে ইন্ডিয়া' দেশপ্রেম ও অনুপ্রেরণার যথাযথ সামঞ্জস্য, যা সকলের মন জয় করেছে। আমির খানের ‘লগান'-ও প্রমাণ করেছে যে বড়পর্দায় দেশপ্রেম শুধু যুদ্ধ ও লড়াইতেই সীমাবদ্ধ নয়। হত্বিক রোশনের ‘লক্ষ্য'তেও দেখানো হয়েছে কীভাবে একজন লক্ষ্যহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি যিনি যুদ্ধক্ষেত্রের নায়কে পরিণত হন।
বলিউড অক্ষয় কুমারের রূপে মিস্টার ভারতকে পেয়ে গিয়েছে ততদিনে, যিনি প্যাডম্যান ও টয়লেট: এক প্রেম কথা ছবির মাধ্যমে সামাজিক সমস্যাগুলিকে তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে আইয়া ভাট অভিনীত ‘রাজি' এক তরুণী চরের গল্প শোনায়, যেখানে তিনি তাঁর প্রাণ নিজের দেশের জন্য ঝুঁকিতে ফেলেন। ভিকি কৌশলের ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক'ও দেশপ্রেমের চেতনাকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
২০২০ ক্রিসমাস-এ আমিরি ঝুলি খালি ভক্তদের জন্য! বলিউডের অন্দরে শোরগোল পড়ল কোন খবরে