Exclusive: KK-র প্রয়াণে শোক প্রকাশ রশিদ খান-ইমন-সোমলতা-রাঘব-লোপামুদ্রার, আয়োজকদের ব্যর্থতাকে দুষলেন শিলাজিৎ
Exclusive: KK-র প্রয়াণে শোক প্রকাশ রশিদ খান-ইমন-সোমলতা-রাঘব-লোপামুদ্রার, আয়োজকদের ব্যর্থতাকে দুষলেন শিলাজিৎ
কেকের প্রয়াণে গোটা ভারতের সঙ্গীতজগতের মতোই শোকস্তবদ্ধ বাংলার সঙ্গীত মহল। কেকে নেই, এই কথাটাই বিশ্বস করতে পারছেন না বাংলার তারকা শিল্পীরা। যাঁর গান শুনে একটা গোটা প্রজন্ম বড় হয়েছে, প্রেম নিবেদন থেকে প্রেমিকার রাগ ভাঙানো কিংবা কখনও কখনও জীবনের কঠিন মানে বোঝাতে যাঁর গান ব্যবহার করেছে অগুণিত তরুণ সেই কেকে আর নেই, তা এখনও বিশ্বাসই হচ্ছে না বাংলা সঙ্গীত জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্ররা। উসতাদ রশিদ খান, শিলাজিৎ মজুমদার, ইমন চক্রবর্তী, রাঘব চট্টপাধ্যায়, লোপামুদ্রা মিত্র, সোমলতা'র মতো সঙ্গীত জগতের মহিরূহরা করলেন শোক প্রকাশ।
উসতাদ রশিদ খান:
আমার ছেলে আরমান ওর বিরাট অনুরাগী। পাঁচ বছর যখন বয়স তখন থেকেই কেকের অত্যন্ত ভক্ত আরমান। ওই আমায় কেকে'র ফ্যান করে তুলেছিল। কেকে-এই আকস্মিক চলে যাওয়া সঙ্গীত জগৎ এবং সঙ্গীত প্রেমীদের জন্য বিরাট ক্ষতি।
শিলাজিৎ মজুমদার:
মৃত্যু নিঃসন্দেহে কষ্টাদায়ক। কিন্তু ওর চলে যাওয়াটা আয়োজকদের চূড়ান্ত অব্যবস্থার কথা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। গতকাল অনুষ্ঠানের সময়ে ও বলছিল ওর গরম লাগছে, শরীরে কষ্ট হচ্ছে। যে সমস্যার সম্মুখীন কালকে ও হয়েছিল সেই সমস্যা আমরা কলকাতার শিল্পীরা যাঁরা ২৫-৩০ বছর ধরে কাজ করছি বা স্টেজ করছি তারা প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হই। অর্গানাইজাররা বুঝতেই চায় না শিল্পিদের স্বচ্ছন্দতা প্রয়োজন। আমরা যাঁরা স্টেজে এনার্জি জেনারেট করি তারা যদি ঠিক মতো শরীরী স্বচ্ছন্দ অনুভব না করে তা হলে অনুষ্ঠান করবে কী করে। কিছু কিছু কলেজ এই বিষয়টা নিয়ে ভাবলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন জায়গা অনুষ্ঠান করতে গিয়ে আমি এই অব্যবস্থার সম্মুখীন হয়েছি। আউটডোরে যেখানে এত সংখ্যক মানুষ আসছে সেখানে ঠিক মতো অনুষ্ঠান পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োজকদের গাফিলতির কারণে শিল্পিদের এখানে এই সমস্যার সম্মুখীন প্রতিনিয়ত হতে হয়।
ইমন চক্রবর্তী:
একজন সংগীত শিল্পী হিসেবে নয়, আমি একজন ওনার ভক্ত হিসেবে বলবো, এই যে মৃত্যু তা এক অপূরণীয় ক্ষতি। ওনার এনেক কিছু করার ছিল, অনেক সময় ছিল হাতে। ওনার এই চলে যাওয়াটা আমাদের সকলের জন্যই অনেক খারাপ হল। ওনার সঙ্গে অনেক স্টেজ শো করেছি। কখনও ওনার আগে ছিল আমার পরে ছিল এই রকম। খুবই পেশাদারি একটা সৌজন্যমূলক পরিচয় ছিল। গত বছর একটি শো-এর ফাইনালে উনি বিচারক হয়ে এসেছিলেন, আমিও বিচারকদের মধ্যে একজন ছিলাম। সেখানে ওনার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। কোনও আতিশয্য নেই, ভীষণ সাধারণ এক জন মানুষ ছিলেন। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।
লোপামুদ্রা মিত্র:
এই রকম একটা মানুষের হঠাৎ করে চলে যাওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্য জনক। আকস্মিক এই মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। আমারই সমবয়সী প্রায় একজন মানুষ। এই চলে যাওয়াটা আমাদের যাঁরা আমরা বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান করি তাঁদের অনেক কিছু শেখালো। আমরা সবাই এই রকম ভাবে পারফর্ম করি, এটা এলার্মিং একটা ঘটনা। ওর সঙ্গে আগে-পরে স্টেজ শেয়ার করলেও কখনও সেই ভাবে আলাপ হয়নি। জয়ের (জয় সরকার) কাছে ওর অনেক গল্প শুনেছি।
সোমলতা আচার্য্য চৌধুরি:
কিছু মানুষের মৃত্যু সংবাদ ব্যক্তিগত স্তরে গিতে ধাক্কা দেয়। এখনও মাঝে মধ্যেই মনে হচ্ছে যে এই খবরটা যদি মিথ্যা হয়, যদি এটা একটা খারাপ স্বপ্ন হয়। স্কুল জীবনে যখনই আমায় জিজ্ঞাসা করা হতো বলিউডে কাকে ভাল লাগে আমি সব সময় দু'টো নাম নিতাম। একটি হরিহরন এবং অপরটি কেকে। আমার কাছে সব সময়ে উনি স্পেশ্যাল। সরাসরি ওনার সঙ্গে আলাপ হওয়ার সুযোগ বা সৌভাগ্য হয়নি কিন্তু কোথাও গিয়ে ওনার গান আমায় চিনিয়েছিলেন একজন মানুষ হিসেবে উনি কেমন হতে পারেন। আণরা সকলেই জানি যে একটা সময়ে আমাদের সকলকেই সেখানে যেতে হবে তবুও মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না, কেকে-রটাও তাই। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি।
রাঘব চট্টোপাধ্যায়:
খুব ভাল একজন শিল্পী চলে গেল। এইগুলো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। খখনই দেখা হয়েছে সব সময়েই হাসি মুখে। বড় শিল্পি তো ছিলই, তার থেকেও ভাল মানুষ ছিল, অত্যত্য ভদ্র এবং নম্র একজন ছিল ও।
ছবি সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম।