চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে কেকে, কেমন ছিল শিল্পীর জীবনের শেষ পল?
চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে কেকে, কেমন ছিল শিল্পীর জীবনের শেষ পল?
গানের মঞ্চে গান গাইতে গাইতেই যে জীবনের শেষ কিছু মুহূর্ত কাটিয়ে ফেলছেন সেটা সকলে বুঝেছেন যখন তাঁকে নিয়ে হোটেলের কর্মী এবং কর্তৃপক্ষ পৌঁছয় সিএমআরআই হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আদতে পৌঁছয় নিথর দেহ। কলকাতায় জীবন মঞ্চের শেষ কনসার্ট এইভাবেই শেষ হল কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ আপামর গান পাগল ভারতীয় যাঙকে কেকে বলেই চেনেন।
মঞ্চেই অসুস্থ হয়ে পড়েন
মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে গান গাইছিলেন কেকে। কিন্তু সেখানেই হঠাত অসুস্থ বোধ করেন। একসময় জোরালো স্পটলাইট বন্ধ করে দিতে বলেন। কিন্তু তারপরেও সম্পূর্ণ উচ্ছ্বাসের সঙ্গেই শেষ করেন নিজের পার্ফম্যান্স। শুধু তাই নয়, পূরণ করেন উপস্থির শ্রোতাদের একাধিক গানের আবদারও। কিন্তু এই সবই এখন শুধুই স্মৃতি আর ভিডিও হয়ে থেকে যাবে সকলের মনে আর স্যোশাল মিডিয়ার পোস্ট হিসেবে। কারণ পৃথিবীকে 'আলবিদা' জানিয়ে তিনি চলে গিয়েছেন আসল সঙ্গীতলোকে।
গাড়িতে কেমন ছিলেন গায়ক?
কিন্তু কেমন ছিল ভারতের অন্যতম সেরা ভার্সাটাইল সিঙ্গার কেকে-র জীবনের 'আখরি পল'? মধ্য কলকাতার যে অভিজাত পাঁচতারা হোটেলে যেখানে তিনি ছিলেন সেই হোটেলের ম্যানেজার জানিয়েছেন, গান করে মঞ্চ থেকে নেমেই ঠিক মত দাঁড়াতে পারছিলেন না শিল্পী। কোনও রকমে ধরাধরি করে তাঁকে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িতে সিটে আধা শোয়া অবস্থায় হোটেলের দিকে যাওয়ার সময়ই হাত পায়ে খিঁচুনি লাগতে থাকে তাঁর। এমনকি ঠান্ডায় কাঁপতে থাকেন কেকে। এই অবস্থা দেখে বন্ধ করে দেওয়া হয় গাড়ির এসি।
কেকে-র শেষ 'পল'
এরপরেই হোটেলে ফেরার পর লিফট করে ওপরে ওঠেন তিনি। তাঁর ঘর পর্যন্ত নিয়ে যান হোটেলের কর্মী। কিন্তু হোটেলের ঘরে ঢুকে সোফায় বসতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যান। এবং জানা গিয়েছে তারপরেই নাকি সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। তখনই তড়িঘড়ি ম্যানেজার ও হোটেলের কর্মীরা ধরে তাঁকে নিয়ে যান নিকটবর্তী সিএমআরআই হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই কেকে কে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
দায় কার!
কিন্তু এর পর থেকেই এই ঘটনা নিয়ে লাগার প্রশ্ন উঠছে হল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে। যা নিয়ে রীতিমত ঝড় স্যোশাল মিডিয়ায়। জানা যাচ্ছে যে নজরুল মঞ্চের একাধিক এসি ঠিক মত কাজ করে না। তের উপরে হল ক্যাপাসিটি থেকে প্রায় তিনগুন দর্শক জমা হয়েছিলেন হলে। এই নিয়ে সচ্চার হয়েছেন গায়ক রূপম ইসলামের স্ত্রী রূপসাও। একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন নজরুল মঞ্চের বেহাল অবস্থার কথা। তার উপরে অত্যধিক ভীর কমানোর জন্য কনসার্টে ব্যবহার করা হয়েছিল ফায়ার এস্টিঙ্গুইশার! কেকের বাদ্য সঙ্গতকাররা আশঙ্কা করছেন তাতেই নাকি শরীর খারাপ হয়ে গিয়েছিল গায়কের। এমনকি মাঝপথে তিনি প্রায় ১০ মিনিটের জন্য গান বন্ধও রাখেন। আর এখানেই সকলের সবথেকে বড় প্রশ্ন দেশের এমন এক শিল্পীর এই আচমকা অকাল প্রয়াণে দায় আসলে কার! তবে কারণ যাই হোক না কেন চিরদিনের জন্য এই প্রজন্মের নস্টালজিয়া নিয়ে চলে গেলেন সকলের প্রিয় কেকে। শেষ বেলায় তাই তাঁরই গানের কথা আওড়াচ্ছেন সকলে, 'যব তুমনে ক্যাহেদিয়া অলবিদা...'
গানের মধ্যে চিরনিদ্রায় কেকে, জিঙ্গেল থেকে বলিউড সফর, গায়কের জীবনী একনজরে
Recommended Video