Exclusive: জড়িয়ে অসংখ্য স্মৃতি, কিশোর কুমারের গান শুনেই গায়ক হওয়া, KK-র স্মৃতিচারণায় অমিত কুমার
Exclusive: জড়িয়ে অসংখ্য স্মৃতি, কিশোর কুমারের গান শুনেই গায়ক হওয়া, KK-র স্মৃতিচারণায় অমিত কুমার
ঘড়ির কাঁটাকে থমকে দিয়ে মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ, গোটা পৃথিবীর মানুষের কাছে তিনি 'কেকে'। তাঁর প্রয়াণে যে ক্ষতি সৃষ্টি করেছে দেশের সঙ্গীতাঙ্গনে তা অপূরণীয়। কেকে-এর অ-সময়ে চলে যাওয়ার খবর গতকাল রাতেই পেয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের অন্যতম কিংবদন্তি অমিত কুমার। বুধবার সকালে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার সময়ে কেকে-র স্মৃতিচারণা অেক নাজানা কথা তুলে ধরলেন এই মহানক্ষত্র। একই সঙ্গে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আয়োজকদের কতটা গাফিলতি রয়েছে এই ধরনের বড় অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে।
বুধবার ফোনের অপর প্রান্ত থেকে অমিত কুমার বলেন, "ছোট ভাইয়ের মতো ছিল ও। আমায় প্রচণ্ড সম্মান করতো। সব সময়ে বলতো যে বাবার গান শুনে ও অনুপ্রাণিত হয়েছে, দেখা হলে বলতো, 'আপনার বাবার গান শুনেই আমি গান শিখেছি দাদা।' ওর সব থেকে বড় গুন ছিল যে ও মাটিতে পা রেখে চলতো। অত্যন্ত নম্র এবং বিনয়ী ছিল। কারোর সম্পর্কে কোনও রকম খারাপ বলা বা কারোর বিরুদ্ধে পলিটিক্স করা-এই রকম কোনও কিছু কখনও করতে দেখেনি ওকে। নিজের কাজ নিয়ে থাকতো। সর্বদা হাসি মুখে থাকতো। আমি হই বা যেই হোক, ছোট-বড় প্রত্যেকের সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলতো। প্রত্যেকে ভালবাসতো। এত প্রাণবন্ত হাসিখুশি মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি।"
গায়ক কেকে তাঁকেও যে বারবার মুগ্ধ করেছে এ দিন সেই কথাও উল্লেখ করেন অমিত কুমার। তিনি বলেন, "সত্যিকারের একজন আর্টিস্ট ছিল ও। খুব বড় মাপের শিল্পী ছিল। ওর গান সরাসরি গিয়ে হৃদয়ে বিঁধতো, অন্তর ছুঁয়ে যেত। সুরে গান গাইতো এবং প্রতিটা নোটস ঠিক থাকতো। আমার স্ত্রী এবং বাচ্চারা ওর বড় ভক্ত।"
কেকে কলকাতায় আসছেন শুনে তাঁকে নিজের বাড়িতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অমিত কুমার। আক্ষেপের সুরে বলছিলেন, "আরও বেশি যেটা আমার খারাপ লাগছে সেটা হল আমায় প্লেনে নম্বর দিল। বললো বাড়িতে আসবে কিন্তু ওর নম্বরটাই শুধু রয়ে গেল আমার কাছে এই যা!"
কেকে-র চলে যাওয়া চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আয়োজকদের গাফলতি জানিয়েছে কিশোর কুমারের সুযোগ্য পুত্র। তিনি বলেছেন, "আমার বলতে খারাপ লাগছে যে নজরুল ম়ঞ্চের এই অবস্থা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। প্রচণ্ড গরম, এসি ঠিক মতো চলছে না, একটা অ্যাম্বুলেন্স নেই, কোনও ডাক্তার নেই। ছোট-বড় যেমন শিল্পিই হোন না কেন, তাঁকে দিয়ে যখন অনুষ্ঠান করানো হচ্ছে তখন এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা দরকার। ওর চলে যাওয়া আমাদের চোখ খুলিয়ে দিল। ওর মৃত্যু আমায় অত্যন্ত কষ্ট দিয়েছে। খুব ভাল গাইতো ছেলেটা।"
Recommended Video
বিশ্ব সঙ্গীতের মহানক্ষত্র কিশোর কুমারও প্রয়াত হয়েছিলেন আকস্মিক। তবে, বাবার মৃত্যুর সঙ্গে কেকে-র মৃত্যুর তুলনা টানতে চাননি অমিত কুমার। কারণ দু'টো মৃত্যু আলাদা। ছিল, তবে বাবা হিসেবে কিশোর কুমার তাঁর কাছে ছিলেন গুরু, অত্যন্ত ভালবাসার মানুষ তেমনই, এক জন শিল্পি হিসেবে কেকে ছিলেন তাঁর স্নেহ ধন্য, যা বারবারই উঠে এসেছে অমিত কুমারের বক্তব্যে। তাঁর কথায়, "কে কখন যাবে তা ভগবান আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে। বাবা বলতেন. "ভাগ্য আমাদের সঙ্গেই চলে, যেটা কপালে রয়েছে, সেটা হবেই।" কেউ অল্প-বয়সে চলে যায় আবার কেউ ৯০-১০০ বছরও বাঁচে, প্রকৃতি যখন যাঁকে যে ভাবে চাইবে সেই ভাবেই রাখবে। তবে, প্রতিটা মুষের উচিৎ স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া কারণ প্রথমে শরীর এবং পরে সমস্ত কিছু।"