অভিনয় প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও বলিউড যোগ্য সম্মান দেননি এই ৯ জন অভিনেত্রীকে
বলিউড যোগ্য সম্মান দেননি এই ৯ জন অভিনেত্রীকে
প্রধান চরিত্রকে ঘিরেই কোনও সিনেমার গল্প তৈরি হয়, তবে সেই গল্পকে আরও জোরদার করে তোলে সিনেমায় অভিনীত পার্শ্ব চরিত্রগুলি। এই সহযোগী চরিত্রগুলি হাইলাইট হলেও অনেকসময়ই তা প্রধান চরিত্রগুলির আড়ালে চলে যায়। বলিউডে যেমন গ্ল্যামারস হিরোইনরা রয়েছেন তেমনি রয়েছেন কিছু অভিনয় প্রতিভায় ভরপুর মহিলারাও, যাঁরা গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে নিজেদের প্রতিভা দিয়ে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। আমরা সকলেই তাঁদের কিছু আইকনিক চরিত্রে অভিনয় করতে তো দেখেছি কিন্তু অনেকেই আমরা তাঁদের নামটাও জানি না।
সুরেখা সিক্রি
হিন্দি থিয়েটারের কিংবদন্তী অভিনেতা সুরেখা সিক্রি গত ৪ দশক ধরে নিজের অভিনয় প্রতিভাকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছেন। ১৯৭৮ সালে সুরেখা তাঁর প্রথম রাজনৈতিক নাটক কিস্সা কুরশি কা-তে অভিনয় করেন। এরপর তিনি তাঁর কর্মজীবন হিন্দি টেলিভিশন কাজের মধ্য দিয়ে কাটান। কালার্সের জনপ্রিয় ধারাবাহিক বালিকা বধূ-তে তাঁর অভিনীত দাদিসা চরিত্রটি যথেষ্ট প্রশংসিত এবং তিনি শুধু নেগেটিভ চরিত্রের জন্যই শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর সম্মান পাননি তিনি ভারতীয় টেলি অ্যাওয়ার্ডে সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কারও পান। এই অভিনেত্রী শ্রেষ্ঠ সহ অভিনেত্রী হিসাবে তিনবার জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৮ সালে বধাই হো ছবির জন্য তিনি পুরস্কার পান।
লিলেটে দুবে
৬০ দশকের শেষের দিকের এই অভিনেত্রী অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের সৌন্দর্য দিয়ে যে কোনও কাউকে বোকা বানাতে পারেন। জনপ্রিয় থিয়েটার অভিনেত্রী লিলেট দুবে বলিউডের একাধিক সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। তাঁর নিজস্ব থিয়েটার সংস্থা রয়েছে, যার নাম প্রাইম টাইম থিয়েটার কোম্পানি। তিনি নিজেকে 'দুর্ঘটনাবশত অভিনেত্রী' হয়ে যাওয়ার দাবি করলেও তাঁর অসাধারণ পার্শ্ব চরিত্রগুলির ভূমিকা কিন্তু অন্য কথাই বলে। কাল হো না হো, বাগবান, মনসুন ওয়েডিং, জুবেইদা ও দ্য বেস্ট এক্সোটিক মেরিগোল্ড হোটেল সিনেমায় অভিনয় করার জন্য পরিচিতি লাভ করেছেন লিলেট। বহুমুখী প্রতিভা এই অভিনেত্রী মহেশ দত্তানি অভিনীত ইংলিশ নাটক ডান্স লাইক অ্যা ম্যান পরিচালনা করেছেন যা গোটা বিশ্বজুড়ে ৪৯৭টি শো চলার রেকর্ড রয়েছে।
রত্না পাঠক শাহ
তাঁর মজাদার ও বোল্ড অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসিত, তিনি দর্শকদের মনে সর্বদা জায়গা দখল করে থাকবেন মিসেস সারাভাই হয়ে। ১৯৮৩ সালে তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি মান্ডি। রত্না পাঠক সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে পারতেন। লিপস্টিক আন্ডার মাই বুরখা ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক পুরস্কারও।
নীনা গুপ্তা
বধাই হো সিনেমাতে এক বয়স্ক মহিলার গর্ভবতী হওয়ার দুঃসাহসিক চরিত্রে অভিনয় করে নীনা গুপ্তা বলিউডে দারুণ সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। তবে তাঁর সহযোগী অভিনেত্রী হিসাবে লড়াই এবং বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে ষাট বছর বয়সি অভিনেত্রী হিসাবে বেঁচে থাকার তার প্রচেষ্টা মাসাবা মাসাবা নামে নেটফ্লিক্স ওয়েব সিরিজের পরে প্রকাশিত হয়েছিল। এই ওয়েব সিরিজে তাঁর নিজের জীবনের গল্প বলা হয়েছে, যেখানে তিনি একজন একা মা হয়ে সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাঁর নতুন বিয়ে এবং তাঁর অভিনেত্রী হিসাবে যোগ্য সম্মান না পাওয়ার সংগ্রাম, সবই উঠে এসেছে এই সিরিজে। নীনা গুপ্তার নিজস্ব থিয়েটার গ্রুপ, নাম সহজ প্রোডাকশান রয়েছে। তিনি ফিল্মফেয়ার ক্রিটিক্স অ্যাওয়ার্ড ও সেরা অবিনেত্রী হিসাবে জাতীয় ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন।
সুপ্রিয়া পাঠক
পরবর্তী অভিনেত্রী হলেন আমাদের খুব পরিচিত হংসা বহেন! সুপ্রিয়া পাঠক ভারতীয় দর্শকদের মনে স্থান করে নিয়েছে খিছুড়ি সিনেমায় সরল, কুঁড়ে পুত্রবধূ হিসাবে। তবে এর ঠিক ১৮০ ডিগ্রি বিপরীতে গিয়ে গোলিও কা রাসলীলা-তে সুপ্রিয়া পাঠকের চরিত্র ধনকোর বা সকলের মন জয় করেছিল। তিনি এই চরিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নেগেটিভ চরিত্রের পুরস্কারও পান। ভারতনাট্যম নাচে পারদর্শী এই অভিনেত্রী ফরাসি ও মালায়ালাম সিনেমাতেও কাজ করেছেন।
শারনাজ প্যাটেল
অসম্ভব প্রতিভাবান ও অভিনয় দক্ষতায় ভরপুর এই শারনাজ প্যাটেলও বলিউডের এমন এক অভিনেত্রী যিনি সেভাবে সম্মান পাননি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। তাঁর প্রথম থিয়েটারে অভিনয় ১৯৮৪ সালে দ্য ডায়েরি অফ অ্যানে ফ্র্যাঙ্ক নাটকে। ১৯৮৬ সালে বলিউডে টিভি ফিল্ম জনম ছবির মধ্য দিয়ে বলইউডে তাঁর অভিষেক হলেও তাঁর অভিনয় প্রতিভা সেভাবে সম্মান পায়নি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। ব্ল্যাক, গুজারিশ, রকস্টার, রয় সহ অনেক ছবিতেই তাঁর সহ অভিনয় প্রশংসা পেয়েছে। তিনি সম্প্রতি কিছু ছোট ছোট ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছেন।
শিবা চাড্ডা
বলিউডের
একাধিক
সিনেমা
ও
টেলিভিশনেও
এই
অভিনেত্রী
তাঁর
প্রতিভাকে
প্রদর্শন
করেছেন
নানাভাবে।
শিবার
চরিত্র
মানেই
শহুরে
আধুনিক
মা
অথবা
গ্রামের
খুব
কথা
বলা
শ্যালিকা।
তাঁর
অভিনীত
হাম
দিল
দে
চুকে
সনম,
দম
লাগা
কে
হ্যাইসা,
বধাই
হো,
গুল্লি
বয়,
শকুন্তলা
দেবী
সহ
অন্যান্য।
মেঘনা মালিক
ভারতীয় টিভি সিরিয়াল না আনা ইস দেশ লাডো-তে আম্মাজি চরিত্র করার জন্য যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন মেঘনা মালিক। তাঁর প্রথম টেলিভিশন শো ২০০১ সালে ইয়ে হ্যায় মুম্বই মেরি জান এবং এরপর তিনি প্রথম হিন্দি ছবি নীল পর্বত কে পারে অভিনয় করেন। চলতে চলতে। কুছ না কহো, বাস্তু শাস্ত্র ইত্যাদি ছবিতে তাঁর অভিনয় দেখে দর্শক মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি সম্প্রতি মির্জাপুর ও বন্দিশ ব্যান্ডটে অভিনয় করেছেন।
শেফালি সাহ
দিল্লি ক্রাইম ওয়েব সিরিজে আইপিএস অফিসার বর্তিকা চতুর্বেদীর চরিত্রে দারুণ সাফল্য পেয়েছিলেন শেফালি সাহ, যার জন্য আন্তর্জাতিক এমিতে শ্রেষ্ঠ ড্রামা সিরিজে পুরস্কার পায এই ওয়েব সিরিজটি। ১৯৯৩ সালে শেফালি অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন এবং টিভি শো করতে শুরু করেন ১৯৯৭ সাল থেকে। তাঁর চরিত্র যেন কথা বলে। ২০১৫ সালে দিল ধড়কনে দো ছবিতে অনিল কাপুরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা পেয়েছিলেন তিনি।