বিনা বাধায় ২৪ বোতল অ্যাসিড কিনলেন দীপিকা, স্টিং অপারেশনে উঠে এল সমাজের চিত্র
ভারতের মতো দেশে মেয়েদের ওপর অপরাধের বিভিন্ন উদাহরণের মধ্যে অ্যাসিড হামলা এক ভয়ঙ্কর বাস্তব। যদিও খোলা বাজারে বহুদিন আগেই অ্যাসিড বিক্রির উপর জারি করা হয়েছিল কড়া নির্দেশিকা। অ্যাসিড হামলা রুখতেই এই নির্দেশিকা জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু সে সব আইনের তোয়াক্কা না করেই দেদার চলছে বিক্রি। সেই বিষয়কেই আলোয় নিয়ে আসলেন ছপক অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। সম্প্রতি তিনি মুম্বইয়ে এক স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে এই সমস্যার গভীরতাকে বোঝালেন।
খোলা বাজারে অবাধে অ্যাসিড বিক্রি
এই ছবিতে অ্যাসিড হামলা ও তার পরবর্তী বিষয়গুলি দেখে অনেকেই শিহরিত হয়েছেন। যদিও বাস্তব জীবনের চিত্রটা আরও ভয়ানক। দোকানদাররা অবলীলায় এই অ্যাসিড রাখছে এবং তা বিক্রিও করছেন। তার জন্য সুপ্রিম কোর্টের জারি করা কোনও নিয়মের প্রয়োজন হচ্ছে না। দীপিকা ও তাঁর ছপকের দল যৌথভাবে এই স্টিং অপারেশনের মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন যে কত সহজে বাজারে অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা রীতিমতো বেআইনি। দীপিকা ইনস্টাগ্রামে এই অপারেশনের গোটা ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। ‘কিনব না বিক্রি করব না-ছপকের সামাজিক পরীক্ষা'-এই ভিডিওতে দীপিকা নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অ্যাসিড বহু মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে, বহু স্বপ্নকে চুরমার করে দিয়েছে, আশায় ভরা জীবন নিরাশায় ভরে গিয়েছে।
দীপিকার স্টিং অপারেশন
এই ‘সামাজিক পরীক্ষা' সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দীপিকা বলেছেন, ‘এ সব বাজারে বিক্রি না হলে কেউ আক্রান্ত হতো না। কেউ অ্যাসিড ছুঁড়তে পারত না।' বার্তার শুরুতে দীপিকা বলেন, ‘কেউ যদি আপনাকে প্রোপোজ করে, আর আপনি না বলেন, তা হলে গলার জোর বাড়ান। কেউ যদি হেনস্থা করে, তা হলে আপনার অধিকারের জন্য লড়াই করুন। এরপর আপনার শরীরে অ্যাসিড ছোঁড়া হয়।' এই ভিডিওতে বিভিন্ন অভিনেতাদের নানা চরিত্রে দোকানে অ্যাসিড কিনতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, দীপিকা বসেছিলেন গাড়িতে। হাতে ল্যাপটপ। দুই ক্যামেরাম্যান ও অন্য সদস্যরা ছিলেন আলাদা করে। তাঁরা ব্যবসায়ী, ছাত্র, গৃহবধূ, মদ্যপ, গুণ্ডা সেজে অ্যাসিড কিনতে যান। একজন দোকানদার শুধু প্রয়োজনীয় কাগজ ছাড়া অ্যাসিড দিতে রাজি হননি। বাকিরা সবাই দিয়ে দেন। যা দেখে হতবাক দীপিকা। সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশকে অমান্য করে একদিনে ২৪ বোতল অ্যাসিড কিনতে সফল হন দীপিকা ও তাঁর দল।
একদিনে ২৪টি অ্যাসিড কিনেছে দীপিকার দল
১৯৯১ সালের বিষ আইনের আওতায় অ্যাসিড কেনা ও বিক্রির ওপর সুপ্রিম কোর্ট বেশ কিছু নিয়ম জারি করে। যদি আপনি সেটা না জানেন তবে জেনে নিন। ক্রেতার বয়স ১৮ বা তার ঊর্ধ্বে হতে হবে, ক্রেতার পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক, ক্রেতার বাড়ির ঠিকানা জমা দিতে হবে, বিক্রেতার অ্যাসিড বিক্রি করার লাইসেন্স থাকতে হবে এবং পুলিশকে কত অ্যাসিড বিক্রি হল তার তথ্য জমা দিতে হবে। দীপিকা এই ভিডিওর মধ্য দিয়ে সকলকে অনুরোধ করেছেন যে অবৈধভাবে অ্যাসিড বিক্রি হলে সঙ্গে সঙ্গে যেন পুলিশে খবর দেওয়া হয়।