কেদার থেকে সাহেব, সব ছবিতেই তাপস পাল যেন পাশের বাড়ির ছেলে, এমনই ছিল তাঁর অভিনয়
কেদার থেকে সাহেব, সব ছবিতেই তাপস পাল যেন পাশের বাড়ির ছেলে, এমনই ছিল তাঁর অভিনয়
প্রয়াত
অভিনেতা
তাপস
পাল।
মঙ্গলবার
ভোররাতে
বাংলা
সিনেমার
জনপ্রিয়
অভিনেতা
তথা
প্রাক্তন
তৃণমূল
সাংসদ
মুম্বইয়ে
শেষ
নিঃশ্বাস
ত্যাগ
করেন।
গত
১
ফেব্রুয়ারি
থেকে
তিনি
বান্দ্রার
একটি
বেসরকারি
হাসপাতালে
ভর্তি
ছিলেন।
হৃদরোগে
আক্রান্ত
হয়েই
মৃত্যু
হয়েছে
বলে
জানিয়েছেন
চিকিৎসকরা।
মৃত্যুকালে
তাঁর
বয়স
হয়েছিল
৬১
বছর।
তাঁর
এই
মৃত্যুতে
শোকস্তব্ধ
বাংলা
সিনেমার
জগত।
জন্ম ও শিক্ষা
হুগলির চন্দননগরে ১৯৫৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় তাপস পালের। ছোটবেলা থেকেই তাঁর অভিনয়ের প্রতি অদ্যম আগ্রহ ছিল। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মহসিন কলেজ থেকে তিনি জীববিজ্ঞানে স্নাতক হন।
অভিনয় জগতে প্রবেশ
১৯৮০ সালে তরুণ মজুমদারের ‘দাদার কীর্তি' ছবি দিয়ে তাপস পাল প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে অভিনয় জগতে আসেন তিনি। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় দর্শকদের প্রশংসার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য পরিচালদেরও নজরে আসে। এরপর তাপস পালকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘ভালোবাসা ভালোবাসা', ‘গুরু দক্ষিণা', ‘সমাপ্তি', ‘সাহেব', ‘বৈদুর্য্য রহস্য', ‘অনুরাগের ছোঁয়া', ‘আগমন', ‘বলিদান', ‘আপন আমার আপন', ‘নীলিমায় নীল', ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান' সহ বিভিন্ন বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন তাপস পাল। ১৯৮৪ সালে তাপস পালকে হিন্দি ছবি ‘অবোধ'-এ অভিনয় করতেও দেখা যায়। এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন মাধুরি দীক্ষিত। পরিচালক তরুণ মজুমদারের অধিকাংশ ছবিতেই তাপস পালকে দেখা যেত। বাংলা ছবিতে তিনি ছিলেন যেন সেই পরিচিত পাশের বাড়ির ছেলে। আজও বাঙালি দর্শক বার বার সেই ‘দাদার কীর্তি'র তাপসকে মনে করেন। ‘দাদার কীর্তি'র মতো ‘সাহেব' ছবিতেও তিনি উজ্জ্বল। বার বার এমন চরিত্র নির্বাচন করছেন, যা বাংলার তথাকথিত ‘হিরোইজম'কে ভেঙে দিয়েছে। এই স্বাভাবিক, সারল্যই ছিল তাপস পালের ইউএসপি। ‘সাহেব' ছবির জন্য তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারও পান।
অভিনয় থেকে রাজনীতি
তাপস পাল ২০০৯ সালে ভারতের সাধারণ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে টিকিট পেয়ে কৃষ্ণনগর থেকে নির্বাচিত হয়ে সাংসদ হন। এর আগে তিনি বিধায়ক ছিলেন। নানা মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে রোজভ্যালি কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতারও করে সিবিআই। শেষ পর্যন্ত অভিনয়ের চেনা জগতেও ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অসুস্থতা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে গেল সবার অলক্ষ্যে।
স্নায়ুর রোগে ভুগছিলেন তাপস পাল
পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুর রোগে ভুগছিলেন এই অভিনেতা। কথা বলা ও চলা-ফেরায় সমস্যা ছিল। ১ ফেব্রুয়ারি বান্দ্রার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন। ৬ ফেব্রুয়ারি ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হয়। সোমবার রাতে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তাপস পাল। রাত ৩টে ৩৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।