দর্শক হয়নি সিনেমা হলে, সেরা ছবি হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পেল ‘অভিযাত্রিক’, উচ্ছসিত টলিউড
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে বরাবরই সম্মানিত হয়েছে বাংলা সিনেমা। আর তার ব্যতিক্রম হল না ৬৮তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারেও। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় পুরস্কারের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ পেতেই উচ্ছ্বসিত পরিচালক শুভ্রজিৎ মৈত্র। জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে এ বছর সেরা বাংলা ছবি তাঁরই পরিচালিত 'অভিযাত্রিক'। শুধু যে সেরা বাংলা ছবির শিরোপা পেয়েছে তা তো নয়, একই সঙ্গে সেরা চিত্রগ্রাহকও জিতে নিয়ে ছবিটির সিনেমাটোগ্রাফার সুপ্রতিম ভোল।
স্বাভাবিকভাবেই বাংলা সিনেমা প্রেমীদের কাছে এটা খুবই ভালো একটি খবর। কারণ এই সিনেমা যখন মুক্তি পেয়েছিল সেই সময় দেশে করোনার তৃতীয় ওয়েভ আছড়ে পড়েছিল। সিনেমাহলেও সেভাবে দর্শক দেখতে পাওয়া যায়নি। সুতরাং এই সিনেমা নিয়ে যে আশা-প্রত্যাশা ছিল তার কোনও কিছুই পূরণ হয়নি পরিচালক-প্রযোজকদের। সেভাবে ব্যবসাও করতে পারেনি অভিযাত্রিক। কিন্তু এ বছরের জাতীয় পুরস্কারে সেরা বাংলা ছবির পালক জুড়ল তার মাথাতেই। সেরা বাংলা ছবি হিসাবে অভিযাত্রিক ঘোষণা হওয়ার পর উচ্ছসিত পরিচালক শুভ্রজিৎ। তিনি জানান একেবারে অবাক করার মতো খবর। ছবির অন্যতম প্রযোজক, পরিচালক মধুর ভান্ডারকর। জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর ফের দ্বিতীয়বার এই ছবি মুক্তি করার কথা ভাবছেন নির্মাতারা। বিদেশে ইতিমধ্যেই ২৬টি পুরস্কার পেয়েছে ছবিটি। কিন্তু দেশের এই সর্বোচ্চ সম্মান তো সবার থেকেই বেশি, জানান পরিচালক।
দারুণ খুশি এই ছবির অন্যতম অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সিনেমার পোস্টার দিয়ে পুরো টিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ছবির আর এক অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায় জানান ঘোর কাটছে না তাঁর। সবটাই যেন স্বপ্নের মতো। তিনি বললেন, 'কতটা খুশি, তা বলে বোঝাতে পারব না। ছবির সঙ্গে যুক্ত সকলকেই অভিনন্দন জানাতে চাই। অভিযাত্রিক-এ কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।' এখানে উল্লেখ্য, নায়িকা হিসেবে প্রথম ছবি দিতিপ্রিয়ার। আর তাতেই এত বড় সাফল্য।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'অপরাজিত' উপন্যাসের শেষাংশ নিয়ে তৈরি হয়েছে এই ছবি। সত্যজিৎ রায় যেখানে অপু ট্রিলজি শেষ করেছিলেন, এই ছবির চিত্রনাট্য শুরু সেখান থেকেই। ছবির মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন অর্জুন চক্রবর্তী। অপর্ণার চরিত্রে দেখা মিলেছিল দিতিপ্রিয়া রায়ের। ফিল্ম ক্রিটিকদের বেশ মনে ধরেছিল ছবিটি। সাদা-কালোয় শুট, কাশবন আর অপু-কাজলের সম্পর্কের সমীকরণ পৌঁছে দিয়েছিল কোন এক নিশ্চিন্দিপুরে দালানে। আবারও ছবিটি মুক্তি পেতে পারে।