অমিতাভ-জয়ার প্রেম কাহিনি: 'বাওরচি'র সেট-এ রাজেশ খান্নার সামনেই 'বিগ বি' কী ঘটিয়েছিলেন!
অমিতাভ-জয়ার প্রেম কাহিনি: 'বাওরচি'র সেট-এ রাজেশ খান্নার সামনেই 'বিগ বি' কী ঘটিয়েছিলেন!
এক সুদীর্ঘ ছিপছিপে পুরুষ, আর তাঁর পাশে হেঁটে চলেছেন শিফনের শাড়ি পরিহিতা এক নাতিদীর্ঘ মহিলা। সাতের দশকে শ্যুটিং এর ফাঁকে এমন দুই অভিনেতা অভিনেত্রীকে 'চুপকে চুপকে' প্রেম করতে বহু সময় দেখেছে বলিউড। একটা সময় প্রেম পরিণতি পেতেই বাড়ির গুরুজনদের চোখ রাঙানির সামনে পড়ে এই দুই অভিনেতা অভিনেত্রীকে বিয়ে করে ফেলতে হয়। এই প্রেম কাহিনির দুই চরিত্র ভারতীয় সিনেমার সুপাস্টার অমিতাভ বচ্চন ও জয়া ভাদুড়ি। যাঁরা ১৯৭৩ সালের ৩ জুন বিয়ে করেন। আজ থেকে বহু বছর আগের সেই বিয়ের পর্ব পর্যন্ত তাঁদের প্রেম কেমন করে এগিয়ে গিয়েছিল , দেখে নেওয়া যাক সেই কাহিনি।
'এক নজর'-এই জয়ার মনে ঝড় তুলেছিলেন অমিতাভ!
বহু সাক্ষাৎকারে অমিতাভ জানিয়েছেন, তাঁদের প্রেম কাহিনির শুরু 'এক নজর' ফিল্মের সেট-এ। শোনা যায়, সেই ফিল্ম সেটে অমিতাভকে দেখে অনুরক্ত হয়েছিলেন প্রথম জয়া বচ্চনই। এরপর 'গুড্ডি' ছবির সেট-এ একে অপরের সঙ্গে পরিচয় করেন এই দুই ব্যক্তিত্ব। জয়া বচ্চন বহু সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হরিবংশ রাই বচ্চনের ছেলে হিসাবে অমিতাভের প্রতি তাঁর প্রথম অনুরাগ জন্মায়। ধীরে ধীরে জয়ার মনে দাগ কাটেন অমিতাভ।
'বাওয়রচি'র সেট-এ কী ঘটেছিল?
শোনা যায়, অমিতাভের প্রতি যখন জয়া ভাদুড়ির মনে প্রেমের সঞ্চার হচ্ছে , তখন জয়ার খুব ভালো বন্ধু ছিলেন রাজেশ খান্না। 'বাওরচি' ছবির সেটে রাজেশ খান্নার সঙ্গে জয়া ভাদুড়ির বহু গল্প হত। তখনই জয়া অমিতাভের প্রতি তাঁর মানসিকতার কথা জানান রাজেশকে। শোনা যায়, এই প্রেমের পক্ষে প্রথমে খুব একটা ছিলেন না রাজেশ। তখন জয়ার সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই 'বাওরচি'র সেট এ আসতেন অমিতাভ। উদ্দেশ্য ছিল জয়ার সঙ্গে দেখা করা। একবার রাজেশ খান্নার সামনেই অমিতাভ আসেন। আর অমিতাভকে দেখে সেখান থেকে উদাসিনভাবে নাকি সরে গিয়েছিলেন রাজেশ।
লন্ডন যাত্রা ও গুরুজনদের চোখ রাঙানি
এরপর প্রেম পর্ব এগিয়ে যেতে থাকে। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় 'জঞ্জির'। সেই সময় জয়া ও অমিতাভের বন্ধুরা ঠিক করেন যে, যদি ফিল্ম হিট হয়,তাহলে সকলে মিলে লন্ডন যাবেন তাঁরা। একথা বচ্চন পরিবার ও ভাদুড়ি পরিবারে দুই তারকাই জানান। ততদিনে তাঁরা বলিউডের তামাম সুপারস্টার। তবে দুই পরিবারই সাফ জানিয়ে দেয়, বিয়ে না করে বন্ধুদের সঙ্গে লন্ডনে অমিতাভ কিছুতেই জয়াকে নিয়ে যেতে পারবেন না। অগত্যা বিয়েই একমাত্র উপায়!
ছোট করে বিয়ে হয়
বাড়ির তরফে মত জানতে পেরেই অমিতাভ নিয়ে ফেললেন জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত। জয়াও দিলেন সঙ্গ। এরপর ৩ জুন ১৯৭৩ সালে একটি খুবই ছোট অনুষ্ঠান করে অমিতাভ বচ্চন ও জয়া ভাদুড়ির বিয়ে হয়। অমিতাভ- জয়া বলেন, সেই বিয়েতে দু ই থেকে ৩ জন বন্ধুই শুধু হাজির ছিলেন। আর ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
'প্রতিটি দাম্পত্যই একটি চ্যালেঞ্জ'
এই রূপকথার বিয়ের পর্বের পরই জয়া 'বচ্চন' পদবিকে আপন করে নেন। এমনকি নিজের কেরিয়ার ছেড়ে সাংসারিক জীবনে মন দেন। ঘর আলো করে আসেন অভিষেক ও শ্বেতা। সুখের সংসার চলতে থাকে জয়া ও অমিতাভের জীবনে।
অমিতাভ-জয়া এবং 'তিনি'....
প্রসঙ্গত, অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চনের প্রেমের সম্পর্কের মাঝে আচমকাই একটা সময় থেকে রেখার নাম জড়ায়। গুঞ্জন ওঠে, রেখার সঙ্গে পরকীয়ায় মেতে ওঠেন অমিতাভ। এদিকে, রেখা জয়াকে 'দিদি' বলে ডাকতে থাকেন। একটা সময় রেখা কপালে সিঁদুরও পরেন। এমনকি জয়া-অমিতাভের পুত্রবধূ ঐশ্বর্যকে লেখা চিঠিতে রেখা নিজেকে 'রেখা মা' বলে উল্লেখ করেন। যদিও জয়ার বক্তব্য, অমিতাভ এমন কাজ কোনও দিনই করেননি, যাতে তাঁকে বা তাঁদের বিয়েকে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হয়।
সৌজন্যে:
অমিতাভের
ইনস্টাগ্রাম
পোস্ট