৫৪-তে থেমে গেল জীবনের চরইবেতি, সকলকে বাকরুদ্ধ করে অজানার পথে শ্রীদেবী, একবার ফিরে দেখা
টানা টানা চোখ, দক্ষিণী নৃত্যশৈলীতে পারদর্শী এক অভিনেত্রীর দাপটে বলিউড বক্স অফিসে তখন একটাই নাম শ্রীদেবী। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ফিল্মি দুনিয়ায় পা।
দুরন্ত ফিল্মি কেরিয়ার। বলা হত হেমামালিনীদের পরবর্তী বলিউডের রানি। টানা টানা চোখ, দক্ষিণী নৃত্যশৈলীতে পারদর্শী এক অভিনেত্রীর দাপটে বলিউড বক্স অফিসে তখন একটাই নাম শ্রীদেবী। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ফিল্মি দুনিয়ায় পা। সাদমা থেকে নিজের জাত চেনানোর যে যাত্রা শুরু হয়েছিল হিম্মতওয়ালায় তা যেন পাকাপাকি স্থায়ীত্ব লাভ করেছিল।
এরপর একে একে এসেছে বহু ছবি। যার মধ্যে মিস ইন্ডিয়া, চাঁদনি তাঁকে বলিউড দিভা-র তকমাকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। এহেন শ্রীদেবীকে স্মৃতির মণিকোঠায় একবার ফিরে দেখা।
শিশু শিল্পী হিসাবে আবির্ভাব
মাত্র ৪ বছরে 'থুনাইভান' ছবিতে শিশু শিল্পী হিসাবে অভিনয়ের যাত্রা শুরু।
বলিউড অভিষেক মাত্র ১৩ বছর বয়সে
১৯৭৫ সালে বলিউডে 'জুলি' ছবিতে শিশু শিল্পী হিসাবে কাজ শুরু।
নায়িকা হিসাবে প্রথম কাজ
১৯৭৭ ও ১৯৭৮ সালে যথাক্রমে তামিল ছবি '১৬ভায়াথিনিলে' এবং তেলেগু ছবি 'সিগাপ্পু রোজাক্কাই'-এ নায়িকা হিসাবে প্রথম কাজ।
বলিউডের নায়িকা
১৯৭৮ সালে 'ষোলা সাওন' ছবি দিয়ে নায়িকা হিসাবে কাজ শুরু।
সাদমা চিনিয়েছিল তাঁর অভিনয়ের জাত
১৯৮৩ সালে এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। মেকআপহীন এক সৌন্দর্যের নায়িকা কেমন হতে পারে বলিউড প্রত্যক্ষ করেছিল। শ্রীদেবীর বিপরীতে ছিলেন কমল হাসান।
মশালা ম্যাজিকে 'শ্রী'
দক্ষিণের এক রক্ষণশীলতার বেড়াজাল ভেঙে মশালা ছবিতেও যে তিনি সমান স্বচ্ছন্দ তা প্রমাণ করে দিয়েছিল হিম্মতওয়ালা ছবিটি। এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন জিতেন্দ্র।
৮০-র দশকে মশালা ম্যাজিক মানেই শ্রীদেবী
'হিম্মতওয়ালা'-র সাফল্যের পর বলিউডে একনাগাড়ে কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিক মশালা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শ্রীদেবী। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'তোফা' ও 'মাওয়ালি'। আর এই ছবিগুলোতে তাঁক বিপরীতে ছিলেন সে সময় ডান্স নাম্বারে সবচেয়ে সফল অভিনেতা জীতেন্দ্র।
মিঠুনের সঙ্গে প্রথম ছবি
মিঠুনের সঙ্গে শ্রীদেবীর প্রথম ছবি ছিল 'জাগ ওঠা ইনসান'। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৩ সালে। অস্পৃশ্যতা ও উচু জাত এবং নিচু জাতের ভেদাভেদ নিয়ে তৈরি এই ছবি চলচ্চিত্র সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয়েছিল.
মিঠুনের সঙ্গে পরপর ছবি
জীতেন্দ্র-র পর শ্রীদেবী যে অভিনেতার বিপরীতে সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছেন তিনি হলেন মিঠুন। 'ওয়াক্ত কি আওয়াজ', 'বতন কি রাখওয়ালে', 'গুরু'-র মতো ছবি।
মিঠুনের সঙ্গে শেষ ছবি
'গুরু' ছিল মিঠুনের সঙ্গে শ্রীদেবীর শেষ ছবি। এই ছবির সময় মিঠুন ও শ্রীদেবীর সম্পর্কে ফাঁটল ধরে বলে সে সময় খবরও চাউর হয়েছিল। ছবির একটি দৃশ্যে মিঠুনের বিরুদ্ধে জোর করে চুম্বনেের অভিযোগও এনেছিলেন শ্রীদেবী। পরে শ্রীদেবী অবশ্য সেই অভিযোগ তুলে নেন। কিন্তু, এরপর মিঠুনের সঙ্গে আর কোনও ছবিতে শ্রীদেবীকে দেখা যায়নি।
মেয়ে জাহ্নবীকে শ্রী'-র সতর্কবাণী
বড় মেয়ে জাহ্নবীকে সিনেমায় নামার আগে শ্রীদেবী শিখিয়েছিলেন এক মন্ত্র। আর সেই মন্ত্র ছিল স্টারডম-কে কেরিয়ার বানাতে হলে তার মতো হতে হবে। বিতর্ক থাকবে কিন্তু তারমধ্যে চিন্তা-ভাবনা ডুবিয়ে রাখার কোনও মানে নেই। এটাই স্টারডম-এর নিয়ম।
গ্ল্যামারকুইনের বাইরে নিজেকে খোঁজার চেষ্টা
'মম' ছবির দর্শন নাকি তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছিল। এমনটাই দাবি করেছিলেন শ্রীদেবী। মা-কেমন হয়? তাঁর সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক কেমন হতে পারে? এই ছবির কাজ শুরুর সময় মা-এর এই দর্শনটা আরও বেশি করে অনুভব করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন শ্রীদেবী।
হাওয়া-হাওয়া-ই শ্রীদেবী
বলতে গেলে এই গান বলিউডের এক কাল্ট হয়ে গিয়েছে। কবিতা কৃষ্ণমূর্তির গলায় 'হাওয়া হাওয়া-ই' গান আর শ্রীদেবী চোখের কটাক্ষ হাতে জাপানি পাখার নাড়া-চড়া- যে কোনও চলচ্চিত্র প্রেমী মানুষের এক পরম পাওয়া। যার জন্য আজও সমানভাবে ফিরে আসে মিস্টার ইন্ডিয়ার এই গানের সিকোয়েন্স। বর্তমান দিনেও আজ এই গানের সঙ্গে নিজেকে শ্রীদেবীর মতো করে যেন দেখতে চায় বহু মানুষ।