কংগ্রেসকে রাজ্যে কোনও জায়গা ছাড়বেন না মমতা, বিরোধী ‘জট’-এ বেজায় খুশি বিজেপি
কংগ্রেসকে রাজ্যে কোনও জায়গা ছাড়বেন না মমতা, বিরোধী ‘জট’-এ বেজায় খুশি বিজেপি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে বলে এসেছেন বিজেপিকে হারাতে জোটবদ্ধ হতে হবে। গড়তে হবে বিরোধী ঐক্যে। আবার তিনিই সেই ঐক্যকে হাসির খোরাকে পরিণত করছেন। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করে প্রার্থী দিতে উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলেন। সেই তিনিই আবার কংগ্রেসকে কোনও আসন ছাড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন।
কংগ্রেসে অস্বস্তি, বিজেপি বেজায় খুশি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ হেন ভূমিকা কংগ্রেসকে অস্বস্তি দিলেও প্রতিপক্ষ বিজেপিকে বেজায় খুশি করবে, তা বলাই যায়। মুখে বিজেপিকে হারানোর কথা বললেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস যে আদতে বিজেপিকেই শক্তপোক্ত করছে তা প্রতিটি পদক্ষেপে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে মমতা সোজাসাপ্টা বলে দিলেন আসন ছাড়ব না কংগ্রেসকে।
কেন আসন ছাড়ব কংগ্রেসকে? প্রশ্ন মমতার
মমতা বলেন, কেন আসন ছাড়ব কংগ্রেসকে? গত ১০ বছর ধরে কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধেচারণ করে এসেছে। তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করেছে বাংলায়। সিপিএম ও বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়াই করেছে। তাহলে কেন আসন ছাড়ব কংগ্রেসকে। বাংলায় তাদেরকে একটি আসনও ছাড়ব না। সোজাসাপ্টা ভাষণে প্রত্যক্ষ বিরোধিতার কথাই বললেন তিনি।
তাহলে বিজেপি বিরোধী ঐক্যের কী হবে?
মমতার এই বক্তব্যের পর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে বিরোধী ঐক্যের কী হবে? মমতা এ প্রসঙ্গে বলেন, বিরোধী ঐক্যে প্রয়োজন বিজেপিকে আটকাতে। এ কথা অনস্বীকার্য। রাষ্ট্রপতি ভোটের সময় আমরা বিরোধীরা আলোচনা করেছি। কিন্তু সেই ভোটের সময় আমরা বিরোধীরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু জাতীয় ক্ষেত্রের এই ঐক্যের সঙ্গে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ মিলিয়ে দিলে হবে না।
তাহলে তো বিরোধী ঐক্যে ভাঙন ধরবেই?
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন উড়ে এসেছে, বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের নেতাদের নিজের দলে নিয়ে ইউনিট খুলছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাহলে তো বিরোধী ঐক্যে ভাঙন ধরবেই? এ প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে ইউনিট খুলছি। আমরা সফল হইনি, এটা কে বলল। আমরা গোয়ায় ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি। কংগ্রেস তো বলে দেবে না আমরা কী করব আর কী করব না।
আমরা কী করব, তা বলে দেবে কংগ্রেস?
কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসকে ভেঙে তৃণমূল নতুন ইউনিট খোলায় বিজেপির সুবিধা হয়েছে। সে কথাই তো বলছে কংগ্রেস। এই প্রশ্নের উত্তরে মমতা জবাব দেন, আমরা কী করব আর কী করব না কংগ্রেস বলতে পারে না। ওরাও যান সাধারণ মানুষের কাছে। রাজনীতি করুক, কে বারণ করেছে। কেউ নিরামিষ খেলে আমাকেও যে খেতে হবে, তার তো কোনও মানে নেই! এটা যে যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তারপর মমতা বলেন, এত কংগ্রেস কংগ্রেস করছেন কেন।
বিরোধী জোট কীভাবে হবে? যা বললেন মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কংগ্রেসকে নিয়ে এই অবস্থান নেন, তাহলে বিরোধী জোট কীভাবে হবে? সেই প্রশ্নের উত্তরে মমতার জবাব ছিল, প্রত্যেক আঞ্চলিক দলের নিজস্বতা আছে। এটাই তো গণতন্ত্র। কংগ্রেস এখানে জেতার মতো জায়গায় নেই। বিরোধী ঐক্য হলে কংগ্রেসের উচিত বাংলায় কোনও আসন দাবি না করা। তেমনই কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী আমরা সেখানে আসন দাবি করব না। এই সহমতের ভিত্তিতে জোট হতে পারে।
বিরোধী জোটের মুখ নিয়েও বড় কথা মমতার
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠে আসে, তাহলে বিরোধী জোটের মুখ কে হবেন, কে হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প মুখ? সেই প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানালেন তাঁর মনের কথা। বললেন, আমি কোনও পদের জন্য আগ্রহী নই। আমি পদের জন্য কিছু করি না। আমরা আত্মত্যাগ করি, দেশের উন্নতির জন্য কাজ করি। আমরা মহিলারা, কৃষকরা, শ্রমিকদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কাজ করি। আমার বড় হওয়ার সাধ নেই। আমি বড় পদের জন্যও আগ্রহী নই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রধান বিরোধী মুখ?
২০২১-এর নির্বাচনে বিজেপিকে গোহারা হারানোর পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রধানমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যাগ লাইনে প্রচার হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রধান বিরোধী মুখ, তা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বারবার সরব হয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতেও তিনি নিজেকে তুলে ধরছেন প্রধান বিরোধী নেত্রী হিসেবে।
পদ কখনই বড় নয়, সবার আগে দেশ
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী ঐক্যের সম্মিলিত প্রার্থী খাঁড়া করতে তিনিই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি এবার নিজে মুখে বলছেন, আমার কাছে বড় পদ নয়, সবার আগে দেশ। আমার কাছে আমাদের কাছে বরাবর সবার আগে গুরুত্ব পেয়ে এসেছে দেশ। তাই দেশের স্বার্থেই তিনি বড় পদের জন্য আগ্রহী নন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচচনের আগে সাফ জানিয়ে দিলেন মমতা
তৃণমূলকে 'অনফলো’ করলেন মহুয়া! মা কালীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর তীব্র জল্পনা