বিরোধী ঐক্যকে লাইনচ্যুত করার তাস খেলছেন মমতা! ২৪-এর ভোটে পাল্লাভারী বিজেপিরই
বিরোধী ঐক্যকে লাইনচ্যুত করার তাস খেলছেন মমতা! ২৪-এর ভোটে পাল্লাভারী বিজেপিরই
২৪-এর ভোটে ঘুরিয়ে বিজেপিকেই সমর্থন করছে তৃণমূল। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছে কংগ্রেস। গোয়া বিধানসভা নির্বাচন থেকেই এই অভিযোগটা উঠছিল। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর সেই অভিযোগকে চরমে তুলে দিল। অভিযোগ উঠছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে বিরোধী ঐক্যকে লাইনচ্যুত করার তাস খেলছেন।
বিরোধী ঐক্যকে বেলাইন করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন মমতা!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন। তাঁর চারদিনের সফরে তিনি একটিবারও বিরোধী দলগুলির কোনও নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। বিরোধী ঐক্যের হয়ে কোনও কথা বলেননি। চারদিনের তিনদিন তিনি ব্যস্ত ছিলেন মোদী-সাক্ষাতে। তিনি ইচ্ছা করলেই ব্যালেন্স করতে পারতেন তাঁর দিল্লি সফরকে। কিন্তু তিনি তা করেননি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ আর তৃণমূল সুপ্রিমো হিসেবে তিনি বিরোধী ঐক্যকে আলাদা করে দৃঢ়তা দিতেই পারতেন তাঁর এই সফরে। উল্টে তিনি বিরোধী ঐক্যকে বেলাইন করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ।
২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে অন্য সমীকরণের জল্পনা
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবারের সফর মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং নীতি আয়োগ ও স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব নিয়ে জোড়া বৈঠকে সীমাবদ্ধ ছিল। তিনি কোনওভাবেই সোনিয়া গান্ধী বা অন্য কোনও বিরোধী নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিরোধী ঐক্য দৃঢ় করার কোনও বার্তা দেননি। ফলে মমতার এই সফর আসন্ন ২০২৪ লোকসভা ভোটের আগে অন্য সমীকরণের জল্পনা উসকে দিয়েছে।
২৪-এর ভোটে তিনি ঘুরিয়ে বিজেপিকেই সমর্থন করছেন মমতা
বাংলা থেকে সিপিএম ও কংগ্রেস মোদীর সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎকে সেটিংয়ের রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেছে। রাজ্যের মমতার তৃণমূল যে সঙ্কটে পড়েছে সেই দুর্নীতি নামক দানবকে চাপা দিতেই তিনি দিল্লি সফর করছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। উল্টোদিকে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের সম্মিলিত প্রার্থী মার্গারেট আলভা তৃণমূলরে নাম না করেই বোমা ফাটিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিরোধী ঐক্যকে লাইনচ্যুত করার তাস খেলছেন মমতা! ২৪-এর ভোটে তিনি ঘুরিয়ে বিজেপিকেই সমর্থন করছেন।
বিজেপির প্রকৃত বিরোধী সেজে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার তাস মমতার
গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঠিক একইরকমই অভিযোগ উঠেছিল কংগ্রেসের তরফে। গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের তিন মাস আগে হঠাৎ করে তৃণমূল পা রাখে গোয়ায়। আর পা রেখেই তাঁরা কংগ্রেস ভাঙতে শুরু করে। কংগ্রেসের একাংশ নেতা-নেত্রীকে দলে নিয়ে তাঁর বিজেপিকে হারানোর বার্তা দিতে শুরু করে। বলে তাঁরাই প্রকৃত বিজেপি-বিরোধী। কংগ্রেস বিজেপি বিরোধিতায় ব্যর্থ।
কংগ্রেসকে ভেঙে বিজেপির জয়ের পথ সুগম করে দিচ্ছে তৃণমূল
এভাবেই কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে তাঁরা বিজেপির জয়ের পথ সুগম করে দেয়। কংগ্রেসের ভোট তৃণমূল সামান্য হলেও কেটে নেওয়ায় বিজেপির সুবিধা হয়। হাওয়ার বিরুদ্ধে সামান্য মার্জিনে বিজেপি এই ভোটে জিতে ফরে গোয়ার ক্ষমতায় আসে। এইভাবে একইরকম চেষ্টা তারা শুরু করেছে ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও। ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও তারা কংগ্রেসকে ভেঙে বিজেপির প্রকৃত বিরোধী হয়ে ওঠার নামে তাঁদের সুবিধা করে দিচ্ছে।
২০২৪-এর নির্বাচনে বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সাজতে চাইছে তৃণমূল
তৃণমূল কংগ্রেস একুশের নির্বাচনে বাংলায় বিজেপিক পর্যুদস্ত করার পর থেকেই ভাবছে তাঁরা ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। মা্ত্র একটি রাজ্যে প্রতিনিধিত্ব করেই তাঁরা নাকি হারিয়ে দেবে বিজেপিকে। সেই লক্ষ্য নিয়ে ভিনরাজ্যে সংগঠন গড়তে মন দেয় তৃণমূল। প্রথম টার্গেট হয় ত্রিপুরা। ত্রিপুরায় যথারীতি কংগ্রেস ভেঙে ফের ইউনিট গড়ে তোলে। পুরসভা নির্বাচনে খানিক প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হলেও উপনির্বাচনে ফের মুখ থুবড়ে পড়ে।
বিরোধী ঐক্য গড়তে গিয়ে কংগ্রেসক বিচ্ছিন্ন রাখার পরিকল্পনা
আবার মেঘালয়ে তাঁরা কংগ্রেসের বিধায়কদের ভেঙে নিয়ে রাতারাতি বিরোধী দল হয়ে যায়। সেখানেও তাঁরা কংগ্রেসের জায়গায় নিজেদেরকে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ বলতে শুরু করে। কিন্তু কংগ্রেস মনে করে, এসব কিছু নয়, বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই তৃণমূল কংগ্রেস এসব করে চলেছে। তেমনই ২০২৪-এর আগে বিরোধী ঐক্যকে ঘেঁটে দিতে চাইছে তৃণমূল। কংগ্রেসকে বিচ্ছিন্ন করে বিরোধী দলকে ভাঙিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে তোলা তারই নামান্তর বলে মনে করছে কংগ্রেস।
২০২৪-এর আগে বিজেপিরই পাল্লাভারী হচ্ছে মমতার পরিকল্পনায়
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার দিল্লি সফরে এসে বিজেপি বিরোধী সার্বিক ঐক্য গঠন নিয়ে এমনই নিশ্চুপ থেকেছেন যে, বিরোধীরা নানা কথা বলতে শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি বিরোধিতা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আদতে তিনি বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস ও তাদের সহযোগীরা। ফলে ২০২৪-এর আগে বিজেপিরই পাল্লাভারী হতে শুরু করেছে। বিরোধীদের মধ্যে প্রকট হয়ে উঠেছে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব।
হেঁটেই এসএসকেএমে ঢুকলেন অনুব্রত, মেডিকেল বোর্ডের স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরেই কী সিবিআই ডেরায় কেষ্ট?