মমতা কি পারবেন কামরাজ-মডেল প্রয়োগ করতে, ভাবমূর্তি ফেরাতে রদবদল যখন আসন্ন
মমতা কি পারবেন কামরাজ-মডেল প্রয়োগ করতে, ভাবমূর্তি ফেরাতে রদবদল যখন আসন্ন
নিয়োগ দুর্নীতি নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে বিপুল ম্যান্ডেড নিয়ে ক্ষমতায় আসা তৃণমূল সরকারকে। তার জেরে এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে দেওয়া হতে পারে পূর্ণ মন্ত্রিসভা। কামরাজ-প্ল্যান প্রয়োগ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলতে পারেন সবাইকে ইস্তফা দিতে। তারপর তিনি ফের গঠন করতে পারেন পূর্ণ মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভা ভেঙে দেবেন মমতা!
দলের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়। যকের ধন মিলেছে তাঁরা বাড়ি ও ফ্ল্যাট থেকে। এরপর যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় পরিবর্তনের সরকার গঠনের প্রথম দিন থেকে মন্ত্রী রয়েছেন, তাঁকে সরিয়ে দিতে হয়েছে। শুধু সেখানেই ক্ষান্ত না থেকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল হতে পারে। প্রয়োজনে পূর্ণ মন্ত্রিসভাই ভেঙে দেওয়া হতে পারে। প্রয়োগ করা হতে পারে কামরাজ মডেল।
কামরাজ মডেল কী
কামরাজ মডেল প্রয়োগ হয়েছিল ৫৯ বছর আগে। অর্থাৎ ১৯৬৩ সালে। তখন কেন্দ্রে সরকার জওহরলাল নেহরুর। টানা তিনবার জেতার পর ১৯৬৩ সালে মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নেহরু। শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা নয়, অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সংগঠনকে পুনর্গঠনে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাদ্রাজের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কামরাজ। সেইমতো লালাবাহাদুর শাস্ত্রী-সহ ৬ কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও ৬ রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রীদের সরিয়ে নেহরু তাঁদের সংগঠনের কাজে নিয়োগ করেছিলেন।
কামরাজ-মডেল কি প্রয়োগ বাংলাতেও
এখন প্রশ্ন সেই কামরাজ মডেল কি প্রয়োগ করা হবে বাংলাতেও। নাকি নিছকই মন্ত্রিসভায় রদবদল করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত তাঁদের জায়গায় নতুন কাউকে দায়িত্ব দেবেন? সোমবারই মন্ত্রিসভা রদবদল করতে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সাধন পাণ্ডে ও সদ্য অপসারিত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্থলাভিষিক্ত কে হন, তা নিয়েই চর্চা চলছে। আর তিনি যদি নতুন করে সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভা ভেঙে পূনর্গঠন করেন, তখন কে কোন দফতর পান সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি থাকবে।
কারা আসতে পারেন নতুন মন্ত্রিসভায়
মমতার মন্ত্রিসভার রদবদলে শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকজনের নাম। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম অবশ্যই বাবুল সুপ্রিয়র। বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি থেকে তৃণমূলে এসে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া বালিগঞ্জ বিধানসভা আসনে। তাঁর মন্ত্রিত্বে আসার সমূহ সম্ভাবনা। আর আসতে পারেন তাপস রায়। শোনা যাচ্ছে পার্থ ভৌমিকের নামও। এখন দেখার কোন কোন বিধায়ককে এবার মন্ত্রিসভায় দেখা যায়। শুধু মন্ত্রিসভায় অনুপস্থিত তিনজনই নয়, আরও কয়েকজন মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন পারফরম্যান্সের কারণে।
দুটি সম্ভাবনায় কোন দিকে পাল্লা ভারী
দুটি সম্ভাবনাই রয়েছে। প্রথম সম্ভাববনা অবশ্যই মন্ত্রিসভায় রদবদল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁরা নেই তাঁদের দফতর ছাড়াও পুরনো মুখ কিছু সরিয়ে নতুন মুখকে সুযোগ করে দিতে পারেন। আর দ্বিতীয় সম্ভাবনা হল মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে ভাবমূর্তি ফেরাতে পুরনো ও নতুনের সংমিশ্রণে নতুন মন্ত্রিসভা গড়ত পারেন তিনি। কামরাজ মডেল প্রয়োগ করে নেহরু যেমন লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে পর্যন্ত সরানোর সাহস দেখিয়েছিলেন, মমত কি পারবেন ফিরহাদ হাকিম বা অরূপ বিশ্বাসদের মতো কাউকে সরিয়ে দিতে।
রাজ্যের মন্ত্রিসভার বর্তমান অবস্থান
রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রিসভায় মুখ্যমন্ত্রী-সহ ৩৯ জন মন্ত্রী রয়েছেন। তার মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী ২০ জন। আর ১০ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। বাকি ৯ জন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর পর তাঁদের জায়গায় কাউকে নেওয়া হয়ন মন্ত্রিসভায়। সম্প্রতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরানো হয়েছে তিনটি দফতররে মন্ত্রিত্ব থেকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে পরেশ অধিকারীকে সরানোর দাবিও জোরদার হয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে জোর চর্চা চলছে। সোমবারই মন্ত্রিসভার রদবদল চূড়ান্ত হবে।
'টাকা আমার নয়, সময় এলেই বোঝা যাবে' জোকা ESI-এ ঢোকার পথে বিস্ফোরক দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের