চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৬.৭৩% কমল নতুন চাকরির সম্ভাবনা, বলছে সমীক্ষা
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৬.৭৩% কমল নতুন চাকরির সম্ভাবনা, বলছে সমীক্ষা
করোনার ক্রমবর্ধমান সঙ্কটের জেরে পুনরায় লকডাউনের পথে দেশের বিভিন্ন রাজ্য। আর এরই মাঝে চাকরি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট স্কীকির সমীক্ষায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। সমীক্ষা অনুযায়ী, আগের অর্থবর্ষের প্রথম তিনমাসের তুলনায় বর্তমান অর্থবর্ষের প্রথম তিনমাসে নতুন চাকরির সম্ভাবনা কমেছে প্রায় ৬.৭৩%।
কিছু কিছু ক্ষেত্র ছাড়া চাকরি অমিল
বর্তমান অবস্থায় চাকরির বেহাল দশা হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে করোনার মাঝেও চাকরির সন্ধান রয়েছে। কর্পোরেট সেক্টরে আইটি ডিজাইনার, ইঞ্জিনিয়ার, সেলস, ম্যানেজমেন্ট, এইচআর ও অ্যাডমিনের চাহিদা লকডাউনের মাঝেও তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় ছিল। যদিও চাকরি ছাঁটাই ও মাইনে কমতির চোখরাঙানির মাঝে স্কীকির এই সমীক্ষা ভয় ধরিয়েছে সমস্ত ক্ষেত্রের চাকুরীপ্রার্থীদের মনে।
পুরোনো পন্থা ছেড়ে নতুনের দিগন্তে চাকরি বাজার
স্কীকির সহ-প্রতিষ্ঠাতা অক্ষয় শর্মা জানিয়েছেন, "কোভিডের জেরে কিছু ক্ষেত্রে যেমন ব্যবসায় লোকসান হয়েছে, তেমনই আবার কিছু ক্ষেত্রের উপর কোনো প্রভাবই পড়েনি, বরং সেই সকল বিভাগে নতুনরকমের চাকরির সন্ধান বেড়েছে। করোনা যেভাবে জীবনের সাথে জুড়ে গেছে, তেমনই এইরকম ধরনের নতুন চাকরিই আগামীদিনে স্বাভাবিক বলে পরিগণিত হবে।" তিনি আরও জানান, নিয়োগকারী সংস্থাগুলি এমন কর্মী খুঁজছেন যাঁরা ডিজিটালভাবে শিক্ষিত, অর্থাৎ অনলাইনে প্রেজেন্টেশন সহ অন্যান্য কর্পোরেট মিটিং সামলাতে দক্ষ। এছাড়াও প্রোগ্রামিং ভাষা যেমন জাভাস্ক্রিপ্ট, ওরাকল, এইচটিএমএল বা নোড.যেএস যাঁরা জানেন, তাঁরা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে দূরে বাড়িতে সুরক্ষিত থেকেই চাকরি করতে পারছেন।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের যুগে বাড়ছে বাড়ি থেকে চাকরির সুযোগ
কোভিডের লাগাতার আক্রমণের মাঝে গা বাঁচিয়ে চলার একনাটর পন্থা হচ্ছে বাড়ি থেকে কাজ বা 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম'। আর এখানেই দাম বাড়ছে ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞদের। ডিজিটাল মার্কেটিং সংক্রান্ত সংস্থা জেফেনোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কমল করনাথ জানিয়েছেন, "এই সময়ে যাঁরা দক্ষতার খোঁজ করছেন, তাঁরা দেখছেন কিভাবে এবং কত দ্রুত একজন প্রার্থী ডিজিটাল মাধ্যমের সাথে মানিয়ে নিতে প্ৰস্তুত। এছাড়াও যেসকল সংস্থার অনলাইনে কোনরূপ উপস্থিতিই ছিল না, তারাও লকডাউনের জন্য বুঝেছে যে ডিজিটাল মার্কেটিংই এখন একমাত্র পন্থা।"
অপর একটি সমীক্ষাতেও একইরকম ফলাফল
কিছুদিন পূর্বে চাকরির অনুসন্ধানকারী সংস্থা Naukri.com-র তরফে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। Naukri.com-র সমীক্ষার মতে এখনও পর্যন্ত অন্তিম বর্ষের ৬৬ শতাংশ পড়ুয়া চাকরিতে যোগদানের কোনও অফারই হাতে পাননি। একইসাথে ৪৪ শতাংশ পড়ুয়া চাকরির অফার পেলেও করোনা সঙ্কটের জেরে তাদেও কর্মক্ষেত্রে যোগদানের তারিখ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধোঁয়াশায়। ফলত স্কীকির এই নতুন সমীক্ষায় দুশ্চিন্তা যে বাড়ল বই কমল না, তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না।
এপ্রিল ও মে মাসে চাকরির সম্ভাবনায় উল্লেখযোগ্য পতন
স্কীকির রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, করোনার আগের পরিস্থিতির তুলনায় এপ্রিল ও মে মাসে নতুন চাকরির সম্ভাবনা প্রায় ৬০% কমেছে। এদিকে লকডাউনের বিধিনিষেধ লঘু করার জেরে মে মাসের তুলনায় জুন মাসে নতুন চাকরির সম্ভাবনা বাড়ে মাত্র ৩৩%। যদিও বছরের দিক থেকে দেখতে গেলে প্রায় ৪৪% ঘাটতি এখনও বিদ্যমান। নতুন চাকরির সংখ্যা কমার এই প্রক্রিয়া শুরু হয় মার্চ মাসে, এদিকে করোনার গ্রাস ফের বাড়তে থাকায় ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য পুনরায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ফের মার্চের অবস্থা ফেরতের সম্ভাবনা বাড়ছে। ফলত নতুন প্রজন্মের চাকুরে জীবনের ভবিষ্যৎ কি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
৬ বছর ধরে চিনকে খুঁচিয়েছে মোদী সরকার, জেরেই বেজিং ফুঁসে উঠেছে, ভিডিও বার্তায় তোপ রাহুলের