কীভাবে করোনা লকডাউন ভারতের চাকরির বাজার ধ্বংস করেছে, দেখুন পরিসংখ্যানে
বেকারত্বের জ্বালা বড় মাত্রায় টের পেতে শুরু করেছে শহুরে ভারত। বিভিন্ন সেক্টরগুলি ইতিমধ্যেই ধুঁকছে। আর অনেক সেক্টরে এখনও বিপর্যয় নেমে আসা বাকী রয়েছে। হাজারে হাজারে তরুণ ভারতীয় চাকরি হারাচ্ছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই খুব কম সময়ের নোটিশে চাকরি থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবং পরবর্তী সময়ের ন্যূনতম নিশ্চয়তাটুকু তাঁদের দেওয়া হচ্ছে না। প্রযুক্তি, ব্যাঙ্কিং, ফিন্যান্স এই ক্ষেত্রগুলি কিছুটা উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। এইরকম আর্থিক ও সামাজিক দুর্যোগের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা অত্যন্ত নির্মম ও নিষ্ঠুর।
রেস্তরাঁ শিল্প
রেস্তরাঁ বা এই ধরনের পরিষেবা শিল্পে করোনা ভাইরাস আঘাত হানার আগে ৭৩ লক্ষ মানুষ কাজ করতেন। তবে ইতিমধ্যে কাজ চলে গিয়েছে কুড়ি লক্ষ মানুষের। সমীক্ষা বলছে করোনা ভাইরাস পরবর্তী সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া দশটি রেস্তরাঁর মধ্যে চারটি আর কোনওদিনই খোলার মতো অবস্থায় নেই।
মিডিয়া ও বিনোদন
মিডিয়া ও বিনোদন জগতে করোনা ভাইরাসের হামলার আগে ৬০ লক্ষ মানুষ কাজ করতেন। তার মধ্যে কাজ হারিয়েছেন বেশ কয়েক লক্ষ। মনে করা হচ্ছে যেহেতু এই মুহূর্তে বিজ্ঞাপন থেকে রাজস্ব আসা প্রায় বন্ধ ফলে ব্রডকাস্টিং জগতে অন্তত ৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই হবে। রেডিও জগতে ৮ থেকে ১০ শতাংশ এবং প্রিন্ট মিডিয়াতেও একই পরিমাণ কর্মী কাজ হারাতে পারেন।
স্টিল ইন্ডাস্ট্রি
স্টিল ইন্ডাস্ট্রিতে আগে কুড়ি লক্ষ মানুষ কাজ করতেন। সেখানেও কয়েক লক্ষ মানুষ কাজ হারাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। সমীক্ষা বলছে, যদি রিয়েল এস্টেট শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে না পারে তাহলে তার মস্ত বড় প্রভাব পড়বে স্টিল সেক্টরে।
ইন্টারনেট ইন্ডাস্ট্রি
ইন্টারনেট ইন্ডাস্ট্রিতে আগে চার লক্ষ মানুষ কাজ করতেন। ইতিমধ্যে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মানুষের কাজ গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে আগামিদিনে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আরও হাজার হাজার মানুষ কাজ হারাবেন।
রিয়েল এস্টেট শিল্প
রিয়েল এস্টেট শিল্পে করোনা ভাইরাসের হামলার আগে সাত কোটি মানুষ কাজ করতেন। ইতিমধ্যে কাজ হারাতে হয়েছে প্রায় দেড় কোটি মানুষকে। এই মুহূর্তে চাহিদা একেবারে তলানিতে। বিনিয়োগ মানুষ পিছিয়ে দিচ্ছেন। এই ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি কাজ করেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এবং তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি
ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিতে সাড়ে ৫ কোটি মানুষ কাজ করতেন। তবে ইতিমধ্যে কাজ গিয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষের। যদি পর্যটন ব্যবসা এভাবে ধাক্কা খায় তাহলে আগামিদিনে আর কারওরই জীবন-জীবিকা বলে কিছু থাকবে না এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার আরও একটি কারণ হচ্ছে, লকডাউন উঠে যাওয়ার পরও মানুষ তার পরের কয়েকমাস খুব বেশি পর্যটনে যাবেন না। যা এই শিল্পের জন্য অত্যন্ত মারাত্মক হতে চলেছে।
এডুকেশন ইন্ডাস্ট্রি
এডুকেশন ইন্ডাস্ট্রিতে করোনা ভাইরাসের হামলার আগে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ কাজ করতেন। ইতিমধ্যে কাজ হারিয়েছেন ৪৫ লক্ষ মানুষ। যদি অনলাইন এডুকেশন আরো রমরমিয়ে চলতে শুরু করে তাহলে আরও কয়েক লক্ষ মানুষ কাজ হারাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
টেলিকম সার্ভিস ও ম্যানুফ্যাকচারিং
টেলিকম সার্ভিস ও ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে আগে ২০ লক্ষ মানুষ কাজ করতেন। ইতিমধ্যে কাজ হারিয়েছেন ৭০ হাজার মানুষ। যদি এই দশা চলতে থাকে তাহলে আগামিদিনে এই সেক্টরের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন হতে চলেছে।