করোনা সঙ্কটের প্রভাব, ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৮ কোটি ভারতীয় শ্রমিক পেশা বদলাতে বাধ্য হবেন
২০২০ সালের করোনা ভাইরাস মানুষের জীবনকে আমূল পরিবর্তন করে তুলেছে। এই মহামারি একদিকে যেমন দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলেছে তেমনি শ্রম বাজারেও এর প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদি। শুক্রবার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৮ কোটি ভারতীয় শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে নতুন চাকরি বেছে নেবেন।
খুচরো, খাদ্য পরিষেবা, আতিথেয়তা এবং অফিস প্রশাসনের স্বল্প বেতনের শ্রমিকদের উপর এর প্রভাব 'অস্বচ্ছল’ হবে বলে মনে করেন ম্যাকিনসের গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের সমীক্ষা। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে সংস্থাগুলি কাজের নতুন মাত্রায় - শারীরিক সান্নিধ্যে সাড়া দিতে বাধ্য হয়েছে বলে মহামারিটি শ্রম বাজারকে ব্যাহত করেছে।
এই রিপোর্টে উঠে এসেছে, কোভিড–১৯–এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব শ্রমিক চাহিদা, কর্মসংস্থানের মিশ্রন ও কর্মদক্ষতার ওপর ভারত সহ আটটি দেশের ওপর প্রভাব ফেলেছে। দূরবর্তী কাজ, ই–কমার্সের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া ও ভার্চুয়াল সংযোগ,অটোমেশনের দ্রুত স্থাপনা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে গ্রাহক আচরণ ও ব্যবসার মডেলে তিনটি বড় বদল আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থনীতিতে চাকরির পরিবর্তন ঘটাবে এবং ১০ কোটিরও বেশি শ্রমিককে নতুন একটি চাকরি খুঁজতে হবে, যার মধ্যে ১কোটি ৮০ লক্ষ ভারতে থাকেন।
রিপোর্ট বলছে, করোনা সঙ্কটে ঘেঁটে গেছে শ্রমের বাজার। কোভিড বিধি মাথায় নতুনভাবে কাজ শুরু হয়েছে সরকারি, বেসরকারি সংস্থায়। লোকসান ঠেকাতে ছাঁটাইও হয়েছে প্রচুর। বদলে গেছে কর্মস্থানের কাঠামো। বহু সংস্থাতে এখনও চলছে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। অতিমারী পরিস্থিতিতে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। লকডাউনের সময়ে যে সব পরিযায়ী শ্রমিকরা শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে এসেছিলেন, তাঁরা আর কাজের সন্ধানে ফিরে যাচ্ছেন না শহরে। ম্যাকিনসের রিপোর্ট বলছে, আগে কম বেতনের ছোটখাটো যা কাজ পাওয়া যেত আগে, অতিমারী পরবর্তী সময়ে সেসব আর পাওয়া যাবে না।
মূলত খুচরো বাজার, খাদ্য পরিষেবা এবং পর্যটন শিল্পেই এই ধরনের অল্প বেতনের কাজের সন্ধান মিলত। সেই সব কাজই ছিল কোটি কোটি শ্রমিকের রুজিরুটি। এই সব ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ চলে গেলে পেশা বদল করতে বাধ্য হবেন তাঁরা, জানিয়েছেন ম্যাকিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের সুজান লুন্দ।