দিলীপ কেন বাংলা-ছাড়া হচ্ছেন! তবে কি মাশুল গুণছেন সোজা কথা সোজাভাবে বলার
দিলীপ ঘোষ রাজ্য বিজেপির সফলতম সভাপতি? তবু তাঁকে কেন ‘রাজ্য-ছাড়া’ হতে হচ্ছে? কেন বাংলার অভিভাবকত্ব না দিয়ে তাঁকে পাঠানো হচ্ছে ভিনরাজ্যে? ঘরে-বাইরে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
দিলীপ ঘোষ রাজ্য বিজেপির সফলতম সভাপতি? তবু তাঁকে কেন 'রাজ্য-ছাড়া' হতে হচ্ছে? কেন বাংলার অভিভাবকত্ব না দিয়ে তাঁকে পাঠানো হচ্ছে ভিনরাজ্যে? ঘরে-বাইরে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশের ধারণা, সোজা কথা সোজা ভাবে বলেন বলেই, তাঁকে মাশুল দিতে হচ্ছে!
বাংলায় তাঁকে নিষ্ক্রিয় করতেই ভিনরাজ্যে!
বিরোধীদের চাঁছাছোলা আক্রমণ তো বটেই, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনাতেও তিনি পিছপা হন না। সোজা কথা সোজাভাবে বলে দেন। বঙ্গ বিজেপির ভালো-মন্দ নিয়েও তিনি তেমনই প্রতিক্রিয়া দেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাঁকে আট রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মূলত বাংলায় তাঁকে নিষ্ক্রিয় করতেই!
অপ্রিয় সত্য বলার খেসারত দিচ্ছেন দিলীপ
বরাবরই খোলামেলা কথা বলতে ভালোবাসেন দিলীপ ঘোষ। রাখঢাক করেন না। স্পষ্ট কথা স্পষ্ট ভাবে বলেন। কিন্তু অপ্রিয় সত্য বলার খেসারত তো দিতে হয়ই। তাঁর অনুগামীদের মধ্যেই একাংশ মনে করছেন, দাদার স্পষ্টবাদী মনোভাবের জন্য তাঁকে বাংলা থেকে সরিয়ে ভিন রাজ্যের দায়িত্বে পাঠানো হচ্ছে।
সোজাসাপ্টা কেন্দ্রীয় বিজেপির সমালোচনাও
দিলীপ ঘোষ সোজাসাপ্টা কেন্দ্রীয় বিজেপির সমালোচনা করেছিলেন। জনপ্রিয় এক চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন যতদিন কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত প্রদেশ থেকে হত, ততদিন বেঁচেছিল কংগ্রেস। যখনই দিল্লি চলে গেল, কংগ্রেস শেষ। বিজেপির ক্ষেত্রে বাংলা থেকে দায়িত্ব সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল দিল্লিতে। বাংলার নেতাদের উপর ভরসা না করে ভরসা করা হল ভিনরাজ্যের নেতাদের। তাই যা ফল হওয়ার সেটাই হয়েছে।
দিলীপের সোজাসাপ্টা পরামর্শ
দিলীপ ঘোষ সমালোচনা করেছিলেন শীর্ষ নেতৃত্বের। তিনি বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে অনেকে ভেবেছিলেন ২০০ পেয়েই গিয়েছি। তা নিয়ে দিলীপের সোজাসাপ্টাপরামর্শ ছিল, স্বপ্ন দেখাতে হয়, স্বপ্নে মশগুল হতে নেই। বিজেপির স্বপ্নে মশগুল হয়েই পদস্খলন হয়েছে। তাই ২০১৯-এর ফল ধরে রাখতে পারেনি ২০২১-এ।
পার্টিকে যাঁরা দাঁড় করালেন, তাঁরাই ব্রাত্য
রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সময়ের আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অপসারিত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর প্রচারের কথা। পার্টিকে যাঁরা দাঁড় করালেন, এত বছর কাজ করার পর তাঁদের অভিজ্ঞতা যদি পার্টি কাজে না লাগায় তাহলে পার্টির ক্ষতি হবেই। পার্টি কর্মীরাও বিমর্ষ হয়ে পড়বেন।
নব্যদের গুরুত্ব দিতে গিয়ে দিলীপরা ব্রাত্য
মুকুল রায়কে দলে নেওয়া নিয়েও তিনি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অনেক কথা বলেছেন। বিজেপির মুকুল প্রীতি নিয়েও তিনি অনেক কথা বলেছেন। আবার বর্তমানে যে অনভিজ্ঞদের দিয়ে দল চলছে, তার সমালোচনাও করেছেন। আবার অর্জুনের ঘর ওয়াপসির পর তিনি বলেছেন, দলে নব্যদের গুরুত্ব দিতে গিয়ে আদিনেতারা ঘরবসতি হয়ে গিয়েছে। তার ফল ভুগতে হয়েছে।
'বাংলা-ছাড়া' হওয়ার পর কতটা সক্রিয় থাকবেন
স্বাভাবিকভাবেই দিলীপের বিরুদ্ধে অনেকেরই নালিশ থাকতে পারে। তিনি সোজাভাবে কথা বলার জন্যই তাঁর উপর ক্ষোভ জন্মাতে পারে। যার ফলে তাঁকে বাংলা থেকে সরিয়ে অন্য রাজ্যের অভিভাবক করে পাঠানো হল। এখন দেখার এরপরও তিনি কতটা সক্রিয় থাকতে পারেন বঙ্গ বিজেপিতে। নাকি তাঁর বাংলা-ছাড়া হওয়ার পর ছড়ি ঘোরান শুভেন্দু-সুকান্তরাই।