কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে জোমাটো, কাজের মানের ভিত্তি সংস্থার তিন শতাং কর্মীকে বরখাস্ত
১০০ জন কর্মীকে বরখাস্ত করল জোমাটো,
বিশ্ব জুড়ে একাধিক সংস্থা আয় ও ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখতে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে। তাকেই অনুসরণ করল খাবার ডেলিভারি সংস্থা জোমাটো। জানা গিয়েছে, জোমাটো তাঁদের তিন শতাংশ কর্মীকে বরখাস্ত করেছে বলে জানা গিয়েছে। যার জেরে কমপক্ষে ১০০ জন কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে।
কাজের মানের ভিত্তিতে ছাঁটাই
জোমাটোর তরফে এই বিষয়ে সরাসরি কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। জানা গিয়েছে জোমাটোর বিভিন্ন বিভাগ যেমন পণ্য, প্রযুক্তি, ক্যাটালগ ও বিপণন সংস্থার প্রায় ১০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকেই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হেঁটেছে জোমাটো। সূত্রের তরফে জানানো হয়েছে, কাজের মানের ওপর ভিত্তিতে কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। যাঁদের সংস্থা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাঁদের বিশেষ কোনও ভূমিকা ছিল না। নতুন নতুন পণ্য বা পরিষেবার সঙ্গে তাঁরা মানিয়ে নিতে পারছিলেন। জানা গিয়েছে, মূলত সংস্থার প্রবীণ কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে।
কর্মী ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত
জানা গিয়েছে জোমাটোর প্রতিষ্ঠাতা ও কার্য নির্বাহী আধিকারিক দীপিন্দর গোয়েন কয়েকদিন আগেই কর্মী ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলেন, কাজের মান ভালো না হলে চাকরি হারানোর সম্ভাবনা থাকতে পারে। ইতিমধ্যে কয়েকজন অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার পরিবর্তে নতুন কর্মচারীকে সেই পদ দেওয়া হয়েছে। জোমাটোর তরফে জানানো হয়েছে, কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে তা মোট কর্মীর তিন শতাংশের কম।
সংস্থার শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকদের পদত্যাগ
গত তিন সপ্তাহে সংস্থার শীর্ষস্থানীয় একাধিক আধিকারিক পদত্যাগ করেছিলেন। জোমাটোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহিত গুপ্ত, নতুন উদ্যোগের প্রধান রাহুল গাঞ্জু এবং আন্তঃনগর প্রধান সিদ্ধার্থ ঘেওয়ার পদত্যাগ করেন। এরপরেই সংস্থায় অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল। চলতি বছরে একাধিক ভারতীয় স্টার্টআপ সংস্থা ছাঁটাই করেছে।
ব্যবসা বৃদ্ধির হারে পতন
সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে, সংস্থাটির আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের অর্ডার ভ্যালু ৩ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বরের ত্রৈমাসিক মুদ্রাস্ফীতি ও পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খুচরো খাত ও ইকমার্স বিভাগে চাহিদা কমেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে ব্যবসা বৃদ্ধির হার। ২০২১ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ব্যবসা ৫৪১০ কোটি টাকার থেকে ২০২২ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৬,৬৩১ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যবসা বৃদ্ধির হার কমার কারণ
বিশেষজ্ঞরা ব্যবসা বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার জন্য করোনা লকডাউনকে দায়ী করছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর জেরে লকডাউনের পর দীর্ঘ সময় রেস্তোরাঁ সহ একাধিক পরিষেবা, দোকান বন্ধ ছিল। এছাড়া লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেও মানুষ বাইরে রেস্তোরাঁতে খেতে ভয় পেতেন সংক্রমণের। তখন তাঁরা জোমাটোর মতো খাবার ডেলিভারি অ্যাপের দ্বারস্থ হয়েছিলে। যার জেরে ব্যবসা দ্রুত গতিতে বেড়ে যায়। কিন্তু করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসতে সাধারণ মানুষ আবার ছন্দে ফিরতে শুরু করেন। যার জেরে তাঁরা নিজেরাই রেস্তোরাঁতে যেতে পছন্দ করেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সেই কারণে ব্যবসার বৃদ্ধি আগের থেকে ধীর হয়ে গিয়েছে।