চাইলেও কর্পোরেট কর কমানো কঠিন হবে, শাঁখের করাতের অবস্থা মোদী সরকারের
অরুণ জেটলি ঘোষণা করেছিলেন, ভারতে কোম্পানি করের হার চার বছরের মধ্যে ৩০ শতাংশ থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। তবে সেটা মানা কঠিন হবে কেন্দ্রের পক্ষে।
২০১৫ সালের বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘোষণা করেন, ভারতে কোম্পানি কর বা কর্পোরেট ট্যাক্সের হার অন্যান্য উন্নত দেশগুলির তুলনায় অনেকটা বেশি। তাই সেই হার চার বছরের মধ্যে ৩০ শতাংশ থেকে ধাপে ধাপে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
তবে এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা এবারের বাজেটে কঠিন হবে অরুণ জেটলির কাছে। এশিয়ায় গড়ে কর্পোরেট কর দেওয়া হয় ২১.৯১ শতাংশ হারে। আর সেখানে ভারতে তা ৩০ শতাংশ। এশিয়ার যত বড় উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। যার ফলে আমাদের ঘরোয়া বাজার প্রতিযোগিতাহীন হয়ে পড়ে রয়েছে। এমনটাই দাবি করেছেন জেটলি।
এসব বললেও লোকসভা ভোটের আগে এবারের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে জেটলি খুব বেশি আশার কথা শোনাতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না। দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের মঞ্চে সেই বার্তা হালকা করে দিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্যবসায়ীদের বলেছেন, আজকে সঙ্গে রয়েছেন। বাজেটের পরও আপনাদের সঙ্গে দেখতে চাই।
গত কয়েকবছরে আর্থিক বৃদ্ধি থমকে যাওয়ায় জেটলি পুরোটা কীভাবে সামলে ওঠেন সেটাই এখন দেখার। মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়া, নগদ অর্থনীতি সামাল দেওয়া সহ একাধিক বিষয় সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জিএসটি থেকে রাজস্ব আদায় আশানুরূপ হচ্ছে না। কৃষিক্ষেত্রে সরকার অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে চাইছে। যাতে গ্রামীণ জনসংখ্যার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া যায়। ফলে শিল্পে কতটা বিনিয়োগের দরজা এবারের বাজেটে কতটা উন্মুক্ত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এছাড়া আরও একটি বিষয় যা খুব গুরুত্বপূর্ণ তা হল - প্রথম দিন থেকেই বিরোধী কংগ্রেস সহ অন্যান্যরা মোদী সরকারকে শিল্পপতিদের সরকার বলে তোপ দেগেছেন। এই অবস্থায় শিল্পপতিদের বিশেষ সুবিধা করে দিলে আগামী নির্বাচনে সেটাকেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বড় হাতিয়ার করবেন রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাই সবমিলিয়ে শাঁখের করাতের অবস্থা জেটলির মন্ত্রকের।