আরও চাপে রাশিয়া, কমতে চলেছে রুশ তেল রফতানি
আমেরিকা জানিয়েছে, জি-৭ প্রাইস ক্যাপের বাইরে ভারত যতখুশি রুশ তেল আমদানি করতে পারে,
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল পশ্চিমি দেশগুলো। বার বার সতর্ক করার পরেও রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রাখে ভারত। রাশিয়া অনেক কম দামে অপরিশোধিত তেল রফতানি করে সেই সময়। রাশিয়া যাতে কোনওভাবেই নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি তেল রফতানি করতে না পারে তার জন্য নয়া পদক্ষেপ নিল জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলো। এরপরেই মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, জি-৭ এর আরোপ করা প্রাইস ক্যাপ মেকানিজমের ওপর ভারত রাশিয়ার থেকে যত খুশি অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারে। তিনি মনে করছেন, এই প্রাইস ক্যাপ মেকানিজমের জেরে রাশিয়া আগের মতো তেল রফতানি করতে পারবে না।
প্রাইস ক্যাপ মেকানিজম কী
অপরিশোধিত তেল রফতানি করে রাশিয়া ব্যাপক লাভ করেছিল। কিন্তু জি-৭ এর আরোপ করা প্রাইস ক্যাপ মেকানিজমের জেরে রাশিয়ার রাজস্ব কমে যাবে। যার জেরে রাশিয়া অপরিশোধিত তেল রফতানি করে আগের মতো লাভ করতে পারবে না। রাশিয়া তার বাজেটের ৩০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল ও রাজস্ব থেকে পায়। হিসেবে বলা যেতে পারে, রাশিয়ার ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১০০ মার্কিন ডলার। উত্তোলনের জন্য রাশিয়ার ব্যারেল প্রতি খরচ হয় ৫০ মার্কিন ডলার। কিন্তু জি-৭ প্রাইস ক্যাপ মেকানিজমের জেরে রাশিয়ার ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের জন্য খরচ হবে ৭০ মার্কিন ডলার। যার ফলে রাশিয়ার লাভ কমে হবে ৩০ মার্কিন ডলার। এর জেরে রাশিয়া আর আগের দামে ব্যাপক পরিমাণে তেল রফতানি করতে পারবে না।
রাশিয়ার তেল রফতানিতে রাজস্ব হ্রাস
ইয়েলেন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাশিয়ার রাজস্ব হ্রাস করার সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যাপটি বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত তেলের দাম কমিয়ে দেবে। ইয়েলেন জানিয়েছেন, এই ক্যাপটির জেরে রাশিয়া এখন আগের মতো তেল রফতানি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিলে, মস্কোর তেল উৎপাদনের কাজ কঠিন হয়ে উঠবে। তখন রাশিয়াকে নতুন করে ক্রেতার সন্ধান করতে হবে। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ ক্রেতা পশ্চিমি দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল। ভারত ছাড়া রাশিয়ার তেলের সব থেকে বড় গ্রাহক চিন।
চাপের মুখে ভারত
ইয়েলেন সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারত এবং তার বেসরকারি তেল সংস্থাগুলো যে কোনও মূল্যে রাশিয়ার থেকে তেল সংগ্রহ করতে পারে। তবে ভারত যদি পশ্চিমি বিমা, অর্থ ও সামুদ্রিক পরিষেবা ব্যবহার করলে ভারতকে জি-৭এর আরোপ করা প্রাইস ক্যাপ মেকানিজমের অধীনে আসতে হবে। এই ক্যাপটি রাশিয়ার রাজস্ব হ্রাস করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমিয়ে দেবে। তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্দিষ্ট করে দেওয়া তেলের দাম রাশিয়ার রাজস্ব হ্রাস পাবে। অন্যদিকে, রাশিয়া যদি তেলের দামে সেভাবে ছাড় না দেয়, সেক্ষেত্রে আগের মতো অপরিশোধিত তেল রফতানি করা সম্ভব হবে না।