ভিডিওকন ঋণদান মামলায় চন্দা কোছারকে সেবির নোটিশ! স্বার্থের সংঘাত নিয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগ
অবলিগেশন অ্যান্ড ডিসক্লোজার রিকয়্যারমেন্টস বা এলওডিআর লঙ্ঘন করার অভিযোগে, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ও তাদের এমডি তথা সিইও চন্দা কোছারকে নোটিশ পাঠালো সেবি।
ভিডিওকন গ্রুপকে আর্থিক ঋণ দেওয়ায় স্বার্থের সংঘাত হয়েছে। এই অভিযোগ উঠেছিল আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। সে সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হলেও এখনও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করেনি। তাই এবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলো সিকিওরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবি।
জানা গিয়েছে ইতিমধ্য়েই সেবি আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ও তাদের এমডি ও সিইও চন্দা কোছারের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে তারা, লিস্টিং অবলিগেশন অ্যান্ড ডিসক্লোজার রিকয়্যারমেন্টস বা এলওডিআর লঙ্ঘন করেছেন, এবং পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করেননি। আগে থেকেই কর্পোরেট গভর্ন্যান্স এবং ডিসক্লোজার ল্যাপস নিয়ে ব্যাঙ্কটির বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছিল সেবি।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১২ সালে। ওই বছর ভিডিওকন গোষ্ঠীকে আইসিআইসিআই ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা লোন দিয়েছিল। তবে শুধু আইসিআইসিআই নয়, ২০ টি ব্যাঙ্কের মিলিত ভাবে ৪০ হাজার কোটি টাকা লোন দিয়েছিল গোষ্ঠীটিকে। কিন্তু আইসিআইসিআইঃএর ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ উঠেছিল। ভিডিওকন গোষ্ঠীর প্রোমোটার বেনুগোপাল ধুত ২০১০ সালে একটি সম্পূর্ণ মালিকানাধিন সংস্থার মাধ্যমে নিউপাওয়ার রিনিউএবেল্স সংস্থাকে ৬৪ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। নিউপাওয়ার রিনিউএবেল্স তিনি স্থাপন করেছিলেন আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এমডি তথা সিইও চন্দা কোছারের স্বামী দীপক কোছারের সঙ্গে। কিন্তু অভিওযোগ, ২০১২ তে আইসিআইসিআই-এর ঋণ পাওয়ার ছ'মাসের মধ্যে তিনি মাত্র ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিউপাওয়ার রিনিউএবেল্স-এর প্রোপ্রিয়েটরশিপ দিয়ে দেন দীপক কোছারের একটি ট্রাস্টকে। এই নিয়েই স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ দানা বাধে।
তবে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান এম কে শর্মা অবশ্য গত মার্চে এ অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তাঁর যুক্তি, নিউপাওয়ার রিনিউএবেল্স-এর বিনিয়োগকারী ছিলেন বেনুগোপাল ধুত, ভিডিওকন গোষ্ঠীর কোনও বিনিয়োগ ছিল না সংস্থাটিতে। তাই এক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ সঠিক নয়।
কিন্তু তাতে সেবির তদন্ত বন্ধ হয়নি। শুক্রবার ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জকে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেবি থেকে পাঠানো ওই নোটিশের কথা। বলা হয়েছে ব্যাঙ্ক ও তাঁর এমডি তথা সিইও চন্দা কোছার ভিডিওকনকে ঋণদান এবং ভিডিওকন চন্দা কোছারের স্বামীর আর্থিক স্বার্থ থাকা নিউপাওয়ার রিনিউএবেল্স সংস্থার মধ্যের চুক্তি নিয়ে যে তথ্য পেশ করেছিলেন তার ভিত্তিতেই ওই নোটিশ দিয়েছে সেবি।
এপ্রসঙ্গে স্টেকহোল্জার এমপাওয়ারমেন্ট সার্ভিসেস এর প্রতিষ্ঠাতা তথা এমডি জে এন গুপ্তা বলেন, প্রকাশিত তথ্য পর্যাপ্ত না হলে সেবি আরও তথ্য চাইতেই পারে। আসল প্রশ্নটা হল কোন সময়ের তথ্য গোপনের অভিযোগ করা হচ্ছে, ২০১২-র সময়ের নাকি আজকের দিনের। কারণ ২০১২ সালে এলওডিআর ২০১৫-র প্রভিশনস জারি ছিল না। ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ এমন একটি ফার্মের মাধ্যমে ভিডিওকনের লোন রিস্ট্রাকচার করেছিল যারা কিনা সংশ্লিষ্ট পক্ষ (রিলেটেড পার্টি)। ২০১২ সালে কোম্পনিজ অ্যাক্ট বা সেবির নর্মস কোথাও-ই রিলেটেড পার্টি ট্রানজাকশনের ধারনাটি ছিল না। তবে চালু ছিল পার্সন অব ইন্টারেস্টের ধারনা।