ফেসবুক তৈরি করে মানুষকে বদলেছেন জুকারবার্গ, এখন তাঁকেই বলা হচ্ছে 'চলে যাও'
এই মুহূর্তে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ফেসবুক-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতে হতে পারে মার্ক জুকারবার্গ-কে।
একেই বলে অদৃষ্ট। এককালে যে মানুষটা কলেজে ক্লাসরুমে বসে সকলের সঙ্গে সকলকে সমস্তভাবে জুড়ে দিতে এক যুগান্তকারী ভাবনার আমদানি করেছিলেন। তৈরি করেছিলেন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট। সেই মানুষটি এখন ঘোরতোর সংকটে। এই মুহূর্তে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ফেসবুক-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতে হতে পারে মার্ক জুকারবার্গ-কে। ফেসবুক-এর বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যে জুকারবার্গ-কে সরানোর দাবিও নাকি তুলেছেন বলে এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নিজেদের দিক থেকে নজর ঘোরাতে ফেসবুক সমালোচকদের কালিমালেপনের চেষ্টা করেছিল। ফেসবুকের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্টশিয়াল ইলেকশনে রাশিয়া যে কারচুপি করেছে বলে খবর চাউড় হয়েছিল এবং এর পরপর-ই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারিতে ভালোমতোই মুখ পোড়ে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থার। দ্য টেলিগ্রাফ-এর রিপোর্টে প্রকাশ এই দুই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার শিকার হয় ফেসবুক। শেষমেশ ড্যামেজ কন্ট্রোলে তারা রিপাবলিকান পিআর ফার্ম-কেও কাজে লাগায়। কিন্তু, ফেসবুককের এই মর্যদাহানি-তে ক্ষুণ্ণ বিনোয়গকারীরা।
মার্কিন বিনিয়োগকারী তথা ট্রিলিয়াম অ্য়াসেট ম্য়ানেজমেন্ট-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জোনাস ক্রোরান যিনি আবার ফেসবুকে ৮.৫ মিলিয়ন পাইন্ডের অংশিদারীত্ব ধরে রেখেছেন, তিনি সরাসরি জুকারবার্গকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। এমনকী তাঁর মতো আরও বেশকিছু বিনিয়োগকারীও একই দাবি রেখেছেন বোর্ডের সামনে। এই মুহূর্তে মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুক-এর সিইও এবং চেয়ারম্য়ান পদে রয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় জোনাস ক্রোরান জানিয়েছেন, 'ফেসবুক এমন ভাব করছে যেন তারা তুষারে একটা স্বচ্ছ স্ফটিকবল। মনে রাখতে হবে এটা একটা কোম্পানি এবং কোম্পানিতে চেয়ারম্যান এবং সিইও-র চেয়ার আলাদা-আলাদা হওয়া উচিত।'
সংবাদমাধ্যমে যে রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে তাতে এমনও দাবি করা হয়েছে, ফেসবুক যে থেকে যে পিআর সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল তারা বেশকিছু সাংবাদিককেও ভাড়া করেছিল সমালোচকদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানানোর জন্য। যদিও, মার্ক জুকারবার্গ এমন কোনও পিআর সংস্থার নিয়োগের কথা যে শুরু থেকে জানতেন তা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, 'যখনই আমি এই পিআর সংস্থার কথা জানতে পেরেছি সঙ্গে সঙ্গে আমার টিমের সঙ্গে কথা বলি এবং সাফ জানিয়ে দিয়েছিলাম এদের সঙ্গে আমরা আর কাজ করব না।'
২০০৪ সালে ফেসবুক প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই মার্ক জুকারবার্গ চেয়ারম্যান ও সিইও-র পদ-এর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এই মুহূর্তে জুকারবার্গের হাতে সংস্থার ৬০ শতাংশ ভোটিং শেয়ার রয়েছে। ফলে, জুকারবার্গকে অন্য বিনিয়োগকারীরা সরাতে চাইলেও তা যে সহজ হবে না তা পরিস্কার।