বাজেট পেশের আগে কী কী গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয় জেনে নিন
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ হতে চলেছে চলতি অর্থ বছরের কেন্দ্রীয় বাজেট। যা পেশ হওয়ার আগে থাকে প্রবল সুরক্ষার মধ্যে। অর্থমন্ত্রককে এই মুহূর্তে দেশের সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা ঘেরাটোপের মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে দেশ জোড়া অর্থনৈতিক মন্দা থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মোড় কীভাবে ঘুরতে পারে তা জানতে অধীর আগ্রহে দিন গুনছেন দেশের সাধারণ মানুষ।

আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ঘেরাটোপে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক নয়াদিল্লির সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের উত্তর ব্লকে অবস্থিত যা বর্তমানে সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আছে। বাজেটের তিন সপ্তাহ আগে থেকেই এরকম সর্বোচ্চ স্তরের সুরক্ষা দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরো (আইবি), দিল্লি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় শিল্প সুরক্ষা বাহিনী (সিআইএসএফ) সকলেই আছে এই অঞ্চলটির সুরক্ষার দায়িত্বে। যদিও এই অঞ্চলটি নভেম্বর মাসে থেকেই যখন বাজেটের পরিকল্পনা শুরু হয়, তখন থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে। জানুয়ারি মাসে সেই নিরাপত্তা আরও কড়া করা হয়।

মুদ্রণের প্রথম দিনেই হালুয়া ভোজ
প্রতিবছরই বাজেটের প্রথম মুদ্রণের দিন একটি 'হালুয়া' অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অর্থমন্ত্রকের সমস্ত কর্মীরা এদিন হালুয়া দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। তবে বাজেট যাতে কোনও ভাবেই আগাম ফাঁস না হয় সেকারণে বাজেট উপস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত বাজেটের মুদ্রণের সাথে জড়িত সমস্ত কর্মকর্তারা উত্তর ব্লকের বেসমেন্টে প্রিন্টিং প্রেস রুমে তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকবে।

প্রয়োজনীয় নথির বিশেষ সুরক্ষা
বাজেটের মূল সংখ্যাযুক্ত একটি 'নীল শীট' অত্যন্ত সুরক্ষার মধ্যে রাখা হয়। আশ্চর্যের বিষয়, তাতে এমনকি অর্থমন্ত্রীরও হাত দেওয়ার অনুমতি নেই। এটি বাজেট যুগ্ম-সচিবের হাতে অর্পণ করা হয়। এই নীল শীটের প্রথম খসড়াটি বাজেটের কয়েক সপ্তাহ আগে তৈরি করা হয়। ওই নীল শিটের মধ্য সমস্ত বাজেটের হিসাব সুরক্ষিত করে রাখা হয়।

বাইরের বিশ্বের সাথে সমস্ত রকম যোগাযোগ বন্ধ ছাপাখানার কর্মীদের
বাজেটের দিন পর্যন্ত বাইরের বিশ্বের সাথে কোনও যোগাযোগ থাকবেনা মুদ্রণ এবং অনুবাদ কর্মীদের। বাহ্যিক যোগাযোগের জন্য ঘরে কোন ফোনও নেই। কর্মকর্তাদের জন্য থাকা ও খাওয়া, দুয়ের ব্যবস্থাই ওখানেই রয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে ফোন করার প্রয়োজন পড়লে ওই ব্যক্তিকে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হবে যেখানে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে তাদের সামনে তিনি ফোন করতে পারবেন।

নেই কোনও ইন্টারনেটের ব্যবস্থা
জানুয়ারির শুরু থেকে উত্তর ব্লকটি কঠোরভাবে মিডিয়ার থেকে দূরে রাখা হয়। শক্তিশালী এক্স-রে স্ক্যানিং মেশিন রাখা হয় প্রবেশ দ্বারে। কর্মী এবং ওর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। ল্যান্ডলাইনগুলির কলগুলিও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।