ট্রেনে উঠলেই নিশ্চিত আসন, ভারতীয় রেলের অসংরক্ষিত বগিতে 'রিজার্ভ ক্লাস'-এর মতো সুবিধা
ট্রেনে উঠলেই নিশ্চিত আসন, ভারতীয় রেলের অসংরক্ষিত বগিতে 'রিজার্ভ ক্লাস'-এর মতো সুবিধা
ট্রেনে ভ্রমণকারীদের জন্য সুখবর। এবার সাধারণ বগিতে রিজার্ভ ক্লাসের মতো সুবিধার বন্দোবস্ত করছে ভারতীয় রেল(indian rail)। এব্যাপারে বায়োমেট্রিক টোকেন মেশিন চালু করেছে রেল। করোনায় সময়ে অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে রেলের পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ মধ্য রেলের সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে এই মেশিন চালু করা হয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন জায়গায় এই মেশিন চালু করা হবে।
বায়োমেট্রিক টোকেন মেশিন কী?
সাধারণ বগিতে যাত্রীদের প্রচুর ভিড়। করোনা পরিস্থিতিতে এই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে চায় ভারতীয় রেল। যার জন্য বায়োমেট্রিক টোকেন মেশিন চালু করেছে রেল। যা দিয়ে স্টেশনে সহজেই দুই জলের দূরত্ব বজায় রাখা যাবে। এছাড়াও ট্রেনে ওঠার সময়ও হুড়োহুড়ি হবে না।
যাত্রীদের সুবিধা করতে টোকেন
বায়োমেট্রিক টোকেন মেশিনের মাধ্যমে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য আলাদা টোকেন দেওয়া হবে। এই টোকেনের মাধ্যমেই যাত্রীরা ট্রেনে উঠবেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য আনরিজার্ভড কম্পার্টমেন্টের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা। কেননা সংরক্ষিত বগির যাত্রীরা জানেন তাঁদের আসনের নম্বর। এই কারণেই সংরক্ষিত কামড়া তুলনামূলক ফাঁকা থাকে আর অসংরক্ষিত কামড়ায় ভিড় থাকে।
আর ভিড় হবে না
ট্রেনে অসংরক্ষিত বগিতে অতিরিক্ত ভিড়ের প্রেক্ষিতে বায়োমেট্রিক মেশিন চালু করা হয়েছে। এই মেশিনটি প্রত্যেক যাত্রীর নাম, পিএনআর নম্বর, ট্রেন নম্বর এবং গন্তব্য রেকর্ড রাখে। এর জন্য যাত্রীকে নিজের সম্পর্কিত সব বিবরণ মেশিনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এর পরে বায়োমেট্রিক মেশিনে ছবি এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট ক্যাপচার করবে। সমস্ত তথ্য নেওয়ার পরে মেশিন থেকে যাত্রীদের সিরিয়াল নম্বর এবং কোচ নম্বর লেখা কাগজের টোকেন দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী যাত্রীকে ট্রেনে আসন গ্রহণ করতে হবে।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ
বায়োমেট্রিক টোকেনের সাহায্যে ট্রেনে সংগঠিত অপরাধও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মনে করেছেন রেলের আধিকারিকরা। কেননা এখানে রেলের সব যাত্রীর বিবরণ তোলা থাকবে। সেক্ষেত্রে কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে, তা সহজেই ধরা সহজ হবে। রেলের নিরাপত্তা আধিকারিকরা মনে করেছেন বায়োমেট্রিক মেশিনে ফটোগ্রাফ এবং আঙুলের ছাপ সংরক্ষণের কারণে অপরাধীরা ট্রেনে অপরাধ করতে ভয় পাবে। ফলে মনে করা হচ্ছে এই পদক্ষেপ রেলের ভ্রমণকে আরও নিরাপদ করে তুলবে।
রেলের ব্যাখ্যা
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বায়োমেট্রিক মেশিন চালুর বড় কারণ হল স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা। যেহেতু যাত্রীরা আগে থেকেই কোচের নম্বর পেয়ে যাবেন, তাই তাঁদের ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনে চড়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। বায়োমেট্রিক মেশিন থেকে যাত্রী টোকেন নেওয়ার সময় জানতে পারবেন, কোন কোচে বসতে হবে। তারপরেই সে স্টেশনে ঢুকতে পারবে।
প্ল্যাটফর্মেও থাকবে দুগজের দূরত্ব
সাধারণভাবে অসংরক্ষিত শ্রেণির যাত্রীরা ট্রেন আসার অনেক আগে থেকেই স্টেশনে চলে যান। কিন্তু নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে স্টেশনে এবং প্ল্যাটফর্মে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। টোকেন পাওয়ার পরে যাত্রীকে ট্রেন দেওয়ার ১৫ মিনিট আগে প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। তারপর ট্রেন ঢুকলে আরামেই কোচে উঠবেন। টোকেন মেশিন রেলের সুরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা এবং কাজও অনেকটাই কমিয়ে দেবে। তাঁদেরকে অন্য নজরদারিতে ব্যবহার করা যাবে। এই বায়োমেট্রিক মেশিনটি প্রথম চালু করা হয়েছে ২০২১-এর ১৪ সেপ্টেম্বর সেকেন্দ্রাবাদে।