ব্যাড ডেট এবং এনপিএ, সমাধান কি ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপ্টসি কোডেই
আইবিসি ২০১৮-তে বিশেষজ্ঞরা মত দিলেন, ব্যাড ডেট এবং এনপিএ সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপ্টসি কোডেই।
বর্তমানে ভারতীয় ব্যাঙ্কিং সেক্টরের সবচেয়ে মাথা ব্যাথার কারণ ব্যাড ডেট বা খারাপ ঋণ এবং নন পারফর্মিং অ্য়াসেটস বা এনপিএ। এর জন্য এই মহুর্তে ভারতের অর্থনীতিরও বেহাল দশা। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এর সমাধান বিদেশে নেই। ভারতীয় ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে যে ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা বিদেশী ব্যাঙ্কগুলির সমস্যার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। তাই ভারতের ব্যাঙ্কগুলিকে সেই সমস্যার সমাধান ভারতীয় পথেই করতে হবে।
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান গিরিশ চন্দ্র চতুর্বেদী বলেন, ভারতীয় ব্যাঙ্কে যে বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়া হয় তার সঙ্গে রিকভারির গড়মিল রয়েছে। বিদেশে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায় কয়েক মাসেই, কিন্তু ভারতে লেগে যায় ৫ থেকে ৭ বছর।
চতুর্বেদী বলেন, এনপিএ সমস্যার সঠিক সমাধানের জন্য ভারতের ফেডেরাল কাঠামোতে কিছু সিনক্রোনাইজেশনেরও প্রয়োজন। কারণ এখানে আর্থিক সমস্যার কারণ কেন্দ্রীয় সরকার কিছুর কারণ রাজ্য সরকার। তবে, ভুল যেই করুক ভুগতে হয় ব্যাঙ্ককেই। তিনি বলেন, 'যতক্ষণ না এই ভুলের প্রকৃত সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছনো যাবে ততক্ষণ এটা চলবেই'।
এছাড়া তিনি তোলেন ডেভেলপমেন্টাল ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনগুলির কথা। বলেন এই ইনস্টিটিউশনগুলি ভারতে ব্যর্থ হয়েছে এবং ভারতের যে বিশাল পরিমাণের এনপিএ এবং ব্যাড ডেট তার অনেকটাই এদের কারণে। তা সত্ত্বেও এগুলিকে ফের ও নতুন করে চালু করার পক্ষে মত দেন চতুর্বেদী। তবে তারা আগের মতো সমানভাবে এনপিএ-র পরিমাণ যাতে না বাড়িয়ে যায় সেদিকেও নজর রাখতে হবে বলে জানান তিনি।
ইউকো ব্যাঙ্কের এমডি রবি কৃষ্ণ ঠক্কর বলেন, প্রথমদিকে প্রাইভেট সেক্টর ব্যাঙ্কগুলি ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাপের ঋণদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পিসিবিগুলিকে বড় প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ করা শুরু করে। তিনি বলেন, 'আমরা এটা করতে দক্ষ নই কিন্তু এটা ইন্টারনাল এবং এক্সাটার্নাল ফিচার।'
ব্যাঙ্কগুলির পোর্টফোলিওর সঙ্গে ওই সিদ্ধান্থ মেলেনি বলে দাবি করেন তিনি। আর তার জন্যই ব্যাড ডেট ও জিডিপির অনুপাত খারাপ হয়েছে বলে জানান ঠক্কর। তবে ভারত গেরীতে হলেও সমস্যাটিকে স্বীকার করে তার সমাধানের চেষ্টা করছে। কিন্তু এর সমাধান ব্যাঙ্কের হাতে নেই বলেই জানিয়েছেন ইউকো ব্যাঙ্কের এমডি। তিনি বলেন বিভিন্ন প্রকল্পে দেশের টাকা আটকে আছে। এই অবস্থায় প্রকল্পগুলি কীভাবে শুরু করা যায় সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর গড়ে উত্থান বিজেপির! সিপিএমকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েত বোর্ড, হার তৃণমূলের]
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ইলা পট্টনায়েক বলেন সংস্কার না করার ফলে ঋণদানের অবস্থা এত খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে সাহসী ও কঠিন পদক্ষেপ হিসেবে ইনসলভেন্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্করাপ্টসি কোড (আইবিসি) চালু করা হয়েছে। তিনি আইবিসি-কে সঠিকভাবে কার্যকর করার পক্ষে সুপারিশ করেন। তিনি আরো বলেন, ভারতে ঋণদান, অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে যেরকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয় তেমনটা বিশ্বের খুব কম দেশেই ঘটে।
[আরও পড়ুন:এখনও পঞ্চায়েতে সুযোগ রয়েছে বিরোধীদের! সুপ্রিম-যুদ্ধে হেরেও সাফাই রবীন-রাহুলদের]
ব্যেনস এবং কোম্পানীর অংশীদার, হর্ষ বর্ধন, বলেন, 'ব্যাড ডেট একটি উপসর্গ এবং আইবিএম একে আংশিকভাবে সাড়াতে পারলেও সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করতে পারবে না। এই অর্থব্যবস্থার সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের সংস্কার করা প্রয়োজন।'