মোদীর রাজ্য গুজরাতেই লক্ষ লক্ষ ব্যবসায়ীই চান না জিএসটি, তবে কেন, জেনে নিন
নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশই জিএসটির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। তাঁরা কোনওমতেই জিএসটি চালু হোক তা চান না।
সারা দেশে জিএসটি চালু করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। অথচ তাঁর রাজ্য গুজরাতে ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশই জিএসটির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। তাঁরা কোনওমতেই জিএসটি চালু হোক তা চান না।
দেশের সর্ববৃহৎ 'ম্যান মেড ফ্যাব্রিক' পাইকারি বাজারের কেউই জিএসটি চালু হোক তা চান না। মেরেকেটে গুজরাতের সুরাটের এই পাইকারি বাজারে ৭০ হাজার টেক্সটাইল ব্যবসায়ী রয়েছেন। তারা জিএসটি নাকচ করেছেন। আর সেজন্য ধর্মঘট, বিক্ষোভ, জনসভা চলছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে হিতেশ সাঙ্কলেচা নামে একজন জানিয়েছেন, এতদিন কোনও কর ছিল না। আমরা আবগারি শুল্ক দিতাম না। তাহলে কেন এখন জিএসটি-র বোঝা চাপানো হচ্ছে। এখানকার ব্যবসায়ীরা বেশিরভাগই নিরক্ষর। আর আমাদের উপরে কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য জোর দেওয়া হচ্ছে। ন্যূনতম ৫ শতাংশ কেন, ১ শতাংশ জিএসটিও ছোট ব্যবসায়ীদের বিপদ ডেকে আনবে বলে তিনি দাবি জানিয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, জিএসটি চালু হলে কম্পিউটার রাখতে হবে। ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও অ্যাকাউন্টট্যান্ট রাখতে হবে। ফলে অপারেটিং রেশিও বেড়ে যাবে। তাহলে কীভাবে ব্যবসা সামলানো যাবে, প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের।
সুরাটে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৭০টি টেক্সটাইলের বাজার রয়েছে। সবমিলিয়ে সেখানে ৭৫ হাজার দোকান রয়েছে। দৈনিক টার্নওভার ১১৫ কোটি টাকার উপরে। ব্যবসায়ীদের মতে, জিএসটি চালু হলে ভালো তো হবে না, উল্টে পুরো ব্যবসা মার খাবে। বহু মানুষ কাজ হারাবে।
প্রসঙ্গত, সুরাটে বস্ত্রশিল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা টার্নওভার রয়েছে। সবমিলিয়ো মোট ১৪.৫ লক্ষ মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। সারা দেশে যেখানে প্রতিবছর ২১ হাজার মিলিয়ন মিটার কাপড় তৈরি হয় সেখানে শুধুমাত্র সুরাটেই ৯ হাজার মিলিয়ন মিটার অর্থাৎ মোট উৎপাদনের ৪০ শতাংশ তৈরি হয়। ফলে এত সংখ্যক মানুষ জিএসটির বিরোধিতায় শামিল হওয়ায় তা কেন্দ্রের তথা রাজ্য সরকারের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে সন্দেহ নেই।