বিশ্বে ভয়াবহ আর্থিক মন্দা দেখা দেবে বছরের শেষ থেকেই, সতর্ক করলেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ নুরিয়েল রুবিনি
২০২২ সালের শেষ থেকে বিশ্ব জুড়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা নুরিয়েন রুবিনি
২০০৮ সালে বিশ্বের চরম অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন অর্থনীতিবিদ নুরিয়েল রুবিনি। ফের তিনি বিশ্বব্যপী চরম অর্থনৈতিক মন্দার ভবিষ্যতবানী করেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকাতে ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এই ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক সঙ্কট ২০২২ সালের শেষের দিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। ২০২৩ সাল এই অর্থনৈতিক সঙ্কট স্থায়ী হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ম্যাক্রো অ্যাসোসিয়েটসের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী আধিকারাকি সোমবার একটি সাক্ষাৎকারে জানান, একটি ভয়ঙ্কর দিন আসছে। দেশের অর্থনীতি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন প্রশাসনের বড় ঋণের অনুপাতে নজর দেওয়া উচিত। ঋণের খরচ বৃদ্ধির জেরে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও ব্যাঙ্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বর্তমানে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট হার ও নভেম্বর -ডিসেম্বরে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধির হার আশা করছেন। এটি বছরের শেষ নাগাদ ফেড তহবিলের হার ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪.২৫ শতাংশে নিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি জানিয়েছেন, বিশেষ করে মজুরি ও পরিষেবা খাতে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে। ফেড আরও বাড়ানো ছাড়া বিকল্প কোনও উপায় নেই বলেও তিনি মনে করেছেন। এরফলে তহবিলের হার ৫ শতাংশের দিকে যাচ্ছে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর জেরে ব্যবসায় ধাক্কা, রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাত, চিনের শূন্য কোভিড নীতির জেরে অর্থিক সঙ্কোচন দেখা দিয়েছে। যার ফলে মার্কিন বাণিজ্যের বৃদ্ধিকে মন্দা করে তুলছে। এই আর্থিক মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হবে তিনি মনে করছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছন, এই দীর্ঘ মেয়াদী মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতির জেরে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আমেরিকা ও বিশ্বে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আর্থিক মন্দা হবে।
পাশাপাশি রুবিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, একবার যদি বিশ্ব আর্থিক মন্দার কবলে পড়ে, সেখান থেকে বেড়িয়ে আসা কঠিন। ঋণের বোঝা বাড়তে থাকবে বিভিন্ন দেশের। এক্ষেত্রে তিনি জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে সরকার যদি রাজস্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়, সামগ্রিক চাহিদাকে আরও বৃদ্ধি করবে। রুবিনি জানিয়েছেন, এর ফলে ১৯৭০ দশকে বিশ্বব্যাপী যে আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছিল, তার প্রতিফলন দেখা দেবে। তিনি বলছেন, বিশ্বের সামনে কোনও ছোটখাটো অর্থিক মন্দা আসছে না। গভীর, দীর্ঘমেয়াদী ও ভয়াবহ আর্থিক মন্দার দেখা দেওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
রুবিনি জানিয়েছেন ২০০৮ সালে অর্থিক মন্দার ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি প্রভাব ব্যঙ্কগুলোতে পড়েছিল। সেই সময় তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলোর ক্ষেত্রে হেজ ফান্ড, প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ক্রেডিট ফান্ডগুলির প্রভাব গুরুতর হবে। তাঁর সেই ভবিষ্যৎবানী ফলে যায়।