নীরব-জালিয়াতির কথা জানত পিএনবি কর্তারা! বিস্ফোরক অভিযোগ সিবিআই চার্জশিটে
সিবিআইয়ের দ্বিতীয় চার্জশিটে বলা হয়েছে, নীরব মোদির জালিয়াতি সম্পর্কে পিএনবিকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছিল আরবিআই, কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্মকর্তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
নীরব মোদির জালিয়াতির কথা জানতেন পিএনবি কর্তারা। জানতেন ব্যাঙ্কের তৎকালীন সিইও ঊষা অনন্তসুব্রামানিয়ন। চাইলেই আটকাতে পারতেন, কিন্তু তাঁরা কোনও পদক্ষেপই নেননি। এমনটাই অভিযোগ সিবিআই-এর।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি নীরব মোদি-মেহুল চোকসি কেলেঙ্কারিতে দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করেছে। সেখানে তারা বলেছে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক বিএনবি কর্তাদের বারবার সার্কুলার পাঠিয়ে সাবধান করেছিল। ২০১৬-র আগস্টে 'সুইফট' পদ্ধতির সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে তারা বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও পিএনবির কর্মকর্তারা কোনও সাবধানতা নেননি। বাহলে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের জালিয়াতি আটকানো যেত বলেই দাবি তদন্তকারী সংস্থাটির।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ব্যাঙ্কিং সুপারভিশন ডিপার্টমেন্ট ২০১৬-র ১০ আগস্ট একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের এমডি ও সিইওদের জানানো হয় একটি পিএসইউ ব্যাঙ্কের জালিয়াতির ব্যাপারে। বলে হয় ২০ টি লেটার অব কমফোর্ট ইস্যুর মাধ্যমে প্রায় ৬৪.০৮ মিলিয়ন ডলার জালিয়াতি করা হয়েছে। ওই লেটার অব কমফোর্টগুলি ইস্যু ট্রেড লেনদেন সমর্থিত নয় এবং গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো আবেদন ছাড়াই সেগুলি দেওয়া হয়েছে।
সিবিআই-এর চার্জশিটে বলা হয়েছে, 'রিজার্ভ ব্যাঙ্কে তাদের জানিয়েছিল ওই লেটার অব কমফোর্টগুলি জালিয়াতি করে সুইফট মেসেজের মাধ্য়মে ইস্যু করা হয়। এতে ব্যাঙ্কের কর্মীরা জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহও প্রকাশ করা হয়েছিল। এবং সুইফ্ট সিস্টেমের মেকার বা চেকারের ইউজার আইডি / পাসওয়ার্ড কে কাজে লাগানো হয়েছিল তাও জানিয়েছিল আরবিআই।'
চার্জশিটে এও বলা হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের পাঠানো চিঠিতে ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল, তাদের সাবধানতার চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে তাদের ব্যাঙ্কে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা রিপোর্ট করতে হবে। যদি এমন কোন ঘটনা নাও ঘটে থাকে, সেটাও জানাতে হবে। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে নীরব-মেহুল জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসার আগে এ বিষয়ে পিএনবি তাদের কিছুই জানায়নি।
সিবিআইয়ের দ্বিতীয় চার্জশিটেও পিএনবির তৎকালীন এমডি ও সিইও অনন্তসুব্রামানিয়নের নাম রয়েছে। এছাড়া দুই ইডি - কেভি ব্রহ্মাজী রাও এবং সঞ্জীব শরণেৃ-এর নামও রয়েছে। রয়েছে পিএনবির ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্কিং ডিভিশনের জিএম নেহাল আহাদ-এর নামও। সিবিআই চার্জশিটে এদের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে 'এই ব্যক্তিরা ২০১৬-র আগস্ট নভেম্বর-এর মধ্যেই আরবিআই-এর সতর্কতা পেয়েছিলেন। কিন্তু বার বার বিজ্ঞপ্তি এবং রিজার্ভ ব্যাংকের সতর্কতা পরামর্শ পেয়েও তাঁরা জালিয়াতি ঠেকানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি।'