মাঝ আকাশে আতঙ্ক! ফের বন্ধ হয়ে গেল 'প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি'র ইঞ্জিন, প্রশ্নের মুখে যাত্রী সুরক্ষা
ফের মাঝ আকাশে বিগরে গেল ইঞ্জিন, পুনেগামী গোএয়ারের বিমানকে করতে হল জরুরি অবতরণ। বিশেষজ্ঞদের মতে প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির এয়ারবাস এ-৩২০ নিও সিরিজের ইঞ্জিনগুলিতেই সমস্যা রয়েছে।
আরও একবার মাঝ আকাশে গো-এয়ারের বিমানে ঘটল বিপত্তি। ১৬৯ জন যাত্রী নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে পুনে যাচ্ছিল বিমানটি। ওড়ার একটু পরেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেঙ্গালুরুতেই জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। আবারও প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির এয়ারবাস এ-৩২০ নিও ইঞ্জিনই সমস্যার কারণ হয়ে দেখা দিল। ডিজিসিএ এই ত্রটিপূর্ণ ইঞ্জিনওয়ালা বেশ কয়েকটি বিমান বাতিল করেছে।
এয়ারলাইন্সটির একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবার মাটি ছাড়ার পরই পাইলট ইঞ্জিন ভাইব্রেশনের সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন। তারপর থেকে একের পর এক যন্ত্র বন্ধের সতর্কতা আসতে শুরু করে। অবশেষে মাঝ আকাশেই একটি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। পাইলট যাত্রীদের নিয়ে বেঙ্গালুরুতে জরুরি অবতরণ করেন। মাটিতে নামার পর যাত্রীদের অপর একটি বিমানে তুলে দেওয়া হয়।
প্রথম থেকেই প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির তৈরি এয়ারবাস এ-৩২০ নিও ইঞ্জিন-এ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ভারতে গো-এয়ার এবং ইন্ডিগো সংস্থার বহু বিমানেই এই জেট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। গত মে মাসে পর পর বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন সংক্রান্ত সমস্যা হওয়ার পর ডিজিসিএ-এর নির্দেশে এই ইঞ্জিন ব্যবহার করা মোট ১১ টি বিমান বাতিল করেছিল সংস্থাদুটি। অবশ্য শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গাতেই প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির এই ইঞ্জিন-এ ত্রুটি ধরা পড়েছে।
এই ত্রুটির তালিকায় নতুন সংযোজন ইঞ্জিনে অত্যধিক ভাইব্রেশন। মার্কিন বিমান পরিচালক সংস্থাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। গত সপ্তাহেই এই ত্রুটির জন্য গোএয়ার ও ইন্ডিগোর আরও ১০ টি বিমানের ইঞ্জিন বদলানোর জন্য বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবারই এ নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছিলেন অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী সুরেশ প্রভু। তার ঠিক পরের দিনই আবার একই সমস্যার সম্মুখিন হতে হল।
তবে ইঞ্জিনগুলি বদলে দিলেও তা নিরাপদ হবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। জানা গিয়েছে গত মাসে এরকম একটি বদলে দেওয়া একেবারে নতুন ইঞ্জিন ৫০ ঘন্টা চলতে না চলতেই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আসলে উড়ান বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনির এই নিও সিরিজের ইঞ্জিনের মেকানিজমেই ত্রুটি রয়েছে।
এই অবস্থায় এই ধরণের ইঞ্জিন যেসব বিমানে ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলি যাত্রী পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা আদৌ উচিত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ভারতে এখনও মোট ৬০ টি বিমান রয়েছে যেগুলি এই প্যাট অ্যান্ড হুইটনির এয়ারবাস এ-৩২০ নিও ই়্জিনে চলে। ইন্ডিগোর হাতে আছে ৪১টি বিমান, গোএয়ার-এর হাতে আরও ১৯টি। কিন্তু সুরেশ প্রভুকে দেওয়া ডিজিসিএ-এর এক অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্টে কিন্তু এনিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলেই বলা হয়েছে। বলা হয়েছে কোনও দরকার নেই কোনও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থার। শনিবারের ঘটনার পর ডিজিসিএ কি বলে সেটাই দেখার।