মারণ রোগ ক্যানসারের ক্ষেত্রে কারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, সমীক্ষা থেকে কী তথ্য উঠে এল
মারণ রোগ ক্যানসারের ক্ষেত্রে কারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
ক্যানসার হল একটি মারণ রোগ। এই রোগকে হারানো খুব কষ্টসাধক। মেয়েদের থেকে ছেলেদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। কিন্তু মেয়েদের থেকে ছেলেদের ক্যানসারের চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার লক্ষণ বেশি। ভারতের বৃহত্তম ক্যানসার হাসপাতাল টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল (TMH), যেটি মুম্বাইয়ে অবস্থিত, সেখানকার ক্যানসার বিশেষজ্ঞদের নানান সমীক্ষা থেকে কী রিপোর্ট উঠে এল, দেখে নিন।
৩০ শতাংশই মহারাষ্ট্রের শিশু
হাসপালের রেকর্ড থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট দেশে ১৮ হাজার ৩৯৪ টি শিশুকে ক্যানসারের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মোট শিশুর হার ৩৫ শতাংশ। ১১ হাজার ৯৬২ টি ছেলে ও ৬ হাজার ৪৩২ জন মেয়ে ছিল। ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৩০ শতাংশই মহারাষ্ট্রের। আর বাকি অন্যান্য রাজ্যের শিশু।
২০২০ সালের রিপোর্টে কী উঠে এল
বারাণসীতে অবস্থিত হোমি ভাভা ক্যান্সার হাসপাতাল, যেটি দ্বিতীয় বৃহত্তম পেডিয়াট্রিক অনকোলজি সেন্টার। ২০১৯ সালের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ৩২৫ জন ক্যানসার আক্রান্ত শিশুর মধ্যে ১৯৭ জন শিশু পুরুষ। অর্থাৎ ৬০ শতাংশই ছেলে। ২০২০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে ৩৯২ জন শিশুর মধ্যে ২৫০ জনই ছেলে। অর্থাৎ ৬৩ শতাংশই ছেলে।
টাটা মেমোরিয়াল কি জানাচ্ছে
ক্যানসার হাসপাতাল টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১০ বছরের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে হাসাপালের যে সংখ্যক ব্যক্তি ক্যানসারের চিকিৎসা করতে এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে মহিলাদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
TMH -এর রিপোর্ট থেকে কী জানা গেল
TMH -এর রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার নিরিখে বিচার করলে দেখা যাবে ৩৪ হাজার ৯০৬ জন অর্থাৎ ৫৭ শতাংশই পুরুষ। ২০১৮ সালে ৩৬ হাজার ৯৫ জন ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই পুরুষ।
ডঃ গিরিশ চিন্নাস্বামী কী জানালেন
TMH-এর পেডিয়াট্রিক অনকোলজিস্ট ডঃ গিরিশ চিন্নাস্বামী বলেন, শিশুদের ক্ষেত্রে ওরাল, স্তন, প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কম। সব বয়সীদের ক্যানসার বেশি প্রবাহবিত করতে পারে হাড়, ফুসফুস, মস্তিষ্ক, ব্লাডকে। তিনি জানান, ছেলেদের তুলনায় মহিলাদের ক্যনাসার রোগ সারানো খুব জটিল ও সম্ভাবনাও খুব কম। যদিও তিনি আরও বলেন, যদি ক্যানসাররের মত মারণ রোগ প্রাথমিক স্টেজে ধরা পরে বা যদি এর সময় মতো চিকিৎসা করানো হয়, তাহলে ৮০ শতাংশ শিশু এই রোগ থেকে সুস্থ হতে পারে।
উদাহরণে কী রয়েছে
উদাহরণ স্বরূপ জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে এক রোগী লিউকেমিয়াও ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেন। প্রথমে মেয়েটি চিকিৎসাধীন ছিল। তাঁরপর তার বাবা হাসপাতাল থেকে নিয়ে বাড়ি চলে যান। সেই সময় তাঁদের সাথে এক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন যোগাযোগ করেন। তাঁরা মেয়েটির চিকিৎসা চালাবার জন্য মেয়েটির বাবাকে বলেন কিন্তু তাঁর পিতা সেটি করতে অস্বীকার করেন। তাঁর কয়েকদিন মেয়েটি মারা যান।
AIIMS এর সমীক্ষা থেকে কী উঠে এল
AIIMS এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে ছেলে মেয়েদের মধ্যে অনুপাত ৫:১। TMH সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে ছেলেদের ক্যানসার আক্রান্তদের হার ছিল ২.৩ শতাংশ। আর মেয়েদের ছিল ২.৭ শতাংশ।
২০২০ সালের রিপোর্টে কী দেখা গেল
২০২০ সালের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ক্যানসারের আক্রান্ত মেয়েদের আক্রান্তদের সংখ্যা ছিল ৪.৬ শতাংশ। ছেলেদের ৩.২ শতাংশ। তাঁর মধ্যে ১৯ জন মেয়ের মধ্যে লিঙ্গ-বৈষম্য দেখা গেছে। টিআরএ ছেলেদের দেখা যাচ্ছে ১.৯ শতাংশ, মেয়েদের ১.৭ শতাংশ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে মেয়েদের অর্থের অভাবে এই চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। এই খরচ চালানো ব্যয়বহুল। তাই অনেকের সাধ্যের মধ্যে পড়ে না এই ক্যান্সারে চিকিৎসা চালানো।