বিজেপির ১৭ বিধায়ক কোথায় গেল! বিধানসভায় ভোটাভুটির পর জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে
বিজেপির পরিষদীয় টিমে ভাঙন লেগেই রয়েছে। একুশের পরবর্তী এক বছরে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। ৭৭ জন বিজেপি বিধায়ক এবার নির্বাচিত হয়েছিলেন বিধানসভা। ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যা কমে ৬৯-এ নেমেছে।
বিজেপির পরিষদীয় টিমে একুশের ভোট পরবর্তী সময় থেকেই ভাঙ লেগে রয়েছে। এই এক বছরে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে। ৭৭ জন বিজেপি বিধায়ক এবার নির্বাচিত হয়েছিলেন বিধানসভায়। ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যা কমে ৭০-এ নেমেছে। সোমবার বিধানসভা সংশোধনী বিল নিয়ে ভোটাভুটিতে ১৭ জন বিধায়ককে নিয়ে হয়ে গেল এক প্রস্থ নাটক। তাতে ভাঙন জল্পনা বাড়ল। তবে শেষমেশ স্বস্তি ফিরল বিজেপিতে।
প্রশ্ন ওঠে বিজেপি কেন ১৭টি ভোট কম পেল
রাজ্য বিধানসভায় এদিন পাস হয় পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল। সোমবার বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিল পেস করেন। বিলের উপর আলোচনা শেষে এদিনই ১৮২-৪০ ভোটে পাস হয়ে যায় পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল। বিজেপির হার অবধারিত ছিলই। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে বিজেপি কেন ১৭টি ভোট কম পেল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন তোলেম, তাঁদের পক্ষে ৫৭ জন উপস্থিত ছিলেন। তাহলে বাকিদের ভোট কোথায় গেল।
বিজেপির ৫৭ জন বিধায়ক, ভোট ৪০!
এদিন বিধানসভার অধিবেশনে বিজেপির ৫৭ জন বিধায়ক উপস্থিত থাকলেও ভোটাভুটিতে বিজেপি ৪০টি ভোট পেয়েছে বলে জানা যায়। তৃণমূল ভোট পেয়েছে ১৮২ জনের। তৃণমূল ১৮২ জন বিধায়কই উপস্থিত ছিলেন বলে জানানো হয়। আর বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের তো কোনও প্রতিনিধিই এবার নেই বিধানসভায়। ফলে তাঁদের ভোট প্রাপ্তির কোনও জায়গাই নেই।
বিজেপির বাক্সে ১৭ জন বিধায়কের ভোট পড়েনি! নাকি...
ভোটাভুটি হয়েছে শাসক তৃণমূল ও একমাত্র বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে। সেখানে দেখা যায় শাসক দল তৃণমূল ১৮২-৪০ ভোটে বিজেপিকে উড়িয়ে বিল পাস করিয়ে নিয়েছে। ফল বের হতে দেখা যায় বিজেপির বাক্সে ১৭ জন বিধায়কের ভোট পড়েনি। তাহলে তাঁদের ভোট কোথায় গেল? তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তাঁরা কাকে ভোট দিলেন? নাকি দিলেন না ভোট? বিরত থাকলেন ভোটদান থেকে?
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরব, পাশা উল্টাল!
তাই ৫৭ জনের মধ্যে ১৭ জন ভোটদানে বিরত থাকার পর পরিষদীয় দলনেতা তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরব হন। চর্চা শুরু হয়ে যায়, বিজেপির ১৭ জন বিধায়কের ভোটদানে বিরত থাকার অর্থ কী? তাঁরা কি তাহলে বেসুরোর দলে। অর্থাৎ বিজেপিতে বেসুরো হয়ে তাঁরা পা বাড়িয়ে আছেন রাজ্যের শাসকদলের দিকে? সেই জল্পনায় অবশ্য জল ঢেলে বিধানসভা তাদের ভুল স্বীকার করে নেন।
পা বাড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূলে? জল্পনার সূত্রপাত হয়
এদিন পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিল যাওয়ার পর থেকে চর্চা শুরু হয়েছে বিজেপির ১৭ জন বিধায়ককে নিয়ে। বিজেপির ১৭ জন বিধায়ক ভোটদানে বিরত থাকার পর জল্পনা শুরু হয় তবে কি তাঁরা পা বাড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূলে? তাই তাঁরা ভোটে অংশ নিলেন না? ৫৭ জনের মধ্যে ৪০টি ভোট পেল বিজেপি। কেন এমন ঘটল, তা নিয়ে দুই দল দুইরকম মত পোষণ করে তারপর। যদিও শেষে বিজেপির দাবিই প্রকট হয়।
তৃণমূলের কারসাজি! বিজেপি বিধায়কদের ভোট লুঠ
বিজেপির দাবি, এসবই তৃণমূলের কারসাজি। বিজেপি বিধায়কদের ভোট লুঠ করেছে তৃণমূল, বিজেপি পরিষদীয় দলের পক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট জানান, আসলে তৃণমূল ভোট লুঠ করে বিলের স্বপক্ষে তুলে ধরেছে। বিজেপি তাই এই বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছে। হাইকোর্টে মামলা করে তাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি নস্যাৎ, তবু প্রশ্ন
তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছিল, বিজেপি ছেড়ে যে সব বিধায়ক তৃণমূলে আসার জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন, তাঁরাই নিজেদের ভোট কার্যত নষ্ট করেছেন। সেই কারণেই বিলের বিপক্ষে ১৭টি ভোট কম পড়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। যদিও অদ্যাবধি পরে বিধানসভার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, গণনা ভুল হয়েছিল। বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৬৭, বিপক্ষে ৫৫। তবুও প্রশ্ন রয়েছে যাচ্ছে বিজেপির দু-জনকে নিয়ে। বিধানসভার অধ্যক্ষ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জানিয়েছেন, এত বড় ভুল কী করে হল, একটা সিরিয়াস ব্যাপারে। তিনি তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন। এবং মঙ্গলবার তিনি এ ব্যাখ্যা দেবেন সবিস্তারে।