লকেটকে নিয়ে বিব্রত বিজেপি! চিন্তন বৈঠকে ‘বিদ্রোহ’ সামলাতে তৎপরতা তৎকাল নেতাদের
শান্তনু ঠাকুর ও মতুয়া মহলের বিধায়ক দিয়ে শুরু করে জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিরা তো মুখ খুলেছেনই, এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও।
শান্তনু ঠাকুর ও মতুয়া মহলের বিধায়ক দিয়ে শুরু করে জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিরা তো মুখ খুলেছেনই, এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। লকেট চট্টোপাধ্যায়রা মুখ খুললে সমস্যায় পড়বে বিজেপি, সেটা বুঝতে পেরেই চিন্তন বৈঠকের আগে সাবধানী সুকান্ত মজুমদার-রা।
লকেট-অস্বস্তি দূর করতে তৎপর বিজেপি
চিন্তন বৈঠকৈ লকেট চট্টোপাধ্যায় ঝড় তুলতে পারেন, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গ বিজেপি চাইছে না তাঁকে কোনওরকম সুযোগ দিতে। অর্থাৎ লকেট যাতে চিন্তন বৈঠকে কোনওরকম অস্বস্তি বাড়াতে না পারে সে জন্য দিল্লিতে দরবার করেছে বঙ্গ বিজেপির বর্তমান থিঙ্কট্যাঙ্ক। কিন্তু এত সকরেও কি লকেট-অস্বস্তি দূর করতে পারবে বিজেপি, সংশয় কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
বিজেপির সাংগঠনিক ব্যর্থতার ক্রমেই প্রকট
বঙ্গ বিজেপির বর্তমান থিঙ্কট্যাঙ্কে সাম্প্রতির নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার জন্য তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলছে। তারা আঙুল তুলছে তৃণমূলের ভোট সন্ত্রাসের দিকে। কিন্তু ভোট-সন্ত্রাসের দোহাই দিয়ে আড়াল করলেই শুধু হবে না, বিজেপির সাংগঠনিক ব্যর্থতার ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে। বিজেপির একাংশের অভিযোগ, নিচুতলার নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে বসে রয়েছে। ফলে বুথে বুথে দলের লোক নেই।
দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো বলে ভুলভাল রিপোর্ট
বিজেপির বিদ্রোহী নেতারা কোনও রাখঢাক না করেই জানিয়েছেন, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ও তাঁর টিম দলের সাংগঠনিক ব্যর্থতা আড়াল করতে চাইছেন। দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো বলে ভুলভাল রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন। আর তা নিয়েই সরব হতে পারেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেই আশঙ্কাই করছে বিজেপি।
লকেটকে নিয়ে তীব্র হচ্ছে বিজেপির আশঙ্কা
বিজেপির আশঙ্কা, চিন্তন বৈঠকে লকেট চট্টোপাধ্যায় দলের বিদ্রোহী নেতাদের সুরে সুর মেলাতে পারেন। তিনি জানাতে পারেন বিজেপির অনভিজ্ঞ ও তৎকাল নেতাদের দ্বারা ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। তাঁর অভিযোগের তির যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজমদার, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীদের দিকে, তা বলাই বাহুল্য।
লকেটকে মুখ খোলা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, অমিতাভ চক্রবর্তীরাচাইছেন চিন্তন বৈঠকে যাতে কোনওভাবেই মুখ খুলতে না পারেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। কেননা তিনি মুখ খুলতে নতুন করে অস্বস্তি বাড়তে পারে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তাঁরা যে ভুল বোঝাচ্ছেন, তা প্রকট হতে পারে। তাই লকেটকে মুখ খোলা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
আত্মবিশ্লেষণ দরকার, বলছেন সাংসদ লকেট
লকেট ইতিমধ্যেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তিনি বলেছেন, দলের এই ব্যর্থতার জন্য আত্মবিশ্লেষণ দরকার। যে হার হয়েছে, তা মাথা পেতে নেওয়া উচিত। বিজেপির সমস্তকর্মী ও আমাদের আত্মবিশ্লেষণ দরকার। ভুল-ত্রুটি শোধরাতে হবে। একে অপরের উপর দোষ বা দায় চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। দেখতে হবে কোথায় খামতি রয়েছে।
সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার দরকার আছে
দলের বিদ্রোহী নেতাদের নিয়েও মুখ খুলেছেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সকলের সঙ্গে আমি কথা বলব। কে বিদ্রোহী সেসব নিয়ে ভাবি না। আমাদর কাছে সবাই দলের নেতা ও কর্মী। লকেটের এই বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার দরকার আছে। বিজেপির একটা বড় অংশ লকেটের এই বক্তব্যে খুশি।