বছরের শেষে সংকষ্টী চতুর্থীতে গণেশ আরাধনায় কীভাবে বিপদ থেকে মুক্তি মিলবে, জেনে নিন
ভগবান গণেশ শুধু সিদ্ধিদাতাই নন, তিনি বুদ্ধি ও সমৃদ্ধিও দান করেন। পাশাপাশি গণেশের পুজো করলে জীবনের সব বাঁধা-বিপত্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এবছর ২২ ডিসেম্বর সংকষ্টী চতুর্থীর মহাযোগ। সেইসঙ্গে এই বিশেষ দিনটি বুধবার হওয়ায় তা আরও শুভ ফল দেবে এবার। দেখে নেওয়া যাক এই বছর সংকষ্টী চতুর্থীর দিন বিশেষ পুজোবিধি।

সংকষ্টী চতুর্থীর শুভ মুহূর্ত
২০২১ সালের শেষ সংকষ্টী চতুর্থী পালিত হতে চলেছে আগামী ২২ ডিসেম্বর বুধবার। রাত ৮ টা ১৫ মিনিট থেকে শুরু হবে অমৃত যোগ, যা চলবে রাত ৯ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। অর্থাৎ এই এক ঘন্টা বিভিন্ন দেবতাদের পুজো আর সেই সঙ্গে গণেশের বিশেষ আরাধনা করা খুবই শুভ।

চন্দ্র দর্শনের শুভ মুহূর্ত
সংকষ্টী চতুর্থীর দিন দেবতাদের পুজো এবং গণেশ আরধনা করে চন্দ্র দর্শন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই বছর সংকষ্টী চতুর্থীর পুজোর পর রাত ৮ টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চন্দ্র দর্শনের শুভলগ্ন থাকবে। এই সময় চন্দ্র দর্শন করে চাঁদকে সাদা ফুল অর্পণ করলে শুভ ফল লাভ হবে।

সংকষ্টী চতুর্থীর বিধি
সংকষ্টী চতুর্থীর দিন ভগবান গণেশের উপাসনা করলে জীবনের সব বাঁধা বিপত্তি দূর হয়। তাই হিন্দু শাস্ত্র মতে এই দিন পূজার্চনা করার বেশ কিছু বিশেষ নিয়মের কথা বলা হয়েছে। তা ঠিকমত পালন করলে সংকষ্টী চতুর্থীর ফল আরও বেশি পেতে পারেন ভক্তরা।
১.সংকষ্টী চতুর্থীর দিন সূর্যোদয়ের আগে খুব ভোরে ঘুম থকে উঠে প্রথমে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে নেওয়া শুভ।
২. এই বিশেষ দিনে লাল রঙের পোশাক পরা খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। কারণ শ্রী গণেশের পছন্দের রং লাল। তাই এক্ষেত্রে লাল পোশাক গায়ে দিলে সিদ্ধিদাতার আশীর্বাদ লাভ হয়।
৩. গণপতির পুজো করার সময় মুখ পূর্ব বা উত্তর দিকে রেখে বসলে তা খুব শুভ।
৪. হলুদ ফুল সিদ্ধিদাতা গণেশের খুবই প্রিয়। তাই এই বিশেষ দিনে তাঁর মূর্তি হলুদ ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে নিলে অনেক শুভ ফল লাভ করাযায়।
৫. পুজোর সরঞ্জামের সঙ্গে তামার পাত্রে সাদা তিল, ধূপ, চন্দন, গুড়, লাড্ডু, ফুল রেখে দিলে তা শুভ হয়। এরপর প্রসাদ হিসাবে জল, কলা বা নারকেল নিবেদন করা খুব শুভ বলে মানা হয়।
৬. পূজার সময় মা দুর্গার মূর্তি সঙ্গে রাখুন। সংকষ্টী চতুর্থীর দিন গণেশের সঙ্গে দেবী দুর্গার আরাধনা করলে তা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
৭. ভগবান শ্রী গণেশকে রোলি, ফুল ও জল অর্পণ করে তাঁর বন্দনা করলে শুভ ফল লাভ হয়।
৮. ভোগ সিদ্ধিদাতা গণেশের সবথেকে প্রিয় জিনিস। এই বিশেষ দিনে ভোগ হিসেবে ভগবান গণেশকে তিলের লাড্ডু ও মোদক নিবেদন করা অত্যন্ত শুভ।
৯. সন্ধ্যায় চাঁদ উঠার আগে বিঘ্ননাশক গণেশকে ফুল দিয়ে পূজা করে সংকষ্টী ব্রতকথা অবশ্যই পাঠ করা উচিৎ।
১০. পূজা শেষ হলে প্রসাদ বিতরণ করে রাতে চাঁদ দেখে ব্রত ভঙ্গ করলে তা শুভ ফল দান করে।

সংকষ্টী চতুর্থীর বিশেষ মন্ত্র
সংকষ্টী চতুর্থীর দিন সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনা করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর বিশেষ মন্ত্র জপ করলে খুব উপকার হয়। 'গজাননম ভূত গণাদি সেবাম্, কপিত্থা জম্বু ফল চারু ভক্ষণম্। উমাসুতম শোক বিনাশকরকম, নমামি বিঘ্নেশ্বর পদ পঙ্কজম' এই মন্ত্র ২৮ বার জপ করলে জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি ও সম্মান বৃদ্ধি পায়।